সার্চ করুন

বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৭

ক্ষণিকের বন্ধুত্ব


মেঘ বালিকা,
অস্তিত্বের দুঃসহ পথ চলতে-চলতে
দীর্ঘশ্বাস ফেলে দাঁড়িয়েছিলাম একা,
শূন্যতার আঘাতে নিশ্বাস হলো রুদ্ধ!
তুমি এলে পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে।

ছলনা করে!
জ্বালালে আঁধার মনের অঙ্গনে আলো
হৃদয়ে জাগালে বেঁচে থাকার আশা,
সহস্র সাজানো গল্পের ফাঁদে ফেলে
তুমি মায়াবী রমণীর পরিচয় দিলে।

সবি ছিল মিথ্যে!
এইতো সেদিন, তুমি আমায় বললে-
পৃথিবী বদলে গেলেও তুমি বদলাবেনা,
ভাঙ্গা ইটে গড়লে ক্ষণিকের বন্ধুত্ব?
চাহিদার শেষে করলে চূর্ণ-বিচূর্ণ!

নাটকীয় ভাবে,
তুমি বললে যতক্ষণ থাকবে প্রাণ
যতদিন ভুবনে থাকবে চন্দ্র সূর্য,
চিরকাল অমর থাকবে মোদের মিত্রতা
তুমি কখনো ছেড়ে যাবেনা আমায়।

তবে কেন?
তুমি আমার জীবনে এলে-
কোন প্রয়োজন ছিলনা ক্ষণিকের সুখ,
নিজ হাতে হত্যা করলে আমার স্বপ্ন!
আজ ভেঙ্গেগেল চিরতরে আস্থা।

আমি মূল্যহীন!
তাই অমাবস্যার আঁধারে ঠেলে দিয়ে
তুমি জ্বালালে অন্যের ঘরে কিরণ,
নিমেষে বদলে গেল আমার জগত
কোথায় যেন থমকে দাঁড়াল আয়ু।

অথচ আজ,
বিশ্বাসী মনে যন্ত্রণার বিষ ঢেলে!
অন্যকে উপহার দিলে রক্তিম গোলাপ,
আমি দুঃখবাদী বিরহের সমুদ্রে ভাসব
তুমি সুখে থেকো তোমারি মত।


রচনাকালঃ- ২০/১১/২০১৭

মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৭

কলমের বিদ্রোহ

অরণ্য- (ভাবুক কবি) এর প্রিয় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য লেখা কলম কবিতার প্রতিউত্তরে কবিতাটি রচিত হয়েছে।
————————————————————

আমি কলম, যুগ-যুগ ধ'রে
পড়ে আছি ভুবনের জমিনে,
দেখায় বিশ্বকে নব সরণির দিশা
পৌঁছায় নিরাধারকে নিজ গন্তব্যে।
এতদিন লিখেছি বহু আখ্যান
কাব্যের পুস্প ফুটে আমার অবদানে,
দিবা-নিশি ক্লান্তিহীন মূর্তি থেকে
ঝরে পড়ে লহু মাখা অশ্রুর কালি!
তুলে আনি সেই আগের বার্তা
করি নিত্য লেখা সাহিত্যের দাসত্ব,
আমার গতরে দাও কুত্সার অপবাদ
বাধ্য করো নির্দোষকে দণ্ড দিতে!
তবুও পাইনি অবিশ্রান্ত কর্মের মজুরি
বলো, এভাবে আর চলবে কতকাল?
আমি আর থাকব না ক্রীতদাস
আজ শুরু হবে কলমের বিদ্রোহ!
মোরা জোটবদ্ধ হয়ে করবো হরতাল
খন্তার থেকে ভয়ঙ্কর আমার লেখনী,
আমি উপড়ে ফেলব ক্ষুদিত বশ্যতা
এতদিন সহ্য করেছি সবার বিদ্রুপ।
আর চলব না কোন প্রভুর খেয়ালে
শব্দহীন হলেও আমার আঘাত তীক্ষ্ণ!
তোমাদের স্বার্থে কখনো হবনা নিস্তেজ
নিজ হস্তে লিখব মানবের নসিব।
আজ মুছবো গ্লানি, মুছবো দাসত্ব
সময় এসেছে বেকারত্ব মিটাবার;
বিগ্রহ করবো নিতান্ত নগণ্যের তরফে
চলার বর্ত্মে আর ফেলবনা দীর্ঘশ্বাস।
মুছে দেব কাঙ্গালের নয়ন বারি
নিকুচি করবো অবৈধ অক্ষের তখ্ত!
হুশিয়ার হও যত পাপীর দল
আসছি প্রলয়ের চক্র নিয়ে।
আজ বিদ্রোহের অনলে শুরূ হরতাল
বন্ধ হবে সমাজে ধনীদের শোষণ,
সুবিচার ফিরবে দেশের বুকে
রূধির দিয়ে আজ লিখব ইতিহাস।


রচনাকালঃ- ১৪/১১/২০১৭

শনিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৭

পূর্ণিমার মৃগাঙ্ক

দীর্ঘ মার্গ গমন করে হই ক্লান্ত
তৃষ্ণার্ত অধ্বগের মতো খুঁজি তোমায়!
এতদিন তুমি ছিলে খোয়াবের পরী
ডহর ক্ষণদায় লিখি কত রুপকথা।

কল্পনায় আঁকি না দেখা মলিন অনন
অজানা ছোঁয়া যেন প্রতিক্ষণে ভাবায়,
তবু প্রশ্নের শৃঙ্গী জমে হৃদয়ের মাঝে
নসিবের কৃপায় পরবাদ খুঁজে পেলাম।

প্রত্যাশী প্রহর শেষে দেখলাম কিরণ
তুমি এলে পূর্ণিমার মৃগাঙ্ক হয়ে,
ছড়ালে শূণ্য বাগিচায় উদাসীন প্রভা
কোমল হস্তে দূর করলে বিষন্নতা।

তুমি এক নিস্তব্ধ প্রকৃতির রূপ
শিরের অলক যেন দ্যুলকের অম্বুদ,
বিকেল গড়িয়ে যখন সন্ধ্যা নামে
তুমি জ্বেলে দাও প্রণয়ের দীপক।

দেখি আমার প্রতি অজস্র মোহ
পাই না বলা লুকিয়ে থাকা আদর,
তিস্তার মতো চঞ্চল হরিণীর চেতনা
যেন অনন্য অনুভবে তীব্র আঁধি।

সওগাত দিলে চিত্তে উদম আসক্তি
অস্তিত্বহীন যুবকের শেষ গন্তব্য তুমি,
ক্লেশের কালিতে অদৃষ্ট লিখেছে লিপি
অহরহ পাই তোমাকে হারানোর ভীতি!


রচনাকালঃ- ১০/১১/২০১৭

মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৭

ভারতমালা সড়ক

ভারত সরকারের পরিকল্পনা ভারতমালা সড়ক। এই পথকে কেন্দ্র করে অগণিত মানুষের ঘর ভাঙা পড়ছে! এমন করুণ  দৃশ্যকে ঘিরে কবিতাটি রচিত হয়েছে।

রাজ গড়ছে সড়ক ভারতমালা
হৃৃদয়ে ধরেছে বড় জ্বালা,
হবে তাতে গতিকের বর্ধন
নোনা উদকে ভিজলো নয়ন!
শিরে এসে পড়লো বজ্রপাত
বিজ্ঞের নাটকে পেলাম আঘাত,
চেতনা সহজ নয় অতি
বিকল্প পথের নেই গতি।
দেখলাম নিয়তির এ-কী খেলা
বসেছে যেন বিকারের মেলা,
বিবশের তরে মানবতা নির্বাক
আঢ্যের জুলুমে হই অবাক।
শাসক পেতেছে নিকুচির ফাঁদ
তবু কেউ করেনা প্রতিবাদ!
চুপচাপ দেখে সবাই রঙ্গ
কেউ দেয় পাতকের সঙ্গ।
তৈরি করেছি খোয়াবের আবাস
তাতে হবে দানবের চাষ,
চকিত ভূতলে দিবে মিশিয়ে
মোর অন্তর উঠবে বিষিয়ে!
জানি চিরতরে হারাবে আশ্রয়
পাই গন্তব্য না মেলার ভয়,
শুরু হবে মানুষের কোলাহল
কাঙ্গালের নেত্রে ঝরবে জল!
আমি এক দুঃখের কবি!
দেখতে পাই করুণ প্রতিচ্ছবি,
মানুষের কুসীদে মরি হাই
রজনী আঁখিমেলে কেটে যাই।
করি অস্তিত্বের সাথে সংগ্রাম
দিশাহীন ধরণীতে নেই বিরাম,
যাব কোথায় হারাবো কোথায়
বিরহে কাতর চিত্তের ব্যাথায়!


রচনাকালঃ- ০১/১১/২০১৭

শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৭

লেখনীর কালি

আমি যার লেখনীর কালি
হৃদয় আবেগে হয়েছে খালি,
বর্ষণে দেয় অভিষঙ্গ ধুয়ে
স্বপ্ন দেখায় কপাল ছুঁয়ে।
সেই রমণী কে?

আমি যার কবিতার ছন্দ
বিবর্ণ অন্তরীক্ষের উদিত চন্দ,
যার পরশে বাঁচে আয়ু
অন্তরে বহে শীতল বায়ু।
সেই রমণী কে?

আমি যার কণ্ঠের সুর
মর্ম আঘাতে বেদনা বিধুর!
সে-যে মোর সুখের নীড়
উত্ক চিত্তে লহরের ভিড়।
সেই রমণী কে?

আমি যার বসন্তের আনন্দ
আমিই সেই মুক্ত জীবনানন্দ,
যারে ভেবে মরি হাই
প্রদোষে কবিতা লিখে যাই
সেই রমণী কে?

আমি যার শোণিতে প্রাণ
না-জেনে খেয়েছি প্রণয়ের বাণ!
আমিই যার আঁখির সলিল
চলনে আছে শান্তি অনাবিল।
সেই রমণী কে?


রচনাকালঃ- ২৭/১০/২০১৭

বুধবার, ১ নভেম্বর, ২০১৭

প্রতিরূপ

হৃদয়ের মাঝে এঁকেছিলাম প্রতিরূপ
নীল রঙা কলম তূলিতে যার,
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে
উর্বীতে আবির্ভাব হলো তার।
দেখলাম পলকের দৃশ্য অটুট
রক্তিম রূপের অসীম মায়া,
চাতক বিহঙ্গের মত লোচন মেলে
কালো কুন্তলে যেন প্রকৃতির ছায়া।
অনিলে দুলে লাল অধর
কন্ঠস্বর যেন সুমধুর কোকিল,
কুরঙ্গের মত নির্মল কলেবর
বর্ষণে স্বাগত জানায় অখিল।
এতদিন দাঁড়িয়ে ছিলাম একাকী
গুনেছি কত প্রতীক্ষার প্রহর!
এইবার বুঝি শেষ হবে সময়
চিত্তে উঠেছে প্রণয়ের লহর।
জানিনা কবে বুঝবে সে
মোর ব্যাকুল মর্মের কথা,
অনন্ত নিদ্রায় বিলীন হতে চায়
তার শীতল কোলে রেখে মাথা।


রচনাকালঃ- ২৩/১০/২০১৭