সার্চ করুন

মঙ্গলবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮

সবুজ পত্র


ওগো প্রিয় তোমার তরে
না জানি কোন দুঃস্বপ্নের ডরে!
আজ কাঁদি আমি নির্জনে
কত কথা জমে আছে এই মনে।

ওগো গগনে ওড়া পাখি
পথ চেয়ে বসে আছে তার আঁখি,
এখনি হল নব প্রভাত
পৌঁছে দাও মোর সওগাত।

ওগো শ্রাবণের ঝর-ঝর বৃষ্টি
আজ কর এমন কিছু সৃষ্টি,
নিরাশায় মরে গেল কত কলি
ধুয়ে মুছে নিয়ে যাও মোর কথাগুলি।

ওগো নীরব বন; সবুজ প্রান্তর
বেদনায় কাঁদে-গো আবেগী অন্তর!
অশ্রু দিয়ে লিখলাম সবুজ পত্র তারে
রেখে এসো প্রিয়তমার দ্বারে।

ওগো পূর্ণিমার চাঁদ; দখিনা বাতাস
সুদূর প্রান্তরের নীল আকাশ,
প্রেয়সীর কাছে ছুটে যাও
তাকে না বলা কথা পৌঁছে দাও।

ওগো নিশিথ আসমানের তারা
ব্যাকুল হৃদয় হল-গো দিশাহারা!
সে কভু আসবেনা ফিরে জানি
তার হাতে তুলে দাও প্রেমের বাণী।

নিভে গেল প্রদীপ জ্বলেনাকো কাঠি
পদ্মপাতায় লিখলাম তাকে চিঠি,
ওগো নদী মোর কাছে যা আছে
তুমি নিয়ে যাও তার কাছে।


রচনাকালঃ- ১০/১২/২০১৮

শনিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৮

পতিতা রাজনীতি


শুনেছি,
রাজনীতিতে প্রবেশ করলেই নাকি;
নোট ছাপানোর যন্ত্র হাতের মুঠোয় আসে?
আর দুর্নীতি করা যায় অবাধে।

তাই বুঝি, দিন-রাত্রি রক্ত শোষণ করেছ গরিবের!
যে কৃষক তার অক্লান্ত পরিশ্রমের দিয়ে,
ফলিয়েছে সবুজ ক্ষেতে সোনার ফসল্
তোমাদের নোংরা রাজনীতির কারণে
তাদের করতে হয়েছে আত্মহত্যা!

ভোটের আগে,
দিয়েছ বারংবার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি!
জাতি বিবাদে দাঙ্গা লাগিয়ে মেরেছ
বহু অসহায় নিরাপরাধ মানুষকে!
দিকে দিকে বেড়েছে বেকারত্ব!
দেশের উন্নয়ন তো দূরের কথা -
তোমরা করতে চেয়েছ অযধ্যায় রাম মন্দির।
আমি বলি, কি হবে মন্দির মসজিদ গড়ে?
নির্মান কর কারখানা;
তবেই ঘুচবে যুব সমাজের বেকারত্ব।

শুধু কি তাই?
যে শ্রমিক তার শ্রম দিয়ে তিলে-তিলে গড়েছে কারখানা
তোমরা শুষে নিয়েছ তাদের অক্লান্ত ঘাম!
জনতার টাকা লুটে তৈরি করেছ রাজপ্রাসাদ;
যেখানে প্রতিপদে বেড়েছে জিনিসপত্রের মূল্য
অন্যদিকে ভোগবিলাসে তোমরা কাটিয়েছ দিন।

প্রতিনিয়ত বেড়েছে,
জ্বালানির গ্যাস ও পেট্রলের দাম;
জি-এস-টি'র কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ছোট ব্যবসায়ী!
আবার তোমরা বল আচ্ছে দিন আয়েঙ্গে!
তবে আজ কোথায় গেল আচ্ছেদিন?

পতিতা নারীদেরও আছে সম্মান!
তারা অর্থের বিনিময়ে করে দেহ বিক্রি
তবু তোমাদের মত ঠকায়না মানুষকে,
আজ তোমরা হয়েছ -
পতিতা নারীর থেকেও নিম্ন শ্রেণীর!
যগ্যতা নেই, তবু অর্থের বিনিময়ে বসেছ গদিতে;
আহা! মূর্খ নেতা-নেত্রীদের হাতেই
হবে আগামী দিনে দেশের উন্নতি।


রচনাকালঃ- ০৩/১২/২০১৮


বুধবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮

দ্রোহের অনল


আমি বিদ্রোহী চির বিদ্রোহী
সোনার বাংলার মুক্ত বীর,
থাকি লড়ায়ের প্রতি আগ্রহী
নত হবেনা উন্নত শির।

রাজনীতি সাজায় মায়াবী গল্প
ধর্মকে করে সদা হতিয়ার,
সাম্প্রদায়িকতার ফাঁদে পড়ে প্রকল্প
বিবশের নেই কোন নিস্তার!

সভ্যতার ইমারতে কলঙ্কের ছাপ
চলে দিকে দিকে অপরাধ,
বাড়ে পৃথিবীর বুকে পাপ
ভাঙ্গে জনতার ধর্য্যের বাঁধ।

রক্তে রাঙা তাদের কলেবর
পড়ে থাকে অগণিত লাশ!
ছোবল মারে অভুক্ত নর
লুপ্ত হয় মানবতার নিঃশ্বাস।

দেশের বুকে অন্যায় হলে
ছাড়ি আজরাঈলের মত হুঙ্কার!
পুড়িয়ে মারি দ্রোহের অনলে
আমি বজ্রের মত ভয়ঙ্কর!

তাই ধরেছি কলম হাতে
তাদের তখ্ত করব চুরমার!
খুলব মুখোশ আগামী প্রভাতে
বিদ্রোহ করে যাব প্রখর।


রচনাকালঃ- ০১/১২/২০১৮

শনিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৮

আমি কুমারী মা'য়ের সন্তান


মা,
সবাই আমাকে অপমান করে!
বলে, আমি নাকি পতিতার সন্তান!
বলনা মা; পতিতা কাকে বলে?
কি আমার পিতৃ পরিচয়?

মা কেঁদে উত্তর দিলেন!
কাছে আয় খোকন -
এতে তোর কোন দোষ নেই,
আজ তোকে সব বলব
এ সমাজ আমাদের কেন এত ঘৃণা করে।

আমাদের দেশে তখন এসেছিল বন্যা
হারিয়েছিলাম ঘর-বাড়ি আর পিতা মাতা!
অবশেষে আশ্রয় নিয়েছিলাম ফুটপাতে।
গভীর রাতে,
ভদ্রতার মুখোশ পরা কিছু মানুষ এসে;
বল প্রয়োগ করে আমায় ধরে নিয়ে গিয়েছিল্
বেচে দিয়েছিল চর্মের দালান কোঠায়!

সেই রক্তঝরা রাতে,
ভদ্র সমাজের পুরুষরা সারা রাত ধরে,
করেছিল নিথর অঙ্গে ক্রুশের আঘাত!
সেখানে আসতো বহু ছদ্মবেশী পুরুষ,
তারাই বানিয়েছিল কিশোরীকে মা।
অবশেষে ওই নরক থেকে পালিয়ে এসে
শত আঘাত সহ্য করেও তোকে জন্ম দিয়েছিলাম।

আমি কুমারী মেয়ে,
মা হয়েছি বলে -
এই সমাজ আমাকে ঘৃণা করে!

সব শোনার পর,
কেঁদে বললাম! মা;
আমায় তুমি ক্ষমা করে দাও!
এ সমাজ তোমায় শত আঘাত দিলেও
আমি কখনো কষ্ট দেব না;
প্রয়োজন নেই কোন পিতৃ পরিচয়ের!
আমার পরিচয় -
তুমি আমার করুণাময়ী মা।


রচনাকালঃ- ২৬/১১/২০১৮