সার্চ করুন

রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৯

অবোধ জাতি


মুসলিম সমাজে উদিত হয়
মুখোশধারী যত ভন্ড পীর,
করেনাকো তারা আল্লাহকে ভয়
অর্থের লোভে মন অস্থির।

লঙ্ঘন করে বিশ্বনবীর বাণী
চোখে-মুখে ছোপ লালসার,
অভিনয়ে ফেলে নয়ন পানি
খুন করে অজ্ঞানীর ভরসার!

অবুঝকে বারংবার দেখায় স্বপ্ন
তাদের ভক্তিতেই মিলবে জান্নাত,
সত্য কভু হয় না নগ্ন
দোয়া করেই পাতে দুহাত।

কবরে অবোধ সিজদায় রত
নির্দ্বিধায় চাপিয়ে দেয় চাদর!
মুমিনের ঈমান ক্ষত-বিক্ষত
ভক্ত নারীকে করে আদর।

জ্বলে কত ধূপকাঠি মোমবাতি
মানত মানে মোরগ খাসি,
অন্ধ বিশ্বাসে মগ্ন জাতি
পীরের চোপায় ফোটে হাসি।

সঠিক তথ্যে লাগে দ্বন্দ্ব
পাপাচারে লিপ্ত পীর বাবা!
প্রত্যহ ব্যবসা চলেনা মন্দ
বুদ্ধিহীনের বুকে মারে থাবা।

মুসলিম কুলকে করে বিভ্রান্ত
তারা সত্য করেনা স্বীকার,
আঁধার প্রলয় তোলে দুর্দান্ত
অবোধ পাই না গুনাহে নিস্তার।

দেখি অনেকেই আছে এমন
নিজেকে দাবি করে খোদা!
জানিনা আবার তারা কেমন
গতরে মাখে নরকের কাদা।


রচনাকালঃ- ২১/০৪/২০১৮

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৯

প্রথম দেখা


এসো প্রিয় আরো কাছে থেকনা দূরে,
ফুটেছে ফুল কৃষ্ণচুড়া গাছে দেখ ফিরে,
থেকনা আর দূরে!

এসো আরো কাছে, লজ্জায় নত কোরোনা শির!
তোমার আগমনের ছোঁয়া পেয়ে বাতাস হল অস্থির।
আমি এসেছি ভালোবাসার আশায়
বুঝে নাও ব্যাকুল চোখের ভাষায়,
শূন্য মনের গভীরে ঘুনে পোকা খায় কুরে।
ওগো চিরন্তনী আমার!
কাছে এসে হাতটি ধর, থেকনা আর দূরে।

আজ জেগেছে তোমার মনে প্রথম প্রেমের অনুভূতি,
চেয়ে দেখ জ্যৈষ্ঠের মেঘে ঢাকা হাসে প্রকৃতি,
পাখির ডাকে থমকে যায় বন-বাদাড়
আবেগী হৃদয়ে প্রেম করে দাও উজাড়!
শিউরে ওঠে আমের মুকুল
জল টলমল নদীর দুইকূল।

গরবিনি! চোখে চোখ রেখে একটুখানি মুচকি হেসে
পরিয়ে দাও প্রেমের টিকা আমায় ভালোবেসে!
প্রিয়! আজ প্রথম দেখে তোমায়
ওগো পূর্ণ হল শূন্য সময়,
পরাব গলায় শিউলির মালা ভাগীরথীর তীরে।
ওগো সুবাসিনী আমার!
বাড়িয়েছি দুহাত-কাছে এসো, থেকনা আর দূরে।


রচনাকালঃ- ১৭/০৪/২০১৯

বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৯

অভাগার কান্না

আসাম রাজ্যে গত ০৯/০৪/২০১৯ একটি মুসলিম মানবের ওপর অকত্ব অত্যাচার চালানো হয়! ভেঙে দেওয়া হয় তার হোটেল, তাকে মেরে রক্তাক্ত করে বল পুর্বক শূকরের কাঁচা মাংস খাওয়ানো হয়! যাতে তার ইমান নষ্ট হয়ে যায়, এমন করুণ দৃশ্যের ওপর ভিত্তি করে সত্য ঘটনা অবলম্বনে কবিতাটি রচিত হয়েছে।
..........................................................


পান্থাবাস খুলি স্বপ্ন নিয়ে
আসবে সংসারে সুখ-শান্তি,
দিনভর রত খাদ্য দিয়ে
নিশির আঁধারে নামে ক্লান্তি।

সূর্যদয়ের পুর্বে ভাঙে ঘুম
নেই বৃত্তির কোন নিস্তার,
সুস্বাদু ভোজ্যে লাগে ধুম
উন্মুক্ত করি হোটেলের দ্বার।

হরেক সবজি গো-মাংস
থাকে মাছ মুরগি খাসি,
রান্না আমার জীবনের অংশ
সবার সুরতে ফোটাই হাসি।

উনুনে জ্বলে ভাতের হাড়ি
দোকানে বহু খোদ্দের আসে,
তেলের কড়ায়ে খুন্তি নাড়ি
খানা খেতে পথচারী ভালোবাসে।

আসে পৃথক ধর্মের মানব
পুলকে খায় হস্ত চেটে,
চক্রান্তে থাকে ভয়ানক দানব
লাথি মারে বিবশের পেটে!

হটাত দেখি এ-কী দুর্গতি
ছুটে আসে যুবকের দল,
হবে বুঝি করুণ পরিণতি
দেখায় ওরা কত বাহুবল।

মুখোশে আটা ওদের বদন
হাতেপায়ে ধরি করিনিতো ত্রুটি,
তবু শোনেনা কোন বারণ
যেন অগ্নিময় ত্রিনেত্রের ভ্রূকুটি!

ভেঙে করে দেয় চুরমার
দেহ শোণিতে হয় লাল!
প্রাণ ভিক্ষা দাও একবার
খিচে নেয় গতরের খাল!

দুহাতে গলা টিপে ধরে
নিয়ে আসে শূকরের মাংস,
চোপা ফেড়ে দেয় পুরে
যাতে হয় ইমান ধ্বংশ!

কেউ আসেনি তো এগিয়ে
করেনি সেদিন কেন প্রতিবাদ,
জ্ঞানের অভাবে সভ্যতা পিছিয়ে
মানবের অন্তরে জন্মেছে খাদ।

অন্ধ সাম্প্রদায়ীকতার কবলে পড়ে
তিলে তিলে প্রতিক্ষণে মরি!
করাঘাতে ওঠে হৃদয় নড়ে
তবু নিয়তির হাত ধরি।

নোংরা রাজনীতি আর কতকাল?
তোমাদের করি যদি বিশ্বাস,
তবু বুনবে ষড়যন্ত্রের জাল
দূষিত পবনে রুদ্ধ নিঃশ্বাস।


রচনাকালঃ- ১১/০৪/২০১৯

শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৯

দুর্ভিক্ষ


মফস্বলে নেমে আসে দুর্ভিক্ষের ছায়া!
ক্ষুধার জ্বালায় চারিদিকে হাহাকার,
শিশু-নারীর আঁখি যেন শোকাহত
রোজগার নেই; বেড়েছে বেকারত্ব।

গ্রাম উঠে গেল শহরে,
ধানের গোলা, ঘর পড়ে রইলো শূন্য।
মাঠে ফসল বুনে না চাষী
চিহ্নহীন আলয়ে নামে নিস্প্রদীপ অন্ধকার,
আগাছায় ভরে গেছে আঙিনা
সেই আগের মত দেখা মিলেনা রাখালের,
বিকেল হলে মেঠো পথে আসেনা ধেনু
তাঁতি বুনেনাকো তাঁত
কেউ আসে না জল নিতে পুকুর ঘাটে।

বুনো ঘাসে ঢেকেছে পল্লীর রাস্তা,
সূর্য অস্ত যায় -
সন্ধ্যায় ঠাকুর ঘরে বাজে না শাঁখ!
কেউ ভাঙে না ধান; পিষে না গম;
ঘোরায় না তেলের ঘানি।
লোহার তালা ঝুলে কুমোরের দুয়ারে
যেন অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ দোকানপাট,
যেখানে একদিন শোনা যেত হাতুড়ির প্রহার
সেও সর্বস্ব বিকিয়ে চলে গিয়েছে শহরে।
শরতের পর নামে শীত
তবু রাহার ধারে জ্বলেনাকো শিখা,
কোথায় হারিয়ে গেল মোড়লদের চুলোচুলি
কিশোররা ওড়ায় না ঘুড়ি;
গভীর রাতে -
ডাকে না কুকুর পথিকের কদমের শব্দে।

ঐ দূর প্রান্তরে সবুজ ক্ষিতিজ হাত নেড়ে ডাকে,
খোয়াবের করাঘাতে ব্যথিত হয়ে
প্রতীক্ষার প্রহর গুনে সোনালি ধান!
ডাক শুনি শহর নগরের পথে পথে,
শ্মশান আর গোরস্থানের মত -
জমে ওঠে মৃতপ্রায় জনস্রোতের ভিড়।

প্রতিজ্ঞাবদ্ধ চিত্তে নয়নের শোকাশ্রু মুছে
তারা ভাবতে থাকে -
দেহাতের প্রতিটা গৃহে ফিরবে সুদিন,
তাই বেজে ওঠে শহর নগরের মার্গে পদশব্দ।
আশাবাদী মন নিয়ে তারা ভাবতে থাকে -
এবার বুঝি দূর হবে বেকারত্ব, ঘুঁচবে দুর্ভিক্ষ!
আসমানে ওঠে স্নিগ্ধ শশী
শুনি নদীর জলের শব্দ; পতগের গান;
চেয়ে থাকে সবাই মুগ্ধ নেত্রে গগন পানে,
হয়ত প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে
হয়ত উঠবে নব মিহির।


রচনাকালঃ- ০৪/০৪/২০১৯