সার্চ করুন

রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭

ক্লান্ত

পড়ে আছে কালের তমসায় ঝরা প্রসূন,
পিরিতের প্রতীক্ষায় কেটে যাই কত হেমন্ত!
তবুও ছুটি একাকীর সাথে খেলার প্রমাদে,
জগদ্বাসীর বক্ষে ক্লান্ত হয়ে আসে দেহযষ্টি।
জানি না কেন অস্ত গেছে চরিতের ভাস্কর!
নবোদ্ভিন্ন মেজাজ হারিয়ে যাই শয়নের দেশে।

গগনপ্রান্তের নভশ্চর দেখে কাটে কতো যামিনী,
খুঁজে ফিরি এক চপল ললনার ঠিকানা।
তাকে কোন দিন নিজের করে পাইনি!
শুধু দেখি অসীম সৌন্দর্যে গড়া অহমিকা।
এমন লুকোচুরি ক্রীড়ায় উন্মাদ হয় রজনী,
চির শূন্যতার বেড়াজালে আবদ্ধ দঙ্কট মার্গ!

ওগো মোর প্রণয়ীনী আমি যে বড্ড পরিশ্রান্ত,
আর কতকাল এই নিশি কাটবে নিঃসঙ্গ?
পাষাণের অচল জোমে ভিজে যাই সর্বাঙ্গ!
আকালের ঝড়ে অশান্ত হয়ে ওঠে হৃদাকাশ!
প্রেয়সী দাওনা তোমার কোমল পাণির স্পর্শ,
তারই আভা পেলে চিরতরে হব নিস্তব্ধ।



রচনাকালঃ- ১৭/০৮/২০১৭

সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০১৭

ইচ্ছে ছিল

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
দল বেঁধে সিপাহী বিদ্রোহ করার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
মৃত্তিকার বুক চিরে বেরিয়ে আসার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
বীরের মত পলাশীর যুদ্ধ করার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
ক্রীতদাসের শিকল উপড়ে ফেলার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
সহস্র প্রাণ বলীর প্রতিশোধ নেবার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
যুদ্ধে দেশের জন্য প্রাণ দেবার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
নজরুলের দ্রোহে আগুন জ্বালাবার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
সুকান্তের মত জীবন সংগ্রাম করার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
সবুজ ক্ষেতে সোনর ফসল ফলাবার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
অহিংসা দিয়ে দেশ স্বাধীন করার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
প্রভাতে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
সীমান্তে দাঁড়িয়ে দেশ রক্ষা করার।



রচনাকালঃ- ১৪/০৮/২০১৭

শুক্রবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৭

নিয়তি

আমি ত্রিভুবনের অধিপতি ঈশ্বরের গড়া অদৃষ্ট,
ভূলোক দ্যুলোক গোলকের সাথে করি খেলা।
সবার ললাটে নিজ হস্তে লিখি ভাগ্যলিপি,
আসলে আমার নেই কোন গোত্রের চিহ্ন।
অপ্রকট খেয়াপথে চলি মানবতার সূত্র ধরে,
আমি আজরাঈলের মত থাকি চির দুর্দম!

ভুলেও কখনো করি না কারো সাথে মিত্রতা,
আমি দুর্বিনীতের বিকারকে হই সদা উত্তীর্ণ।
অচলার বক্ষে মহা-প্রলয় ঘটিয়ে করি নিকুচি!
আমার সূক্ষ্ম প্রহারেও হয় না কোন স্তনন।
ন্যায়ের কুহরে আহ্বান করে গড়ি অস্তিত্ব,
বৈভবের হুকুম পেলেই হতে পারি নৃশংস!

প্রত্যহ এসে তোমাদের সাথে করি আলিঙ্গন,
আমি ক্ষৌণীর মৃত্তিকায় এক নিপট অভিশাপ!
সকলের দুয়ারে প্রদর্শন করি বিলুপ্ত চিত্র,
নিমেষে করে দিতে পারি উর্বীকে উন্মথন!
জীবনের পথে চলতে চিনে নিও আমায়,
যেভাবে তোমরা চিনতে পারো অভ্রের ঋক্ষ।

রঙিন অচলার মানব যেন বড়ই স্বার্থপর,
কেউ এসে সাজায় সর্বত্র সুখের নিবাস।
কেউ এসে জ্বালিয়ে ছারখার করে যাই!
আমি তাদেরই সাথে মিলনে হই সমবেত।
আমার হুঙ্কারে কেঁপে ওঠে ধরণীর ভূতল!
চিনে নিও আমিই তোমাদের সেই নিয়তি।



রচনাকালঃ- ১২/০৮/২০১৭

সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৭

কোথায় আজ সেই ভগবান

কোথায় গেল আজ সেই ভগবান
তোমরা দেখেছ কি কখনো তাঁকে?
অকালে চলে যায় সহস্র প্রাণ
এ দেশ পড়েছে কালো পাঁকে।

কোথায় গেল আজ শিব জটাধারী
কোথায় সেই মহান শ্রীরামের বাণ?
কবে আসবে হয়ে ন্যায়ের কাণ্ডারী
দেশের জমিনে করবে শান্তি প্রদান।

ভারত জুড়ে বাড়ছে সাধু সন্ন্যাসী
তবু মরে কেন অসহায় কৃষক!
ভগবানে হয় যদি তারা বিশ্বাসী
তবে কেন হিন্দু-মুসলিম পৃথক!

ধূর্ত নেতা পরেছে গিরিধারী বস্ত্র
কখনো প্রতিবাদ করেনা-তো কেউ,
লড়াই লেগেছে গীতা-কোরান শাস্ত্র
কবে ফিরবে ভারতে শান্তির ঢেউ।

পাতাল ভেদ করে উঠেছে দানব
আজ কোথায় সেই চিন্ময়ী মহাকালী?
অবতার নিয়ে কবে আসবে মহামানব
কবে দিবে নিষ্প্রাণ প্রতিমা অসুর বলি।

ক্ষমতার দাপটে যারা গণহত্যা করে
তারাই আজ হয়েছে আইনের রক্ষক!
অসহায় জনতা পড়ে খাকির খপ্পরে
অসুরের মতো যেন সব ভক্ষক!

কোথায় আজ সেই দুর্গতি নাশিনী
মন্দিরে বসে আছে কেন নীরব?
কবে ঘুচবে পৃথিবীতে আঁধার যামিনী
চলছে নৈরাজ্যের দহনে সন্ত্রাসীর কলরব!

অর্থের লোভে করছে রাজনীতিতে প্রবেশ
লুটেপুটে খেয়ে তাদের বাড়ছে মেদ,
তিলে-তিলে করছে দেশকে নিঃশেষ
প্রতিপদে উর্ধগামী প্রজাদের খেদ।

কোথায় সেই তান্ত্রিক নেড়া-নেড়ি
এসে ঘোচাবে দেশের বুকে অপকর্ম,
কবে ছিড়বে রাজনীতির শিকল বেড়ি
আজ ধর্মের নামে চলছে অধর্ম!


রচনাকালঃ- ০১/১১/২০১৮

রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৭

ষোল বাই বত্রিশ

জীবন হলো আমার রসকলি
বেনারসী মিঠা পানের মত,
আহা যৌবনের উত্তালে এখন
দিবানিশি হাবুডুবু খায় কত।
স্কুল জীবন পার করেই
তারপর গেলাম বড় কলেজে,
অবুঝ মনে নানারকম উল্টো
বুদ্ধি আসে আউট নলেজে।
পড়াশোনা তো নষ্ট হলো
আরাম আয়েশ গেল লাটে,
প্রেমের কামনা জাগলো মনে
কোমল হৃদয় দুঃখে ফাটে।
কলেজের সেই ক্যাম্পাসে বসে
অবাধে কত চলতো আড্ডাবাজি,
পড়াশোনা তো ঢপের চপ
তাই শুধু মারতাম ফাঁকিবাজি।
কোন কিছুর অভাব ছিল না
করেছি নারীর সাথে প্রেম,
সফল হতে পারিনি আজও
শূন্য রয়ে গেল অন্তরের ফ্রেম।
কলেজ জীবন শেষ করে
ভাগ্যে নেমে এলো দুরাশা,
সংসার চালানোর জন্যে তখন
শুরু করলাম নতুন ব্যাবসা।
বত্রিশ বছর বয়স হলো
ছিলাম অনেক পারিবারিক চাপে,
আমার রূপের গ্লেজ নষ্ট
তেমনি হচ্ছিল ধাপে-ধাপে।
বন্ধুরা দেখলে বলতো আমায়
কবে করবে তুমি বিয়ে,
সুখের সংসার বাঁধবে কবে
সঙ্গে অর্ধাঙ্গীনি কে নিয়ে।
এদিক সেদিক খুঁজতাম কত
বিয়ে করবার জন্য নারী,
বিয়ের সম্বন্ধ ভাঙ্গলো যখন
দুটি নয়ন থেকে ঝরলো বারি।
ঘটক মশাই আসলেন বাড়ি
বিয়ের সমন্ধ পাকা করে,
এইবার বিয়ে না হলে
বোধহয় আমি যাব মরে।
মেয়ে দেখতে গেলাম আমরা
সকল বন্ধু-বান্ধব মিলে,
সফল হবে জীবন আমার
সে স্বামী রূপে মেনে নিলে।
যখন সামনে আসলো আহা
কী সুন্দর তার রূপের জাদু,
ষোল বয়সী কিশোরী যেন
হবে অসীম সাধের বধু।
দুজন দুজনকে পছন্দ করে
দিলাম শোনার আংটি পরিয়ে,
ঘোর অন্ধকার কাটলো এবার
পাকা হলো আমার বিয়ে।
ষোল বাই বত্রিশের ফরমোলা
তখন পূর্ণ হলো অবশেষে,
বিয়ে করতে গেলাম আমি
সেজে জামাই বাবুর বেশে।
সোনার টুকরো স্ত্রী আমার
নাম হলো তার মউ,
লোকে বলে আমায় দেখে
বুড়ো খোকার কচি বউ।


রচনাকালঃ- ০৮/০৮/২০১৭

বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০১৭

ঘুম নেই

ঘুম নেই—ঘুম নেই
নিগ্রো কৃষ্ণাভ মগ্ন রাতে,
শূন্য রাজপথে অবিরত হাঁটি
অগ্নির মশাল জ্বেলে হাতে।
মানুষের লহুতে স্নান করে
তোরা করিস সদা পরিহাস,
চির বিষাক্ত ভুবনের বুকে
আমি থাকবো না আর কৃতদাস!

ঘুম নেই—ঘুম নেই
রোদনের সুর উঠেছে রাতে,
শোকে কাতর হয়েছে প্রজা
অসহায় নর-নারীর নিপাতে!
নির্মম জুলুমে জর্জরিত জনতা
তাই হয়ে উঠেছি অস্থির,
চুরমার করবো তোদের সত্তা
নত হবে না উন্নত শির!

ঘুম নেই—ঘুম নেই
অনলে কলেবর পুড়ছে রাতে,
দেশকে তোদের নড়ী থেকে
মুক্ত করবো আগামীর প্রভাতে।
বিশ্বের অন্তরীক্ষ ভেদ করে
হয়েছি রুদ্রের মত নৃশংস!
ভয়ংকর তীব্র প্রলয় এনে
তোদের করবো এবার ধ্বংস!

ঘুম নেই—ঘুম নেই
খড়্গের ধ্বনি শুনি রাতে,
অসু গেল কত মানুষের
তোদের প্রখর অস্ত্রের আঘাতে!
দেশে ধর্মান্তরের জাল বুনে
মন্দির মসজিদে করিস বিভেদ,
সড়যন্ত্রের ফাঁদে লাগে দাঙ্গা
বেশুমার প্রজার করিস শিরশ্ছেদ!

ঘুম নেই—ঘুম নেই
বিদ্রোহী উন্মাদ নিঝুম রাতে,
নীল বিষধর ভুজগ হয়ে
তোদের দংশাব তীক্ষ্ণ দাঁতে!
প্রতিশোধ নেব প্রাণ বলির
হয়েছি শূন্য দ্যুলকের ঝঞ্ঝা,
করিনাকো আর তোদের ভয়
ধরেছি দেহান্তের সাথে পাঞ্জা!

ঘুম নেই—ঘুম নেই
লাল রূধির মাখা রাতে,
তচনচ করবো অক্ষের তখ্ত
জীবন যাই যাক তাতে!
যতক্ষণ থাকবে চিত্তে মনোবল
যুদ্ধ করেও হব না ক্লান্ত!
আসুক না যতই বাঁধা বিপত্তি
তোদের নিধনেই হব শান্ত।



রচনাকালঃ- ০৭/০৮/২০১৭

বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০১৭

মেঘ বালিকা

ব্যস্ত জনবহুল শহরের কোলাহল ছেড়ে,
শূন্য মনে আমি যেতে চায় দূর-বহুদূর।

যেখানে থাকবে শুধু মেঘ বালিকার অস্তিত্ব,
শান্ত প্রকৃতির মাঝে থাকবে অটুট নীরবতা।

কলাতিপাত হলেই চলে যাব তার কাছে,
মনের গভীরে জমেছে কিছু অতৃপ্ত কামনা।

বৃষ্টি খেয়ার পাল উড়িয়ে সিক্ত করবে আমায়,
প্রান্তর ভেজা কান্নার সুরে হারিয়ে যাব।

তার হদয়ে লুকিয়ে আছে সহস্র অভিমান,
দুটি নয়ন থেকে ঝরে শ্রাবণ নদীর বৃষ্টি।

দেখেছি চক্রবালের শেষ খাঁড়িতে সেই গৃহ,
পাব যেদিন শূন্যে নতুন করে তার দেখা।

সেদিন অথই প্রেমে নিষিক্ত অঙ্গ হবে পুলকিত,
শীতল বর্ষণে ধুয়ে মুছে যাবে চিত্তের পীড়া।

সফলতার চূড়ায় পৌঁছবে অসম্পূর্ণ প্রেম,
হিমেল পরশে সৃষ্টির মাঝে যাব হারিয়ে।

সেই কবে থেকে তার কাছে চেয়েছি যেতে,
নিঃসঙ্গ জীবনে মেঘ বালিকার বড্ড প্রয়োজন।


রচনাকালঃ- ০৬/০৮/২০১৭

সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০১৭

প্রণয়ের প্রদীপ

ব্যস্ত নিগম ভিড়ের মাঝে
খোঁজো কেন মোর অস্তিত্ব?
দুরূহ পথ অতিক্রম করে
ক্লান্ত তনু এখন একাকীকত্ব।
বিধির প্রথা খণ্ডাবে না জানি
নিয়তির সাথে যাবে খেলে!
কাঁদো কেন? আসবো আমি
প্রণয়ের শীতল প্রদীপ জ্বেলে।

কেতনের খোঁজে এসেছি আমি
এক ভিন্ন অর্বচীন দেশে,
অজস্র ভালবাসা উপহার নিয়ে
ওই অঙ্গনে ফিরবো অবশেষে।
তোমার হৃদয় বুঝি রোদনমগ্ন
দাও আর্তিকে ছুড়ে ফেলে!
চিন্তা কীসের? আসবো আমি
প্রণয়ের শীতল প্রদীপ জ্বেলে।

কবে আসবে শুভ দিন
সেই আশায় গুনি প্রহর,
বিনিদ্র রজনী কাটে নিঃসঙ্গ
আঁখিতে জমে নোনা লহর!
জানি মোদের আসঙ্গ হবে
বেদনার মিহির অস্ত গেলে,
উদ্দীপ্ত হয়ো না, আসবো আমি
প্রণয়ের শীতল প্রদীপ জ্বেলে।

আবার ফুটবে নীল শতদল
দ্যুলকে উঠবে সোনালি চাঁদ,
মুছে যাবে মনের আকুলতা
মোর আগমনে হবে উন্মাদ।
তুমি হীন কাটে না এ-জীবন
সুখের ঠিকানা খুঁজে পেলে,
ভেবো না আর, আসবো আমি
প্রণয়ের শীতল প্রদীপ জ্বেলে।

দূরত্বের পীড়ন সইবো কী করে
বিষাদে অন্তর খায় কুরে!
এবার তোমায় দিলাম কথা
কখনো যাব না ছেড়ে দূরে।
আসবো ফিরে তোমার দ্বারে
অভিমানে যেন দিও না ঠেলে!
প্রতীক্ষায় থেক, আসবো আমি
প্রণয়ের শীতল প্রদীপ জ্বেলে।



রচনাকালঃ- ০৫/০৮/২০১৭

রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৭

ক্ষণিকের প্রেম

অঞ্জলি, চৈত্রের গ্রীষ্মে রোদেলা দিনের খরতাপে
বিরহের আঘাতে দিশাহারা তৃষ্ণার্ত পথিকের মত,
নীল গগনে অম্বুদের সাথে উন্মুক্ত পথে হেঁটে
অবশেষে রজনীর ক্লান্ত মৃগাঙ্ক হয়ে গেছি আমি!
পশ্চিম অম্বরে সন্ধ্যাতারা মত রয়ে গেলে দূরে
প্রত্যহ অধীর আগ্রহে চেয়ে থাকি তোমার পানে,
যখন ধীরে ধীরে যামিনীর নিরংশু ঘনিয়ে আসে
প্রেম করে দুটি আত্মা গিয়ে মিলিত হয় একত্রে।
তখন শান্ত মনে শীতল প্রদীপের কিরণ জ্বেলে
তুমি মিশে থাকো ওই দূর প্রান্তে চন্দ্রির নীলে,
চিন্তনের বোতলে স্মৃতির মদিরায় মাতাল হয়ে
দিবানিশি যুদ্ধের ভিড়ে খুঁজে ফিরি তোমার অস্তিত্ব!
শুধু বিষন্নতার পারাবারে ভাসে আমার তরণী
পাটাতলে পুষ্পের মত তোমার বিগ্রহের সুঘ্রাণ,
সঙ্গিহীন নক্তে অনল নিয়ে খেলতে খেলতে
তারপর ক্লান্ত হয়ে আসে রক্তক্ষরণ অবয়ব!
চিত্তের গভীরে জমে থাকা তুষার গলে ধীরে ধীরে
তবুও শত কলঙ্ক বুকে নিয়ে আমি হাঁটি একাকী!
আলোহীন দ্যুলক থেকে ভুবনে অবতীর্ণ হয়ে
ক্ষণিকের কামজ সুখ দিয়ে আবার চলে যাও দূরে!
দেখি আমার শান্ত ছায়ায় তুমি এক ঘুমন্ত রমণী
তবু জীবনের চলচিত্র গাঢ় শ্যামে আছে ডুবে,
অঞ্জলি, এ-আঁখি জ্যোৎস্নার প্রভায় জেগে থাকে
শুধু তোমার ক্ষণিকের প্রেম পাওয়ার প্রত্যাশায়।


রচনাকালঃ- ০৪/০৮/২০১৭

শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০১৭

ত্রাস

ভারতবর্ষের বিহার, দিল্লী, উত্তরপ্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক! ভূতেরা নাকি বন্ধ ঘরে ঢুকে মেয়েদের মাথা থেকে চুল কেটে নিয়ে যাচ্ছে! এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কবিতাটি রচিত।
------------------------------


ভূখণ্ডের বুকে দেখা দিলো
ধারাবাহিক এক নহলী সঙ্কট,
ত্রাসে দিন কাটছে অবলার
রাক্ষসের উপদ্রব বাড়ছে বিকট!

দানবের কাহিনী গল্পে থাকে
নিপটে নেই তার ভব,
এ-ছায়ামূর্তি আবার কেমন হবে
মানবরূপি সেজে আছে সব।

সমাজের বক্ষে পুরুষ নয়
পিশাচের সংকল্প হলো দাসী,
এমন কু'কর্মের কৌশল দেখে
তখন নীরবে পাই হাসি।

গভীর ক্ষণদায় সবার কুঠীতে
ঢুকে কাটছে মানবীর অলক!
হতাশ চেতন এ-কি হলো
যখন খুলছে আঁখির পলক!

নিজের চিত্র দেখে স্তম্ভিত
কোথায় গেল তার কেশ!
আকৃতি হলো নরের মত
শিরে আঁশ নেই অবশেষ।

বিরহ চিত্ত রোদনে মগ্ন
উড়ে গেল শীর্ষের চুল!
উদ্বেগের প্রকোপে বিভ্রান্ত হয়ে
খুঁজে পাই না কোন কূল!

লৌহ কপাট বন্ধ থাকলেও
কী করে ঢুকছে ওই ভূত,
ধরণ যেন ছায়ার মত
তাদের সব ষড়্যন্ত্র নিখুঁত।

রমণীর বদনে আশঙ্কার ছবি
করতে চায় অসুরকে বদ!
তন্ত্র মন্ত্র বিদ্যার সাথে
দূর করছে মহা বিপদ।

অদৃশ্য মহাকায় শ্লোগান দেয়
রাখবে না অঙ্গনার ঘটে কুন্তল!
চিকুর দিয়েই সাজিয়ে তুলবে
আগামী সবুজ ধরণীর ভূতল।



রচনাকালঃ- ০৩/০৮/২০১৭

শুক্রবার, ৪ আগস্ট, ২০১৭

প্রতীক্ষা

শুধু যদি একবার এসে বলো তুমি আমার হবে
এভাবে নিত্যতা তোমার জন্যে করবো প্রতীক্ষা!
যদি ছোট্ট কুটীর দহনে পুড়ে হয়ে যায় শ্মশান
প্রাণ উড়ে চলে যায় কখনো যদি অঙ্গ ছেড়ে!
শূন্য ধড়ে জমে থাকবে মনের সব আকুলতা
এ-ভুবনে তোমায় ফিরে পাব আমি হাজার বছর পরে,
কত অসীম ভালবাসে তোমায় এই আবেগী অন্তর
নিমগ্ন প্রদোষে একাকী নীরবে বসে শুধু কেঁদে যায়!
শুধু এক পলকের জন্য তোমায় এই বুকে পেতে
রয়েছে মেতে বিচলিত দেহের দীর্ঘে সতত অন্তর,
ঊর্মির মত ক্ষণে ক্ষণে উচলিয়ে ওঠে  ভয়ংকর আঁধি
নিত্য বাজে হৃদয়ের মাঝে প্রণয়ের চির কলতান।
শত ক্লেশ নিয়ে জীবনে উড়ন্ত সমীর হয় নিথর
একাকীকত্ব ভর করে তোমার ব্যাকুল মনের টানে,
ক্ষণে ক্ষণে নিজে থেকেই হয়ে যায় দিশাহারা
পথ ভুলে যায় তোমার ওই অবুঝ প্রেমের মোহে।
কবে ওগো আসবে তুমি শ্রাবণ বারিধারার সুরে
কাছে টেনে শীতল করে দেবে আমার তপ্ত অসু!
এই উমেদ করেই চলে গেল জীবনের পাঁচটা বছর
তোমায় না কাছে পেয়ে বিরহের জালে আমি বন্দী!
এখনো এঁদো রজনীতে ঝলমল করে পূর্ণিমার শশী
ছলকে ওঠে দু-নয়নে অজস্র কান্নার নোনা অম্বু!
শুধু তোমার জন্য প্রহর গুনি সড়কের দিকে চেয়ে
প্রেমের প্রদীপ জ্বেলে মনের নিবিড় অন্ধকারে।
এই বিষন্ন দিনগুলি গড়ে তোলে ক্রমশ সাম্রাজ্য
হানাদারী বেদনায় একান্তে আঁখি থেকে ঝরে নীর!
আমি হলাম নিতান্ত অসহায় এক ব্যর্থ প্রেমিক
চিত্তে প্রত্যহ আঘাত হানে বারংবার মৃত্যু পীড়ন!
আমার প্রতিটা বসন্ত কাটে শুধু তোমার প্রত্যাশায়
ঘুমহীন নক্তে মস্তিষ্ক আক্রমণ করে কত দুশ্চিন্তা,
প্রতীক্ষা একদিন শেষ হবে তাই আজ আমারো বিশ্বাস
তবু যেন প্রেমের বাণী করে আমার সাথে রঙ্গ।
দুঃখী মনকে শতবার বোঝায় কষ্ট নেই অস্তিত্বে
ধরণীতে খুঁজে ফিরি যদি কখনো পাই তোমার দেখা,
প্রতীক্ষায় রত থাকবো হোক না সে সহস্র বছর
খুশি হবে এ-অন্তর একবার তোমায় খুঁজে পেলে।


রচনাকালঃ- ০২/০৮/২০১৭

বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৭

আমরা ছাত্রদল

আমাদের মনে আছে উচ্ছ্বাস
বদলাব একদিন বিশ্বের ইতিহাস,
দূর করবো দুঃখীদের কষ্ট
হতে দেব না প্রাণ নষ্ট!
প্রকাশ পাবে প্রগতিশীল চেতনার
সময় এসেছে দ্রুত বিবেচনার,
আমরাই হলাম দেশের বল
তাই তো, আমরা ছাত্রদল।

আমরা দেব সহসীকতার পরিচয়
থেমে যাওয়া উদ্দেশ্য নয়,
সর্বদা সত্যি কথা বলবো
একত্রে দল বেঁধে চলবো।
করবো না কখনও জাতির বিভেদ
বাঁধা বিপত্তিকে করবো ছেদ!
আমাদের গর্জনে কাঁপবে ভূতল
উদার মন, আমরা ছাত্রদল।

শিক্ষা দীক্ষা অর্জন করে
একে অন্যের হাতটি ধরে,
যেতে হবে আঁধার ঘোঁচাতে
অসহায় পতিত মানুষকে বাঁচাতে!
আমাদের অন্তরে নেই ভয়
জীবন যুদ্ধ করবো জয়,
লক্ষ্য, সামনে এগিয়ে চল
উচ্চসুরে বলি, আমরা ছাত্রদল।

অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে
দেব সাহায্যের হাত বাড়িয়ে,
বিদ্রোহী হয়ে আনবো ক্রান্তি
ফিরে আসবে দেশে শান্তি।
তুফানের মত আমাদের শক্তি
সদা গুরুজনদের করবো ভক্তি,
কখনও করবো না কোন ছল
গর্ব করি, আমরা ছাত্রদল।

যদি করে কেউ সড়যন্ত্র
প্রতিবাদ হবে মুল মন্ত্র!
জানি সভ্যতার ভাঙবে না ধ্যান
কাজে লাগাবো অগাধ জ্ঞান।
আমাদের মাঝে থাকবে আদর্শ
সকলকে দেব অগ্রগতির পরামর্শ,
মুছবো লাঞ্ছিতদের আঁখির জল
সততার প্রতীক, আমরা ছাত্রদল।



রচনাকালঃ- ০১/০৮/২০১৭