সার্চ করুন

রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৭

এ যুগের সুকান্ত

জগদ্বাসী ছেয়ে গেছে আঁধারে
অভিশপ্ত পাপী ভূঙ্গের মারে!
রিষের অনল যেন দুর্বার
কেড়ে নিচ্ছে নির্বলের অধিকার।
মানবের গলায় ধ'রে ছুরি
অবাধে করে ধন চুরি,
বিদার মৃত্তিকা আজ অশান্ত
ওগো আমি এ যুগের সুকান্ত।

দেশের সীমান্তে জঙ্গীর হানা
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অক্ষের কারখানা,
স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চলে দালালি
সমাজের চোপায় রাক্ষসের কালি।
দুর্ভিক্ষের কাঙ্গাল খায় ফ্যান
তবু সভ্যতার ভাঙ্গেনা ধ্যান!
দীর্ঘ বিরহের ভার অফুরন্ত
ওগো আমি এ যুগের সুকান্ত।

কালো নীরদে ঢেকেছে আকাশ
করতে হবে অসুরের প্রাণনাশ,
ছোবল মারে তীক্ষ্ণ দাঁতে
দেশের ভবিষ্যত তাদেরই হাতে!
দিকে-দিকে বাড়ে পিশাচের সঙ্গ
ধর্ম বিবাদে হচ্ছে শান্তিভঙ্গ,
বৈশাখী প্রলয় উঠছে দুর্দান্ত
ওগো আমি এ যুগের সুকান্ত।

ফিরে এসেছি অরণ্য রূপে
আবার সলিল উঠবে কূপে,
চিত্ত হবেনা কখনো ক্ষীণ
বসুধার বক্ষে ফিরবে সুদিন।
আসছে উদ্যমী শোণিতের আঠারো
পরোয়া করবে না আর কারো!
দ্রোহের নিতে হবে সিদ্ধান্ত
ওগো আমি এ যুগের সুকান্ত।


রচনাকালঃ- ২৬/১১/২০১৭

বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৭

ক্ষণিকের বন্ধুত্ব


মেঘ বালিকা,
অস্তিত্বের দুঃসহ পথ চলতে-চলতে
দীর্ঘশ্বাস ফেলে দাঁড়িয়েছিলাম একা,
শূন্যতার আঘাতে নিশ্বাস হলো রুদ্ধ!
তুমি এলে পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে।

ছলনা করে!
জ্বালালে আঁধার মনের অঙ্গনে আলো
হৃদয়ে জাগালে বেঁচে থাকার আশা,
সহস্র সাজানো গল্পের ফাঁদে ফেলে
তুমি মায়াবী রমণীর পরিচয় দিলে।

সবি ছিল মিথ্যে!
এইতো সেদিন, তুমি আমায় বললে-
পৃথিবী বদলে গেলেও তুমি বদলাবেনা,
ভাঙ্গা ইটে গড়লে ক্ষণিকের বন্ধুত্ব?
চাহিদার শেষে করলে চূর্ণ-বিচূর্ণ!

নাটকীয় ভাবে,
তুমি বললে যতক্ষণ থাকবে প্রাণ
যতদিন ভুবনে থাকবে চন্দ্র সূর্য,
চিরকাল অমর থাকবে মোদের মিত্রতা
তুমি কখনো ছেড়ে যাবেনা আমায়।

তবে কেন?
তুমি আমার জীবনে এলে-
কোন প্রয়োজন ছিলনা ক্ষণিকের সুখ,
নিজ হাতে হত্যা করলে আমার স্বপ্ন!
আজ ভেঙ্গেগেল চিরতরে আস্থা।

আমি মূল্যহীন!
তাই অমাবস্যার আঁধারে ঠেলে দিয়ে
তুমি জ্বালালে অন্যের ঘরে কিরণ,
নিমেষে বদলে গেল আমার জগত
কোথায় যেন থমকে দাঁড়াল আয়ু।

অথচ আজ,
বিশ্বাসী মনে যন্ত্রণার বিষ ঢেলে!
অন্যকে উপহার দিলে রক্তিম গোলাপ,
আমি দুঃখবাদী বিরহের সমুদ্রে ভাসব
তুমি সুখে থেকো তোমারি মত।


রচনাকালঃ- ২০/১১/২০১৭

মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৭

কলমের বিদ্রোহ

অরণ্য- (ভাবুক কবি) এর প্রিয় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য লেখা কলম কবিতার প্রতিউত্তরে কবিতাটি রচিত হয়েছে।
————————————————————

আমি কলম, যুগ-যুগ ধ'রে
পড়ে আছি ভুবনের জমিনে,
দেখায় বিশ্বকে নব সরণির দিশা
পৌঁছায় নিরাধারকে নিজ গন্তব্যে।
এতদিন লিখেছি বহু আখ্যান
কাব্যের পুস্প ফুটে আমার অবদানে,
দিবা-নিশি ক্লান্তিহীন মূর্তি থেকে
ঝরে পড়ে লহু মাখা অশ্রুর কালি!
তুলে আনি সেই আগের বার্তা
করি নিত্য লেখা সাহিত্যের দাসত্ব,
আমার গতরে দাও কুত্সার অপবাদ
বাধ্য করো নির্দোষকে দণ্ড দিতে!
তবুও পাইনি অবিশ্রান্ত কর্মের মজুরি
বলো, এভাবে আর চলবে কতকাল?
আমি আর থাকব না ক্রীতদাস
আজ শুরু হবে কলমের বিদ্রোহ!
মোরা জোটবদ্ধ হয়ে করবো হরতাল
খন্তার থেকে ভয়ঙ্কর আমার লেখনী,
আমি উপড়ে ফেলব ক্ষুদিত বশ্যতা
এতদিন সহ্য করেছি সবার বিদ্রুপ।
আর চলব না কোন প্রভুর খেয়ালে
শব্দহীন হলেও আমার আঘাত তীক্ষ্ণ!
তোমাদের স্বার্থে কখনো হবনা নিস্তেজ
নিজ হস্তে লিখব মানবের নসিব।
আজ মুছবো গ্লানি, মুছবো দাসত্ব
সময় এসেছে বেকারত্ব মিটাবার;
বিগ্রহ করবো নিতান্ত নগণ্যের তরফে
চলার বর্ত্মে আর ফেলবনা দীর্ঘশ্বাস।
মুছে দেব কাঙ্গালের নয়ন বারি
নিকুচি করবো অবৈধ অক্ষের তখ্ত!
হুশিয়ার হও যত পাপীর দল
আসছি প্রলয়ের চক্র নিয়ে।
আজ বিদ্রোহের অনলে শুরূ হরতাল
বন্ধ হবে সমাজে ধনীদের শোষণ,
সুবিচার ফিরবে দেশের বুকে
রূধির দিয়ে আজ লিখব ইতিহাস।


রচনাকালঃ- ১৪/১১/২০১৭

শনিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৭

পূর্ণিমার মৃগাঙ্ক

দীর্ঘ মার্গ গমন করে হই ক্লান্ত
তৃষ্ণার্ত অধ্বগের মতো খুঁজি তোমায়!
এতদিন তুমি ছিলে খোয়াবের পরী
ডহর ক্ষণদায় লিখি কত রুপকথা।

কল্পনায় আঁকি না দেখা মলিন অনন
অজানা ছোঁয়া যেন প্রতিক্ষণে ভাবায়,
তবু প্রশ্নের শৃঙ্গী জমে হৃদয়ের মাঝে
নসিবের কৃপায় পরবাদ খুঁজে পেলাম।

প্রত্যাশী প্রহর শেষে দেখলাম কিরণ
তুমি এলে পূর্ণিমার মৃগাঙ্ক হয়ে,
ছড়ালে শূণ্য বাগিচায় উদাসীন প্রভা
কোমল হস্তে দূর করলে বিষন্নতা।

তুমি এক নিস্তব্ধ প্রকৃতির রূপ
শিরের অলক যেন দ্যুলকের অম্বুদ,
বিকেল গড়িয়ে যখন সন্ধ্যা নামে
তুমি জ্বেলে দাও প্রণয়ের দীপক।

দেখি আমার প্রতি অজস্র মোহ
পাই না বলা লুকিয়ে থাকা আদর,
তিস্তার মতো চঞ্চল হরিণীর চেতনা
যেন অনন্য অনুভবে তীব্র আঁধি।

সওগাত দিলে চিত্তে উদম আসক্তি
অস্তিত্বহীন যুবকের শেষ গন্তব্য তুমি,
ক্লেশের কালিতে অদৃষ্ট লিখেছে লিপি
অহরহ পাই তোমাকে হারানোর ভীতি!


রচনাকালঃ- ১০/১১/২০১৭

মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৭

ভারতমালা সড়ক

ভারত সরকারের পরিকল্পনা ভারতমালা সড়ক। এই পথকে কেন্দ্র করে অগণিত মানুষের ঘর ভাঙা পড়ছে! এমন করুণ  দৃশ্যকে ঘিরে কবিতাটি রচিত হয়েছে।

রাজ গড়ছে সড়ক ভারতমালা
হৃৃদয়ে ধরেছে বড় জ্বালা,
হবে তাতে গতিকের বর্ধন
নোনা উদকে ভিজলো নয়ন!
শিরে এসে পড়লো বজ্রপাত
বিজ্ঞের নাটকে পেলাম আঘাত,
চেতনা সহজ নয় অতি
বিকল্প পথের নেই গতি।
দেখলাম নিয়তির এ-কী খেলা
বসেছে যেন বিকারের মেলা,
বিবশের তরে মানবতা নির্বাক
আঢ্যের জুলুমে হই অবাক।
শাসক পেতেছে নিকুচির ফাঁদ
তবু কেউ করেনা প্রতিবাদ!
চুপচাপ দেখে সবাই রঙ্গ
কেউ দেয় পাতকের সঙ্গ।
তৈরি করেছি খোয়াবের আবাস
তাতে হবে দানবের চাষ,
চকিত ভূতলে দিবে মিশিয়ে
মোর অন্তর উঠবে বিষিয়ে!
জানি চিরতরে হারাবে আশ্রয়
পাই গন্তব্য না মেলার ভয়,
শুরু হবে মানুষের কোলাহল
কাঙ্গালের নেত্রে ঝরবে জল!
আমি এক দুঃখের কবি!
দেখতে পাই করুণ প্রতিচ্ছবি,
মানুষের কুসীদে মরি হাই
রজনী আঁখিমেলে কেটে যাই।
করি অস্তিত্বের সাথে সংগ্রাম
দিশাহীন ধরণীতে নেই বিরাম,
যাব কোথায় হারাবো কোথায়
বিরহে কাতর চিত্তের ব্যাথায়!


রচনাকালঃ- ০১/১১/২০১৭

শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৭

লেখনীর কালি

আমি যার লেখনীর কালি
হৃদয় আবেগে হয়েছে খালি,
বর্ষণে দেয় অভিষঙ্গ ধুয়ে
স্বপ্ন দেখায় কপাল ছুঁয়ে।
সেই রমণী কে?

আমি যার কবিতার ছন্দ
বিবর্ণ অন্তরীক্ষের উদিত চন্দ,
যার পরশে বাঁচে আয়ু
অন্তরে বহে শীতল বায়ু।
সেই রমণী কে?

আমি যার কণ্ঠের সুর
মর্ম আঘাতে বেদনা বিধুর!
সে-যে মোর সুখের নীড়
উত্ক চিত্তে লহরের ভিড়।
সেই রমণী কে?

আমি যার বসন্তের আনন্দ
আমিই সেই মুক্ত জীবনানন্দ,
যারে ভেবে মরি হাই
প্রদোষে কবিতা লিখে যাই
সেই রমণী কে?

আমি যার শোণিতে প্রাণ
না-জেনে খেয়েছি প্রণয়ের বাণ!
আমিই যার আঁখির সলিল
চলনে আছে শান্তি অনাবিল।
সেই রমণী কে?


রচনাকালঃ- ২৭/১০/২০১৭

বুধবার, ১ নভেম্বর, ২০১৭

প্রতিরূপ

হৃদয়ের মাঝে এঁকেছিলাম প্রতিরূপ
নীল রঙা কলম তূলিতে যার,
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে
উর্বীতে আবির্ভাব হলো তার।
দেখলাম পলকের দৃশ্য অটুট
রক্তিম রূপের অসীম মায়া,
চাতক বিহঙ্গের মত লোচন মেলে
কালো কুন্তলে যেন প্রকৃতির ছায়া।
অনিলে দুলে লাল অধর
কন্ঠস্বর যেন সুমধুর কোকিল,
কুরঙ্গের মত নির্মল কলেবর
বর্ষণে স্বাগত জানায় অখিল।
এতদিন দাঁড়িয়ে ছিলাম একাকী
গুনেছি কত প্রতীক্ষার প্রহর!
এইবার বুঝি শেষ হবে সময়
চিত্তে উঠেছে প্রণয়ের লহর।
জানিনা কবে বুঝবে সে
মোর ব্যাকুল মর্মের কথা,
অনন্ত নিদ্রায় বিলীন হতে চায়
তার শীতল কোলে রেখে মাথা।


রচনাকালঃ- ২৩/১০/২০১৭

সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৭

আমরা জঙ্গী নই

আমরা মুসলিম সারা বিশ্বে শান্তির নিগদ চায়
আমাদের ভুল বুঝোনা দিও তোমাদের হৃদয়ে ঠায়,
আজ ইসলাম জাতি ভুবনের কাছে অপরাধী
প্রত্যহ সময় লাঞ্ছিত করে দিচ্ছে মোদের সমাধি।
অগ্রের দিকে এগিয়ে চলে হার মানেনা তাঁতি
সব কিছুতে পিছিয়ে পড়ছে এইতো মোদের জাতি,
ধর্মগুরু আছে যারা গড়ে তুলছে অস্ত্রাগার
মন্দির আর মসজিদ হচ্ছে কূটনীতির মন্ত্রণাগার!
ধর্ম স্থানে বসে তারা সকলকে দিচ্ছে কুমন্ত্রণা
তার কারণে মানুষ ভোগ করছে তীব্র যন্ত্রণা!
গীতা কোরানের বাণী শুনিয়ে দিচ্ছে উল্টো বুদ্ধি
জিহাদ করলে পরেই নাকি হবে মোদের শুদ্ধি।
গুপ্তস্থানে প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলছে জঙ্গী
মুখোশধারী ধর্ম রক্ষক হচ্ছে তাদের সঙ্গী!
হাতে খড়গ কাঁধে বন্দুক ছুটছে অমর্ষ দানব
ধর্মের নামে নির্মম ভাবে হত্যা করছে মানব!
কত স্ত্রী স্বামি হারালো মা'য়ের কোল হলো খালি
এমন করুণ দৃশ্য দেখে উর্বী দিচ্ছে গালি,
ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম এটাই চরম সত্য
হাদিস আর কোরানে বর্ণিত আছে তথ্য।
ইসলাম কভু দেয়নি হুকুম মানুষ হত্যা করতে
তবে কেন জঙ্গী হয়ে যাচ্ছো তাদের মারতে!
পুরোহিত আর মৌলবাদীর দল করছে সর্বশেষ
হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা লাগিয়ে দিচ্ছে অবশেষ।
অর্থলোভি ধর্ম কর্তার জঞ্জাল ঠকাচ্ছে অবিরত
আজ অসহায় মানুষের রক্তে অঙ্গ ক্ষত-বিক্ষত!
সঠিক পথ দেখাবে মোদের এমন ধর্মগুরু কই?
অশ্রুসিক্ত নেত্রে বলছি তোমাদের আমরা জঙ্গী নই!


রচনাকালঃ- ১৮/১০/২০১৭

শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৭

প্রশ্ন

ক্ষণস্থায়ী প্রেমে কখনো কি মানুষ বাঁচে?
তবে অধমাঙ্গ রেখেছ কেন ভাঙা কাঁচে,
দুদিন পরেই কাটবে মোহ,
চিত্ত অনলে হবে দাহ!
উপেক্ষা করে দূরে ঠেলে দিবে নিশ্চয়,
বলতে পারো ভালবাসা কেমন করে হয়?

শ্রাবণ নীরদের বৃষ্টি হয়ে তুমি আসবে,
মাতাল ভ্রমরের অঙ্গ ভিজিয়ে মিথ্যে ভালবাসবে!
বলবে তখন কত কথা,
অন্তরে থাকবে স্মৃতি গাঁথা।
ক্ষোভে চলে গেলে প্রণয়ের হবেনা জয়,
বলতে পারো ভালবাসা কেমন করে হয়?

গোলাপের পাপড়ি মেলে পুরঁজনে এসে ফুটবে.
অগতির নড়ী ধরে সবুজ প্রান্তরে ছুটবে।
দেখাবে সহস্র রঙিন স্বপ্ন.
উত্ক প্রাণ আবেগে মগ্ন।
তোমার দেওয়া আর্তিতে হবে লোচন জলময়!
বলতে পারো ভালবাসা কেমন করে হয়?

মায়াবী রূপের ছলনায় এ-মন নেবে কেড়ে.
ক্ষণিকের প্রেম দিয়ে অবশেষে যাবে ছেড়ে!
বয়বো কতকাল বিরহের ভার.
বিষাদে কতর হব ছারখার!
মর্ম চূর্ণিতে বলবে কোন পাপ নয়.
বলতে পারো ভালবাসা কেমন করে হয়?

কোকিল কণ্ঠের রাগিণী হয়ে করবে দিশাহারা.
তোমার আভায় কাঁপবে দ্যুলক বয়বে বারিধারা।
নক্তের শয়ন যাবে উড়ে.
উতলা কলেবর পীঠিকায় পড়ে।
মিথ্যে প্রণয়ের নামে তবু করবে অভিনয়!
বলতে পারো ভালবাসা কেমন করে হয়?

উষসী গড়িয়ে যখন নিরংশু নামবে কালো.
অখিলের শশাঙ্ক হয়ে তুমি জ্বালবে আলো।
আশয়ের উপর রাখবে মাথা.
নিছনি দিবে তীব্র ব্যথা!
প্রতি পলকে থাকবে শুধু হারানোর ভয়!
বলতে পারো ভালবাসা কেমন করে হয়?


রচনাকালঃ- ১৩/১০/২০১৭

শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৭

এই বরষায়

দ্যুলকে উঠলো দেখো ঘন
মাতাল হলো আজ বন,
চারিদিকে নামলো আঁধার কালো
চমকে উঠছে বিজলি আলো।

পুলকে অম্বুদ করে গর্জন
নেমে এলো আজ বর্ষণ,
জাগলো অন্তরে আবেগী মায়া
ভিজতে চায় প্রেমময় কায়া।

এসো প্রকৃতি তোমায় ডাকে
পোড়োনা যেন কোন বিপাকে,
জলমগ্ন মাঠে দেবে সঙ্গ
এসো অভিলাষে ভেজায় অঙ্গ।

তোমায় নিয়ে নাচবো ধানক্ষেতে
পিরিতে হৃদয় উঠেছে মেতে,
একটু পরেই নামবে তমসা
এমন ক্ষণের নেই ভরসা।

কদম কুসুম বেঁধে খোঁপায়
এসো সমাবেত হই এ-বেলায়,
সবুজ প্রান্তে দুহাত বাড়িয়ে
বর্ষণমুখর লগ্নে আছি দাঁড়িয়ে।

এসো তবে ঝরঝর বৃষ্টিতে
চেয়ে দেখো প্রণয়ীনীর দৃষ্টিতে,
বসেছে আজ বকের মেলা
এসো বৃষ্টিতে করি খেলা।

যদি আজ প্রাণ কাঁদে
পড়ে আবেগী প্রণয়ের ফাঁদে,
যদি মনে পড়ে আমায়
চলে এসো এই বরষায়।


রচনাকালঃ- ০৮/১০/২০১৭

বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৭

তোমার প্রতীক্ষায়

আমি ডাকলে এসো সবুজ প্রান্তে
দু'হাত বাড়িয়েছি ঐ দূর দিগন্তে,
বিরহে কাতর অন্তর ফেটে চৌচির
যেন অক্ষির গাঙে উত্তাল নীর!

দৃষ্টিতে ভাসে সেই ধু-ধু মরুভূমি
গ্রীষ্মের তাপে সুকিয়েছে বুকের জমি,
মন ছুটে যাই বৃষ্টির গহীনে
শ্রাবণ প্রদোষে প্রেম জেগেছে বর্ষণে।

শীতল পবনে শাখী দোলায় অঙ্গ
বৃষ্টিতে স্নাত অটবি যেন নিঃসঙ্গ,
মন কাঁদলে এসো চিত্তের পিঞ্জিরায়
পথ চেয়ে আছি তোমার প্রতীক্ষায়।


রচনাকালঃ- ০৪/১০/২০১৭

রবিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৭

শরতের আগমন

ভাদ্রের শুরুতে শরতের আগমন
প্রকৃতির স্নিগ্ধতায় জাগে শিহরণ,
শুভ্রের আঁচলে শরৎ আসে
শেফালির মালায় প্রকৃতি হাসে।

গগনে ভাসে অম্বুদের ভেলা
করে প্রকৃতি নিত্য খেলা,
ঝিরঝির অনিলে দোলে কাশবন
শিউলির সুগন্ধে ভরে মন।

সোনালী আতপ প্রশান্তি আনে
নিরংশু ক্ষণদা জ্যোৎস্না টানে,
আপগার নীরে বিধুর কিরণ
কুঞ্জ রঙ্গনকে করে বরণ।

মিষ্টি প্রভায় মৃদুমন্দ সমীর
সবুজ ধানক্ষেত যেন অধীর,
বৃষ্টিতে ভিজে পুষ্পের রেণু
অন্তরীক্ষে ফুটে ওঠে রংধনু।


রচনাকালঃ- ৩০/০৯/২০১৭

বুধবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৭

ছোট্ট পৃথিবী

আচ্ছা-
সবাই বলে তাদের পৃথিবী খুব ছোট্ট
আর তাতে তারা খুব সুখেই আছে,
কিন্তু আমার মনে প্রশ্নের উদয় হয়
তবে সবার মত আমার পৃথিবীও ছোট্ট?

হ্যা সত্যিই-তো!
ছোট্ট, তবে সেখানে কোন সুখ নেই
আছে শুধু অসহ্য যন্ত্রণায় ভরা কান্না!
প্রতিদিন জমে অগণিত মানুষের ভিড়
কিসের খোঁজে তারা করে কোলাহল।

কি খোঁজে তারা?
ভেবেছিলাম কটা দিন সুখে কাটাব
তাই বন থেকে ধরে এনেছিলাম সুখপাখি,
সো-তো রইলো না অন্ধকার পৃথিবীতে
মনের অজান্তেই কোথাই যেন উড়ে গেল!

কবে ফিরবে সে?
তিলে-তিলে কল্পনায় সাজিয়েছি পৃথিবী
সেখানে আছে ভাবনায় মোড়ানো স্মৃতি,
মাঝে-মাঝে ভাবুক সমুদ্রের ঢেউ এসে
ভাসিয়ে নিয়ে যাই এক ভিন্ন জগতে।

সে জগত আলাদা-
সেখানে আছে নীরবতায় ভরা রোমাঞ্চ
গা থমথমে বনানীর মাঝে শান্ত প্রকৃতি,
তবুও শুনতে পাই না কোকিলের কন্ঠ
নেই তিল পরিমাণ সুখের ছিটেফোঁটা!

হ্যা ঠিক তাই-
আমার ছোট্ট পৃথিবীতে বসবাস করে
কিছু মুখোশধারী ক্ষতিকর দানবের দল,
ওরা মানবের উপর নির্বিঘ্নে করে প্রহার
শুনি অসহায় নগ্ন শিশুদের চিৎকার!

এত পীড়ন কেন?
আমার পৃথিবীতে ভাসে লুকোনো চিত্র
সহস্র প্রাণী ক্ষুধার জ্বালায় মরে!
হতাশায় মৃত্তিকা ফেটে হয় চুরমার
দারিদ্রতার পথে দাঁড়িয়ে থাকে জীব!

এত উন্মাদ কিসের!
সবার ছোট্ট পৃথিবীতে আছে কত শান্তি
তবে শুধু আমার পৃথিবীটা এমন কেন?
তাদের পৃথিবীতে তো ভাসেনা এমন চিত্র
তবেকি অসহায়ের সাথে আমার সম্পর্ক?

এ কেমন সম্পর্ক!
তাই আমার পৃথিবীতে নেই কোন সুখ
প্রতিক্ষণে দৃষ্টিতে ভাসে কষ্টের চিত্র!
আজ সবার পৃথিবী থেকে ছিন্ন হয়েছে
বিরহে ভাসমান আমার ছোট্ট পৃথিবী।


রচনাকালঃ- ২৬/০৯/২০১৭

সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৭

শেষ চিঠি

মালতি-
আমাদের দীর্ঘ ভালবাসার শিকল ছিড়ে তুমি চলে গেলে।
এখন আমি ঘুমহীন দুচোখে প্রতিটা রাত জেগে থাকি!
নিঃঝুম আঁধারে মানুষ ঘুমায় পাখিরাও ঘুমায়,
তুমিও হয়তো অজানা কোন শহরে তোমার স্বামীর
উষ্ণ প্রেমের পরশে ঘুমিয়ে থাকো অবলীলায়।

আচ্ছা-
কখনো কী আমার জন্য তোমার কাঁদতে ইচ্ছে করে না?
ঠিক যেমনভাবে আমি কাঁদি!
কথা ছিলো কোন দুরত্ব থাকবে না জীবনে।
পড়ন্ত বিকেলে নদীর ধারে
হাতে হাত রেখে দুজনে একসঙ্গে পথ চলব,
তারপর যখন ক্লান্ত হয়ে পড়বে শরীর
তখন আমরা বসে পড়ব সবুজ ঘাসে।

অতচ আজ-
সেই নদীর তীরে আজ আমি একা হাঁটি!
কেন?
কোন একদিন হাত ছুঁয়ে জানতে চেয়েছিলে
তুমি না থাকলে কী করব আমি;
তোমার মুখের দিকে চেয়ে বলেছিলাম মরে যাব!

আমার দুই কামরা ঘরের দেয়ালে
দুঃখ আর হাহাকার মাকরসার জালের মত ছড়িয়ে!
আমার ঘরের জানালার গারদে
ঝুলে থাকা বেগুনি পর্দায় স্মৃতিরা দোল খায়;
আর স্তব্ধতা এসে ভর করে বুকে।

এখন প্রতিটা বিকেল কাটে তুমি ছাড়া
আমার সন্ধ্যারাত আর সকাল গুলো যেন শূন্য!
অশ্রুসিক্ত নয়নে চেয়ে দেখি কোথাও তুমি নেই
তাই আর বাঁচতে চায় না আমিও!

হ্যা-
আজ আমি আত্মহত্যা করে বুঝিয়ে দেব!
কতটা ভালবেসে ছিলাম তোমায়।


রচনাকালঃ- ২১/০৯/২০১৭

বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৭

বৃষ্টি তুমি আসবে?

শ্রাবণের ঝরঝর বারিধারা বর্ষণে,
যদি ভিজতে চায় উল্লাসিত অঙ্গ!
বৃষ্টি তুমি আসবে?

সবুজ বনানীর বৃক্ষ হয়ে,
যদি প্রখর রোদে যাই শুকিয়ে!
বৃষ্টি তুমি আসবে?

নিয়তির গড়া শঙ্খচিল হয়ে,
যদি চায় ডানা মেলে উড়তে!
বৃষ্টি তুমি আসবে?

আষাঢ়ের এই বর্ষণমুখর লগ্নে,
যদি ধরতে চায় প্রেয়সীর হাত!
বৃষ্টি তুমি আসবে?

সর্ষে ফুলের ডাক পেলে,
যদি ভ্রমর হয়ে যেতে চায়!
বৃষ্টি তুমি আসবে?

নিস্তব্ধ শ্যামল প্রকৃতির মাঝে,
যদি দেখতে চায় তোমার অস্তিত্ব!
বৃষ্টি তুমি আসবে?

নীল আকাশের চাঁদ হয়ে,
যদি মেঘের আড়ালে যাই হারিয়ে!
বৃষ্টি তুমি আসবে?

শীতের সকালে শালিক হয়ে,
যদি স্পর্শ করতে চায় শিশিরকণা!
বৃষ্টি তুমি আসবে?

বিরহের বেদনায় কাতর হয়ে,
যদি চোখের অশ্রু চায় লুকোতে!
বৃষ্টি তুমি আসবে?

ব্যস্ত নগর ভিড়ের মাঝে,
যদি নিঃশ্বাস হয়ে যাই রুদ্ধ!
বৃষ্টি তুমি আসবে?

জীবনের শেষ ক্ষণের শয্যায়,
যদি হয়ে যাই চিরতরে নিঃশেষ!
বৃষ্টি তুমি আসবে?


রচনাকালঃ- ১৭/০৯/২০১৭

সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০১৭

ভিন্ন দেয়াল

খণ্ড অস্তিত্ব মেয়াদ হারানোর বিষাদে কাতরায়
ণিপাত বরণের দিন এগিয়ে আসে সম্মুখে!
তবুও মানব বাঁচে কিছু পাবার উমেদে
উদ্বিগ্ন মায়াবী বিবর্ণ বসুন্ধরার বুক থেকে।
অন্তর থেকে যেন মুছে ফেলেছে ভালবাসা
তাইতো প্রলয়কে তুচ্ছ ভাবে নব প্রজন্ম!
অসূয়ার দহনে তৈরি হয়েছে ভিন্ন দেয়াল
প্রত্যহ কী যেন খুঁজে ফিরে ওরা মহীতলে।
অবিন্যস্ত সংকল্প উত্তুঙ্গ বারীশের লহর ভেঙে
যেতে চায় বিশারদ থেকে বিশারদ কুঞ্জে,
নিথর সুধীর প্রকৃতির উপর করে প্রহার
অবশেষে সৃষ্টি হয় এক দুর্দান্ত ভূ-কম্পন!
মিথ্যের আড়ালে লুকিয়ে ওরা করে গেঁড়াকল
বিদীর্ণ করে সততার তৈরি করা প্রাচীর!
আগামী প্রভাতের নেশায় হয়ে ওঠে উন্মাদ
তবু রঙিন শিখী যেন মেলেনা পেখম।
ওদের পীড়নে যখন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে সভ্যতা
তখন আর্তির মাঝেও খোঁজে শান্তির লেশ,
নিরাধার মানব নিঃশ্ব হয়ে করে আত্মহনন
তবুও ওদের প্রতিকূলে করেনা কখনো প্রতিবাদ।
আধুনিক সংঘ অসতীত্বের দেওয়া সূক্ষ্ম ক্বেশে
আপন চিত্তের সাথে করে নিস্ফল আন্দোলন!
ওরা বলে পারবেনা কেউ ভেদ করতে
নিন্দিত শিলা দিয়ে গড়া ভিন্ন দেয়াল।


রচনাকালঃ- ১২/০৯/২০১৭

সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

প্রেমের প্রতীক্ষা

অধীর নেত্রে চেয়ে থাকি পথের পানে তুমি আসবে
সহস্র লাল গোলাপের সম্বর্ধনা দিয়ে করবো বরণ,
তোমার প্রতীক্ষায় কাটিয়েছি ঘুমহীন কত রজনী
মিথ্যে রঙিন স্বপ্ন দেখার নেশায় ছিলাম বিভোর।
বৈশাখীর কালো অম্বুদে এঁদোমগ্ন হলো দশ দিগন্ত
হৃদয়ের মাঝে ফুটলো নিঃসঙ্গ অসু'র বিকট চিত্র!
তোমার ভাগ্যরেখায় ফুটেছে নিত্য বসন্তের কৃষ্ণচূড়া
আমার দ্যুলকে জমেছে বিষাক্ত জলদের ঘনঘটা!
তবুও বিশ্বাস তুমি ফিরবে বৃষ্টিসিক্ত হয়ে শূন্য অঙ্গনে
সুখের বর্ষণে প্লাবিত হবে চিত্তের শুষ্ক জমি,
শ্রাবণ বৃষ্টির প্রত্যাশায় বিবর্ণ হলুদ ফুলের পাপড়ি
বিষন্ন মনে করছি তোমার নিষ্ঠুর প্রেমের প্রতীক্ষা!


রচনাকালঃ- ০৭/০৯/২০১৭

শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

সৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা

ভারতবর্যের অন্তর্গত রাজ্য উত্তরপ্রদেশ
সেখানে অবাধে গড়ে তুলছে হিংসা-দ্বেষ!
একদিকে করছে ইশ্বরের নাটকীয় বন্দনা
শান্তি ভঙ্গ করে দিচ্ছে প্রজাকে সান্তনা।
জনসভায় দিচ্ছে তারা মিথ্যে ভাষণ
মুসলিমদের মেরে করবে দেশ শাসন,
অত্যাচারে পীড়িত জাতি হচ্ছে দুর্বল
অসহায়কে প্রহার করে দেখাচ্ছে বাহুবল!
তোমাদের করছি প্রশ্ন ও ভারতীয় পার্টি
বলতেপার তোমরা মানুষ হিসেবে খাঁটি?
মুসলিম হয়ে জন্মেছি দাও কেন ধিক্কার
কবে পাব আমরা বাঁচার অধিকার।
দাঙ্গা লাগিয়ে করছো দেশের ক্ষতি
নেতা-মন্ত্রী আবার তাতে দিচ্ছে সম্মতি,
হিন্দু ধর্ম দাহ করে গঙ্গামুখী শ্মশানে
ইসলাম ধর্ম কবরে দাফন করে সসম্মানে।
জায়গার অভাবে দেওয়া যাবে না কবর
শ্মশানে দাহ করতে হবে অক্ষের খবর,
হিন্দু মুসলমান সোমান অধিকার পাবে
কবরের জন্য জাতিকে জায়গা দিতে হবে!
রক্তের হুলি খেলছে আযব এক যন্ত্রণা
জাতির মধ্যে বিভেদ গড়ে দিচ্ছে কুমন্ত্রণা,
দুর্নীতির জাল আর বুনবে কতকাল
হিন্দু মুসলিম একসঙ্গে মেলাব তাল।
অপকর্মের বিরুদ্ধে করবো তীব্র প্রতিবাদ
শান্তি ফিরে আনবো থাকবে না বিবাদ,
সরকার গড়ছে সৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা
তাদের কারণে মুসলিম জাতির দুরবস্থা!


রচনাকালঃ- ০৪/০৯/২০১৭

বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

বর্ষা

বর্ষার পরশে মন নাচে আনন্দে
শীতল হয় প্রকৃতি বৃষ্টির ছন্দে,
হিমেল পবনে চিত্তে জাগে শিহরণ
শুনি বর্ষার অপরূপ সুরের কম্পন।
মেঘলা দিনে আদ্র ভাসে বাতাসে
অর্ণবে ফাঁপে নীর রংধনু আকাশে,
অবিরত বর্ষণে ব্যাকুল হয় প্রাণ
প্রকৃতি ভেজা ক্ষণে দোয়েলের গান।
নীরদে ঢাকে শশী নিলিমার ভেতর
অনিলের স্পর্শে ভরে যাই অন্তর,
বারিধারা নভ আর ধীর প্রকৃতি
অঝরে ঝরা বর্ষার রম্য আকৃতি।
ছলছল শব্দ করে আপগার কলতান
বৃষ্টির ধারা নিয়ে আসে বান,
সবুজ বিপিণের পথ চলছে বেঁকে
অনুপম দৃশ্য দেখি দূর থেকে।


রচনাকালঃ- ২৮/০৮/২০১৭

সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

বিরহ

ব্যাকুল হৃদয় ভাবনায় মগ্ন
ফিরে দেখলো না কেউ,
প্রেমে বিভোর হয়েছে মন
অন্তরে বহে বেদনার ঢেউ!
দিশাহীন ভূমির মুক্ত অঙ্গনে
খুঁজি না পাওয়া প্রেমের ঠিকানা,
মায়াবী ছলনায় হারিয়ে যাই
বেড়ে ওঠে দিলের যাতনা!
প্রেয়সী যেন হয়েছে পাষাণ
আমার রোদনে আরশ কাঁপে!
সে পথে আছে শুধুই কাটা
আঘাত দেয় প্রতি ধাপে।
চিত্তে কথা জমে থাকে
শোনাবার মানুষ কোথায় পাই,
জ্বলছে বুকে বিরহের অনল
এবার প্রেয়সীর সন্ধান চাই।


রচনাকালঃ- ২৫/০৮/২০১৭

বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

ডাকবাবু

অটল চরিতে করি সংগ্রাম
ছুটি চলনে নেই আরাম,
নিপট চলচিত্র অতিশয় দুরূহ
থাকুক না সে যতই বিরহ!
কত শহর কত নগর
দূর্লব মার্গে চলি দ্বিপ্রহর,
গ্রথনের বিরতি নেই তবু
আমি এক ডাকবাবু।

পিঠের উর্ধ্বে লিপির বস্তা
অতি মূল্যের নইতো শস্তা,
গহ্বরে থাকে খোঁয়াড় গোজা
আরম্ভ করি ব্যক্তিকে খোঁজা।
পত্রের মাঝে লুকিয়ে খবর
পুলক আর ব্যসন জবর!
কষ্টের অস্তিত্ব যেন জবুখবু
আমি এক ডাকবাবু।

যাই শহর থেকে গ্রাম
বর্ত্মের দুপাশে দেখি আমজাম,
সবার আগলে নাড়ি কড়া
চিঠি না দিয়ে হয় না নড়া।
করিয়ে নিই তাদের সাক্ষর
অতশত বুঝি না আমি নিরক্ষর,
দুপুরের বিশ্রাম টাঙিয়ে তাঁবু
আমি এক ডাকবাবু।

অবসন্ন গতরে ফিরি সদনে
কল্মষ লেগে থাকে বদনে,
নিশির ঘোরে জেগে থাকি
সুপ্তি দিয়ে যাই ফাঁকি!
মৃত্তিকার কুটিরে জ্বলে হ্যারিকেন
বিনিদ্র নক্তে বাজে সাইরেন,
বিষাদের তুফান হয় না কাবু
আমি এক ডাকবাবু।


রচনাকালঃ- ২২/০৮/২০১৭

মানবের ছদ্মবেশ

নিশি ঘনিয়ে এসেছে ত্রাসের চাদর মুড়িয়ে!
জাজী ঘেরা পলিময় উর্বর ক্ষিতির দেশে।
জীবনচক্র ধরে রাখতে উন্মেষ নেয় উর্বীরূহ,
ক্ষুধার দহনে কাতর হয়েছে আপন স্বদেশ!
আমি পতগের রূপে জন্মেছি মানবের ছদ্মবেশে,
বিকৃত জঞ্জলে ভরা দূষিত সভ্যতার মাঝে।

বহুবার উর্বী তচনচ হয়েছে প্রকৃতির প্রলয়ে,
তবুও আমি একেবারে লুপ্ত হয়ে যাইনি।
প্রতিটি প্রহরে সংগ্রাম করেছি পিশাচের তরে!
ফুটপাতের নিয়ন কিরণে কেটেছে কত রাত্রি,
আমি নিবিষ্ট হয়েছি অসৎ জনতার ভিড়ে!
উগ্র পশুর বন্ধনী মেরেছে বক্ষে ছোবল!

বিলাপ মর্তে বিষাদের চিত্র ভাসে নয়নে!
কোথাও খুঁজে পাই না একটু বাঁচার আস্থানা।
শত ক্লেশ চিত্তে নিয়ে কেটেছে পরমায়ু!
লাথি-গুঁতা খেয়ে লাঞ্ছিত হয়েছি নিরন্তর!
এভাবে কতকাল ধরে রাখবো আমার অস্তিত্ব?
এই নিকরুণ অবিনয়ী কিছু প্রজার মাঝে।



রচনাকালঃ- ১৯/০৮/২০১৭

রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭

ক্লান্ত

পড়ে আছে কালের তমসায় ঝরা প্রসূন,
পিরিতের প্রতীক্ষায় কেটে যাই কত হেমন্ত!
তবুও ছুটি একাকীর সাথে খেলার প্রমাদে,
জগদ্বাসীর বক্ষে ক্লান্ত হয়ে আসে দেহযষ্টি।
জানি না কেন অস্ত গেছে চরিতের ভাস্কর!
নবোদ্ভিন্ন মেজাজ হারিয়ে যাই শয়নের দেশে।

গগনপ্রান্তের নভশ্চর দেখে কাটে কতো যামিনী,
খুঁজে ফিরি এক চপল ললনার ঠিকানা।
তাকে কোন দিন নিজের করে পাইনি!
শুধু দেখি অসীম সৌন্দর্যে গড়া অহমিকা।
এমন লুকোচুরি ক্রীড়ায় উন্মাদ হয় রজনী,
চির শূন্যতার বেড়াজালে আবদ্ধ দঙ্কট মার্গ!

ওগো মোর প্রণয়ীনী আমি যে বড্ড পরিশ্রান্ত,
আর কতকাল এই নিশি কাটবে নিঃসঙ্গ?
পাষাণের অচল জোমে ভিজে যাই সর্বাঙ্গ!
আকালের ঝড়ে অশান্ত হয়ে ওঠে হৃদাকাশ!
প্রেয়সী দাওনা তোমার কোমল পাণির স্পর্শ,
তারই আভা পেলে চিরতরে হব নিস্তব্ধ।



রচনাকালঃ- ১৭/০৮/২০১৭

সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০১৭

ইচ্ছে ছিল

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
দল বেঁধে সিপাহী বিদ্রোহ করার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
মৃত্তিকার বুক চিরে বেরিয়ে আসার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
বীরের মত পলাশীর যুদ্ধ করার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
ক্রীতদাসের শিকল উপড়ে ফেলার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
সহস্র প্রাণ বলীর প্রতিশোধ নেবার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
যুদ্ধে দেশের জন্য প্রাণ দেবার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
নজরুলের দ্রোহে আগুন জ্বালাবার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
সুকান্তের মত জীবন সংগ্রাম করার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
সবুজ ক্ষেতে সোনর ফসল ফলাবার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
অহিংসা দিয়ে দেশ স্বাধীন করার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
প্রভাতে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার।

ইচ্ছে ছিল হাতে পতাকা ধরে,
সীমান্তে দাঁড়িয়ে দেশ রক্ষা করার।



রচনাকালঃ- ১৪/০৮/২০১৭

শুক্রবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৭

নিয়তি

আমি ত্রিভুবনের অধিপতি ঈশ্বরের গড়া অদৃষ্ট,
ভূলোক দ্যুলোক গোলকের সাথে করি খেলা।
সবার ললাটে নিজ হস্তে লিখি ভাগ্যলিপি,
আসলে আমার নেই কোন গোত্রের চিহ্ন।
অপ্রকট খেয়াপথে চলি মানবতার সূত্র ধরে,
আমি আজরাঈলের মত থাকি চির দুর্দম!

ভুলেও কখনো করি না কারো সাথে মিত্রতা,
আমি দুর্বিনীতের বিকারকে হই সদা উত্তীর্ণ।
অচলার বক্ষে মহা-প্রলয় ঘটিয়ে করি নিকুচি!
আমার সূক্ষ্ম প্রহারেও হয় না কোন স্তনন।
ন্যায়ের কুহরে আহ্বান করে গড়ি অস্তিত্ব,
বৈভবের হুকুম পেলেই হতে পারি নৃশংস!

প্রত্যহ এসে তোমাদের সাথে করি আলিঙ্গন,
আমি ক্ষৌণীর মৃত্তিকায় এক নিপট অভিশাপ!
সকলের দুয়ারে প্রদর্শন করি বিলুপ্ত চিত্র,
নিমেষে করে দিতে পারি উর্বীকে উন্মথন!
জীবনের পথে চলতে চিনে নিও আমায়,
যেভাবে তোমরা চিনতে পারো অভ্রের ঋক্ষ।

রঙিন অচলার মানব যেন বড়ই স্বার্থপর,
কেউ এসে সাজায় সর্বত্র সুখের নিবাস।
কেউ এসে জ্বালিয়ে ছারখার করে যাই!
আমি তাদেরই সাথে মিলনে হই সমবেত।
আমার হুঙ্কারে কেঁপে ওঠে ধরণীর ভূতল!
চিনে নিও আমিই তোমাদের সেই নিয়তি।



রচনাকালঃ- ১২/০৮/২০১৭

সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৭

কোথায় আজ সেই ভগবান

কোথায় গেল আজ সেই ভগবান
তোমরা দেখেছ কি কখনো তাঁকে?
অকালে চলে যায় সহস্র প্রাণ
এ দেশ পড়েছে কালো পাঁকে।

কোথায় গেল আজ শিব জটাধারী
কোথায় সেই মহান শ্রীরামের বাণ?
কবে আসবে হয়ে ন্যায়ের কাণ্ডারী
দেশের জমিনে করবে শান্তি প্রদান।

ভারত জুড়ে বাড়ছে সাধু সন্ন্যাসী
তবু মরে কেন অসহায় কৃষক!
ভগবানে হয় যদি তারা বিশ্বাসী
তবে কেন হিন্দু-মুসলিম পৃথক!

ধূর্ত নেতা পরেছে গিরিধারী বস্ত্র
কখনো প্রতিবাদ করেনা-তো কেউ,
লড়াই লেগেছে গীতা-কোরান শাস্ত্র
কবে ফিরবে ভারতে শান্তির ঢেউ।

পাতাল ভেদ করে উঠেছে দানব
আজ কোথায় সেই চিন্ময়ী মহাকালী?
অবতার নিয়ে কবে আসবে মহামানব
কবে দিবে নিষ্প্রাণ প্রতিমা অসুর বলি।

ক্ষমতার দাপটে যারা গণহত্যা করে
তারাই আজ হয়েছে আইনের রক্ষক!
অসহায় জনতা পড়ে খাকির খপ্পরে
অসুরের মতো যেন সব ভক্ষক!

কোথায় আজ সেই দুর্গতি নাশিনী
মন্দিরে বসে আছে কেন নীরব?
কবে ঘুচবে পৃথিবীতে আঁধার যামিনী
চলছে নৈরাজ্যের দহনে সন্ত্রাসীর কলরব!

অর্থের লোভে করছে রাজনীতিতে প্রবেশ
লুটেপুটে খেয়ে তাদের বাড়ছে মেদ,
তিলে-তিলে করছে দেশকে নিঃশেষ
প্রতিপদে উর্ধগামী প্রজাদের খেদ।

কোথায় সেই তান্ত্রিক নেড়া-নেড়ি
এসে ঘোচাবে দেশের বুকে অপকর্ম,
কবে ছিড়বে রাজনীতির শিকল বেড়ি
আজ ধর্মের নামে চলছে অধর্ম!


রচনাকালঃ- ০১/১১/২০১৮

রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৭

ষোল বাই বত্রিশ

জীবন হলো আমার রসকলি
বেনারসী মিঠা পানের মত,
আহা যৌবনের উত্তালে এখন
দিবানিশি হাবুডুবু খায় কত।
স্কুল জীবন পার করেই
তারপর গেলাম বড় কলেজে,
অবুঝ মনে নানারকম উল্টো
বুদ্ধি আসে আউট নলেজে।
পড়াশোনা তো নষ্ট হলো
আরাম আয়েশ গেল লাটে,
প্রেমের কামনা জাগলো মনে
কোমল হৃদয় দুঃখে ফাটে।
কলেজের সেই ক্যাম্পাসে বসে
অবাধে কত চলতো আড্ডাবাজি,
পড়াশোনা তো ঢপের চপ
তাই শুধু মারতাম ফাঁকিবাজি।
কোন কিছুর অভাব ছিল না
করেছি নারীর সাথে প্রেম,
সফল হতে পারিনি আজও
শূন্য রয়ে গেল অন্তরের ফ্রেম।
কলেজ জীবন শেষ করে
ভাগ্যে নেমে এলো দুরাশা,
সংসার চালানোর জন্যে তখন
শুরু করলাম নতুন ব্যাবসা।
বত্রিশ বছর বয়স হলো
ছিলাম অনেক পারিবারিক চাপে,
আমার রূপের গ্লেজ নষ্ট
তেমনি হচ্ছিল ধাপে-ধাপে।
বন্ধুরা দেখলে বলতো আমায়
কবে করবে তুমি বিয়ে,
সুখের সংসার বাঁধবে কবে
সঙ্গে অর্ধাঙ্গীনি কে নিয়ে।
এদিক সেদিক খুঁজতাম কত
বিয়ে করবার জন্য নারী,
বিয়ের সম্বন্ধ ভাঙ্গলো যখন
দুটি নয়ন থেকে ঝরলো বারি।
ঘটক মশাই আসলেন বাড়ি
বিয়ের সমন্ধ পাকা করে,
এইবার বিয়ে না হলে
বোধহয় আমি যাব মরে।
মেয়ে দেখতে গেলাম আমরা
সকল বন্ধু-বান্ধব মিলে,
সফল হবে জীবন আমার
সে স্বামী রূপে মেনে নিলে।
যখন সামনে আসলো আহা
কী সুন্দর তার রূপের জাদু,
ষোল বয়সী কিশোরী যেন
হবে অসীম সাধের বধু।
দুজন দুজনকে পছন্দ করে
দিলাম শোনার আংটি পরিয়ে,
ঘোর অন্ধকার কাটলো এবার
পাকা হলো আমার বিয়ে।
ষোল বাই বত্রিশের ফরমোলা
তখন পূর্ণ হলো অবশেষে,
বিয়ে করতে গেলাম আমি
সেজে জামাই বাবুর বেশে।
সোনার টুকরো স্ত্রী আমার
নাম হলো তার মউ,
লোকে বলে আমায় দেখে
বুড়ো খোকার কচি বউ।


রচনাকালঃ- ০৮/০৮/২০১৭

বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০১৭

ঘুম নেই

ঘুম নেই—ঘুম নেই
নিগ্রো কৃষ্ণাভ মগ্ন রাতে,
শূন্য রাজপথে অবিরত হাঁটি
অগ্নির মশাল জ্বেলে হাতে।
মানুষের লহুতে স্নান করে
তোরা করিস সদা পরিহাস,
চির বিষাক্ত ভুবনের বুকে
আমি থাকবো না আর কৃতদাস!

ঘুম নেই—ঘুম নেই
রোদনের সুর উঠেছে রাতে,
শোকে কাতর হয়েছে প্রজা
অসহায় নর-নারীর নিপাতে!
নির্মম জুলুমে জর্জরিত জনতা
তাই হয়ে উঠেছি অস্থির,
চুরমার করবো তোদের সত্তা
নত হবে না উন্নত শির!

ঘুম নেই—ঘুম নেই
অনলে কলেবর পুড়ছে রাতে,
দেশকে তোদের নড়ী থেকে
মুক্ত করবো আগামীর প্রভাতে।
বিশ্বের অন্তরীক্ষ ভেদ করে
হয়েছি রুদ্রের মত নৃশংস!
ভয়ংকর তীব্র প্রলয় এনে
তোদের করবো এবার ধ্বংস!

ঘুম নেই—ঘুম নেই
খড়্গের ধ্বনি শুনি রাতে,
অসু গেল কত মানুষের
তোদের প্রখর অস্ত্রের আঘাতে!
দেশে ধর্মান্তরের জাল বুনে
মন্দির মসজিদে করিস বিভেদ,
সড়যন্ত্রের ফাঁদে লাগে দাঙ্গা
বেশুমার প্রজার করিস শিরশ্ছেদ!

ঘুম নেই—ঘুম নেই
বিদ্রোহী উন্মাদ নিঝুম রাতে,
নীল বিষধর ভুজগ হয়ে
তোদের দংশাব তীক্ষ্ণ দাঁতে!
প্রতিশোধ নেব প্রাণ বলির
হয়েছি শূন্য দ্যুলকের ঝঞ্ঝা,
করিনাকো আর তোদের ভয়
ধরেছি দেহান্তের সাথে পাঞ্জা!

ঘুম নেই—ঘুম নেই
লাল রূধির মাখা রাতে,
তচনচ করবো অক্ষের তখ্ত
জীবন যাই যাক তাতে!
যতক্ষণ থাকবে চিত্তে মনোবল
যুদ্ধ করেও হব না ক্লান্ত!
আসুক না যতই বাঁধা বিপত্তি
তোদের নিধনেই হব শান্ত।



রচনাকালঃ- ০৭/০৮/২০১৭

বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০১৭

মেঘ বালিকা

ব্যস্ত জনবহুল শহরের কোলাহল ছেড়ে,
শূন্য মনে আমি যেতে চায় দূর-বহুদূর।

যেখানে থাকবে শুধু মেঘ বালিকার অস্তিত্ব,
শান্ত প্রকৃতির মাঝে থাকবে অটুট নীরবতা।

কলাতিপাত হলেই চলে যাব তার কাছে,
মনের গভীরে জমেছে কিছু অতৃপ্ত কামনা।

বৃষ্টি খেয়ার পাল উড়িয়ে সিক্ত করবে আমায়,
প্রান্তর ভেজা কান্নার সুরে হারিয়ে যাব।

তার হদয়ে লুকিয়ে আছে সহস্র অভিমান,
দুটি নয়ন থেকে ঝরে শ্রাবণ নদীর বৃষ্টি।

দেখেছি চক্রবালের শেষ খাঁড়িতে সেই গৃহ,
পাব যেদিন শূন্যে নতুন করে তার দেখা।

সেদিন অথই প্রেমে নিষিক্ত অঙ্গ হবে পুলকিত,
শীতল বর্ষণে ধুয়ে মুছে যাবে চিত্তের পীড়া।

সফলতার চূড়ায় পৌঁছবে অসম্পূর্ণ প্রেম,
হিমেল পরশে সৃষ্টির মাঝে যাব হারিয়ে।

সেই কবে থেকে তার কাছে চেয়েছি যেতে,
নিঃসঙ্গ জীবনে মেঘ বালিকার বড্ড প্রয়োজন।


রচনাকালঃ- ০৬/০৮/২০১৭

সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০১৭

প্রণয়ের প্রদীপ

ব্যস্ত নিগম ভিড়ের মাঝে
খোঁজো কেন মোর অস্তিত্ব?
দুরূহ পথ অতিক্রম করে
ক্লান্ত তনু এখন একাকীকত্ব।
বিধির প্রথা খণ্ডাবে না জানি
নিয়তির সাথে যাবে খেলে!
কাঁদো কেন? আসবো আমি
প্রণয়ের শীতল প্রদীপ জ্বেলে।

কেতনের খোঁজে এসেছি আমি
এক ভিন্ন অর্বচীন দেশে,
অজস্র ভালবাসা উপহার নিয়ে
ওই অঙ্গনে ফিরবো অবশেষে।
তোমার হৃদয় বুঝি রোদনমগ্ন
দাও আর্তিকে ছুড়ে ফেলে!
চিন্তা কীসের? আসবো আমি
প্রণয়ের শীতল প্রদীপ জ্বেলে।

কবে আসবে শুভ দিন
সেই আশায় গুনি প্রহর,
বিনিদ্র রজনী কাটে নিঃসঙ্গ
আঁখিতে জমে নোনা লহর!
জানি মোদের আসঙ্গ হবে
বেদনার মিহির অস্ত গেলে,
উদ্দীপ্ত হয়ো না, আসবো আমি
প্রণয়ের শীতল প্রদীপ জ্বেলে।

আবার ফুটবে নীল শতদল
দ্যুলকে উঠবে সোনালি চাঁদ,
মুছে যাবে মনের আকুলতা
মোর আগমনে হবে উন্মাদ।
তুমি হীন কাটে না এ-জীবন
সুখের ঠিকানা খুঁজে পেলে,
ভেবো না আর, আসবো আমি
প্রণয়ের শীতল প্রদীপ জ্বেলে।

দূরত্বের পীড়ন সইবো কী করে
বিষাদে অন্তর খায় কুরে!
এবার তোমায় দিলাম কথা
কখনো যাব না ছেড়ে দূরে।
আসবো ফিরে তোমার দ্বারে
অভিমানে যেন দিও না ঠেলে!
প্রতীক্ষায় থেক, আসবো আমি
প্রণয়ের শীতল প্রদীপ জ্বেলে।



রচনাকালঃ- ০৫/০৮/২০১৭

রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৭

ক্ষণিকের প্রেম

অঞ্জলি, চৈত্রের গ্রীষ্মে রোদেলা দিনের খরতাপে
বিরহের আঘাতে দিশাহারা তৃষ্ণার্ত পথিকের মত,
নীল গগনে অম্বুদের সাথে উন্মুক্ত পথে হেঁটে
অবশেষে রজনীর ক্লান্ত মৃগাঙ্ক হয়ে গেছি আমি!
পশ্চিম অম্বরে সন্ধ্যাতারা মত রয়ে গেলে দূরে
প্রত্যহ অধীর আগ্রহে চেয়ে থাকি তোমার পানে,
যখন ধীরে ধীরে যামিনীর নিরংশু ঘনিয়ে আসে
প্রেম করে দুটি আত্মা গিয়ে মিলিত হয় একত্রে।
তখন শান্ত মনে শীতল প্রদীপের কিরণ জ্বেলে
তুমি মিশে থাকো ওই দূর প্রান্তে চন্দ্রির নীলে,
চিন্তনের বোতলে স্মৃতির মদিরায় মাতাল হয়ে
দিবানিশি যুদ্ধের ভিড়ে খুঁজে ফিরি তোমার অস্তিত্ব!
শুধু বিষন্নতার পারাবারে ভাসে আমার তরণী
পাটাতলে পুষ্পের মত তোমার বিগ্রহের সুঘ্রাণ,
সঙ্গিহীন নক্তে অনল নিয়ে খেলতে খেলতে
তারপর ক্লান্ত হয়ে আসে রক্তক্ষরণ অবয়ব!
চিত্তের গভীরে জমে থাকা তুষার গলে ধীরে ধীরে
তবুও শত কলঙ্ক বুকে নিয়ে আমি হাঁটি একাকী!
আলোহীন দ্যুলক থেকে ভুবনে অবতীর্ণ হয়ে
ক্ষণিকের কামজ সুখ দিয়ে আবার চলে যাও দূরে!
দেখি আমার শান্ত ছায়ায় তুমি এক ঘুমন্ত রমণী
তবু জীবনের চলচিত্র গাঢ় শ্যামে আছে ডুবে,
অঞ্জলি, এ-আঁখি জ্যোৎস্নার প্রভায় জেগে থাকে
শুধু তোমার ক্ষণিকের প্রেম পাওয়ার প্রত্যাশায়।


রচনাকালঃ- ০৪/০৮/২০১৭

শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০১৭

ত্রাস

ভারতবর্ষের বিহার, দিল্লী, উত্তরপ্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক! ভূতেরা নাকি বন্ধ ঘরে ঢুকে মেয়েদের মাথা থেকে চুল কেটে নিয়ে যাচ্ছে! এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কবিতাটি রচিত।
------------------------------


ভূখণ্ডের বুকে দেখা দিলো
ধারাবাহিক এক নহলী সঙ্কট,
ত্রাসে দিন কাটছে অবলার
রাক্ষসের উপদ্রব বাড়ছে বিকট!

দানবের কাহিনী গল্পে থাকে
নিপটে নেই তার ভব,
এ-ছায়ামূর্তি আবার কেমন হবে
মানবরূপি সেজে আছে সব।

সমাজের বক্ষে পুরুষ নয়
পিশাচের সংকল্প হলো দাসী,
এমন কু'কর্মের কৌশল দেখে
তখন নীরবে পাই হাসি।

গভীর ক্ষণদায় সবার কুঠীতে
ঢুকে কাটছে মানবীর অলক!
হতাশ চেতন এ-কি হলো
যখন খুলছে আঁখির পলক!

নিজের চিত্র দেখে স্তম্ভিত
কোথায় গেল তার কেশ!
আকৃতি হলো নরের মত
শিরে আঁশ নেই অবশেষ।

বিরহ চিত্ত রোদনে মগ্ন
উড়ে গেল শীর্ষের চুল!
উদ্বেগের প্রকোপে বিভ্রান্ত হয়ে
খুঁজে পাই না কোন কূল!

লৌহ কপাট বন্ধ থাকলেও
কী করে ঢুকছে ওই ভূত,
ধরণ যেন ছায়ার মত
তাদের সব ষড়্যন্ত্র নিখুঁত।

রমণীর বদনে আশঙ্কার ছবি
করতে চায় অসুরকে বদ!
তন্ত্র মন্ত্র বিদ্যার সাথে
দূর করছে মহা বিপদ।

অদৃশ্য মহাকায় শ্লোগান দেয়
রাখবে না অঙ্গনার ঘটে কুন্তল!
চিকুর দিয়েই সাজিয়ে তুলবে
আগামী সবুজ ধরণীর ভূতল।



রচনাকালঃ- ০৩/০৮/২০১৭

শুক্রবার, ৪ আগস্ট, ২০১৭

প্রতীক্ষা

শুধু যদি একবার এসে বলো তুমি আমার হবে
এভাবে নিত্যতা তোমার জন্যে করবো প্রতীক্ষা!
যদি ছোট্ট কুটীর দহনে পুড়ে হয়ে যায় শ্মশান
প্রাণ উড়ে চলে যায় কখনো যদি অঙ্গ ছেড়ে!
শূন্য ধড়ে জমে থাকবে মনের সব আকুলতা
এ-ভুবনে তোমায় ফিরে পাব আমি হাজার বছর পরে,
কত অসীম ভালবাসে তোমায় এই আবেগী অন্তর
নিমগ্ন প্রদোষে একাকী নীরবে বসে শুধু কেঁদে যায়!
শুধু এক পলকের জন্য তোমায় এই বুকে পেতে
রয়েছে মেতে বিচলিত দেহের দীর্ঘে সতত অন্তর,
ঊর্মির মত ক্ষণে ক্ষণে উচলিয়ে ওঠে  ভয়ংকর আঁধি
নিত্য বাজে হৃদয়ের মাঝে প্রণয়ের চির কলতান।
শত ক্লেশ নিয়ে জীবনে উড়ন্ত সমীর হয় নিথর
একাকীকত্ব ভর করে তোমার ব্যাকুল মনের টানে,
ক্ষণে ক্ষণে নিজে থেকেই হয়ে যায় দিশাহারা
পথ ভুলে যায় তোমার ওই অবুঝ প্রেমের মোহে।
কবে ওগো আসবে তুমি শ্রাবণ বারিধারার সুরে
কাছে টেনে শীতল করে দেবে আমার তপ্ত অসু!
এই উমেদ করেই চলে গেল জীবনের পাঁচটা বছর
তোমায় না কাছে পেয়ে বিরহের জালে আমি বন্দী!
এখনো এঁদো রজনীতে ঝলমল করে পূর্ণিমার শশী
ছলকে ওঠে দু-নয়নে অজস্র কান্নার নোনা অম্বু!
শুধু তোমার জন্য প্রহর গুনি সড়কের দিকে চেয়ে
প্রেমের প্রদীপ জ্বেলে মনের নিবিড় অন্ধকারে।
এই বিষন্ন দিনগুলি গড়ে তোলে ক্রমশ সাম্রাজ্য
হানাদারী বেদনায় একান্তে আঁখি থেকে ঝরে নীর!
আমি হলাম নিতান্ত অসহায় এক ব্যর্থ প্রেমিক
চিত্তে প্রত্যহ আঘাত হানে বারংবার মৃত্যু পীড়ন!
আমার প্রতিটা বসন্ত কাটে শুধু তোমার প্রত্যাশায়
ঘুমহীন নক্তে মস্তিষ্ক আক্রমণ করে কত দুশ্চিন্তা,
প্রতীক্ষা একদিন শেষ হবে তাই আজ আমারো বিশ্বাস
তবু যেন প্রেমের বাণী করে আমার সাথে রঙ্গ।
দুঃখী মনকে শতবার বোঝায় কষ্ট নেই অস্তিত্বে
ধরণীতে খুঁজে ফিরি যদি কখনো পাই তোমার দেখা,
প্রতীক্ষায় রত থাকবো হোক না সে সহস্র বছর
খুশি হবে এ-অন্তর একবার তোমায় খুঁজে পেলে।


রচনাকালঃ- ০২/০৮/২০১৭

বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৭

আমরা ছাত্রদল

আমাদের মনে আছে উচ্ছ্বাস
বদলাব একদিন বিশ্বের ইতিহাস,
দূর করবো দুঃখীদের কষ্ট
হতে দেব না প্রাণ নষ্ট!
প্রকাশ পাবে প্রগতিশীল চেতনার
সময় এসেছে দ্রুত বিবেচনার,
আমরাই হলাম দেশের বল
তাই তো, আমরা ছাত্রদল।

আমরা দেব সহসীকতার পরিচয়
থেমে যাওয়া উদ্দেশ্য নয়,
সর্বদা সত্যি কথা বলবো
একত্রে দল বেঁধে চলবো।
করবো না কখনও জাতির বিভেদ
বাঁধা বিপত্তিকে করবো ছেদ!
আমাদের গর্জনে কাঁপবে ভূতল
উদার মন, আমরা ছাত্রদল।

শিক্ষা দীক্ষা অর্জন করে
একে অন্যের হাতটি ধরে,
যেতে হবে আঁধার ঘোঁচাতে
অসহায় পতিত মানুষকে বাঁচাতে!
আমাদের অন্তরে নেই ভয়
জীবন যুদ্ধ করবো জয়,
লক্ষ্য, সামনে এগিয়ে চল
উচ্চসুরে বলি, আমরা ছাত্রদল।

অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে
দেব সাহায্যের হাত বাড়িয়ে,
বিদ্রোহী হয়ে আনবো ক্রান্তি
ফিরে আসবে দেশে শান্তি।
তুফানের মত আমাদের শক্তি
সদা গুরুজনদের করবো ভক্তি,
কখনও করবো না কোন ছল
গর্ব করি, আমরা ছাত্রদল।

যদি করে কেউ সড়যন্ত্র
প্রতিবাদ হবে মুল মন্ত্র!
জানি সভ্যতার ভাঙবে না ধ্যান
কাজে লাগাবো অগাধ জ্ঞান।
আমাদের মাঝে থাকবে আদর্শ
সকলকে দেব অগ্রগতির পরামর্শ,
মুছবো লাঞ্ছিতদের আঁখির জল
সততার প্রতীক, আমরা ছাত্রদল।



রচনাকালঃ- ০১/০৮/২০১৭

সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০১৭

চালাও অভিযান

হাতে হাত রেখে সবাই এগিয়ে চলো
অর্জন করো শক্তি,
দৃঢ় সংকল্পে তোমরা লড়াই করলে
খুঁজে পাবে মুক্তি!

আনো চাণক্যের নীতি আদিধীরার বলিদান
চন্দ্রগুপ্তের মতো শিকার,
অশোকের মতো সাহসী যোদ্ধা হয়ে
ছিনিয়ে নাও অধিকার!

তোমরা মুক্ত চির মুক্ত নও কারো কৃতদাস
ভেদাভেদে মানবেনা হার,
ধর্মের যাঁতাকলে পিষে মারা শয়তানদের
তোমরা করো মিসমার!

নেতাদের তরে গোলামী করতে
তোমরা আসোনি এই পৃথিবীতে,
দরিদ্রের সম্মুখে বাধা-বিপত্তি
ধনীদের ঘরে অঢেল সম্পত্যি;
সমাজের বুকে পীড়িত মানুষদের
আজ করতে হবে উদ্ধার।


রচনাকালঃ- ২২/১০/২০১৮

রবিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৭

নীল জ্যোৎস্না

জেগেছি ক্ষপায় নিদ্রাহীন নয়নে
চন্দ্রমার নীলে মিশেছে শতদল,
অতিক্রম করে সেই দুরূহ বর্ত্ম
ভেসেছি নীল সিন্ধুর মাঝে।

তোমার শীতল কিরণের স্পর্শে
হয়েছি যেন এক মাতাল ভ্রমর!
নিয়তির গড়া বন্ধ প্রাচীর ভেঙে
পার করেছি ওই উচু শৃঙ্গী।

তুফানি পারাবারে দেখেছি তোমায়
শুনেছি করুণ কণ্ঠে কান্নার সুর!
ছিলে তুমি সহস্র হায়ন বন্দি
আর এখন একফালি মুক্ত নিশ্বাস।

আমার চূর্ণ বিচূর্ণ চিত্তের গভীরে
বারে বারে দেখতে পাই তোমায়!
বিজন কুঞ্জের মাঝে ছিলে একাকী
বিধুর প্রভায় ভেজা অঙ্গ নিয়ে।

তুমি নীলাদ্র প্রাণের রক্তিম মাধবী
দাঁড়িয়ে আছো প্রাচীন কাল থেকে,
এখনও রক্তান্বেষী দানব আসে
প্রতি নিশিতে স্থৈয্র্যের বুক চিরে!

প্রলয়ের পথ ধরে দল বেঁধে
নির্মম ভাবে হত্যা করে যাই!
অনলে পুড়িয়ে দাহ করে অস্তিত্ব
তীক্ষ্ণ দাঁতে দংশায় গহনের লতা!

দিশাহীন অতীত এখনও ভাসে
তাদের লাল বর্ণের শোণিত মুখে!
অনেক দিন পর দেখেছি তোমায়
বিনীদ্র রজনীর জ্যোৎস্নার নীলে।

সময়ে সভ্যতার ইমারত ভাঙে
তবু তোমার শরীর মৃগাঙ্ক মাখে,
প্রাণ বলির রূধিরে স্নাত তুমি
তবু আছো একিরকম নীরব নিভৃত!



রচনাকালঃ- ৩০/০৭/২০১৭

শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০১৭

অনুভূতি

যখন আমি হারিয়ে যাব, বেদনার বৃষ্টি ঝরবে,
অস্পষ্ট হবে দৃষ্টি তোমার অশ্রু ঘিরে ধরবে-
বেদনার বৃষ্টি ঝরবে!
আমার ছবি সামনে রেখে
অধীর আগ্রহে যাবে দেখে,
চিত্তের সাগর করবে টলমল
দুনয়ন থেকে ঝরবে জল!
নীরবে রোদন করবে-
বেদনার বৃষ্টি ঝরবে!

আঁধার রাতে আমার স্মৃতি, চোখের সামনে ভাসবে,
সেই চেনা মুখটি দেখে নিথর হয়ে থাকবে-
চোখের সামনে ভাসবে!
মনে করবে আমি আছি
তোমার হৃদয়ের কাছাকাছি,
ঘুম ভাঙলে দেখবে যখন
পাশে নেই আমি তখন!
দুঃখে ভেঙে পড়বে-
বেদনার বৃষ্টি ঝরবে!

শূন্য মনে একলা বসে, হবে চিন্তায় মগ্ন,
লাল কাঁচের চুড়ি ভেঙে দুহাত করবে নগ্ন-
হবে চিন্তায় মগ্ন!
অস্থির অন্তর করবে আকুতি
জাগবে তখন কত অনুভূতি,
দাওনি প্রেম করেছ ছল
তখন পাবে তার প্রতিফল!
কম্পনে হৃৎপিণ্ড নড়বে-
বেদনার বৃষ্টি ঝরবে!

আবার বসন্তের আগমন হলে, দৃশ্য নেত্রে ফুটবে,
বিচলিত হবে মন তোমার গোরস্থানের দিকে ছুটবে-
দৃশ্য নেত্রে ফুটবে!
বাঁশপাতা ছড়ানো কবর খানি
লুটিয়ে পড়বে দিয়ে হাতছানি,
কাঁদবে তখন চিরতরে হারিয়ে
ডাকবে আমায় দুহাত বাড়িয়ে!
তিলে তিলে মরবে-
বেদনার বৃষ্টি ঝরবে!



রচনাকালঃ- ২৯/০৭/২০১৭

শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০১৭

পতিত কাঁদে

সাধারণ জনগণ যাপন করে আগাছা বস্তিতে
তাদের ললাটের ভাগ্যরেখা রয়ে গেল পতিত,
ক্ষণে ক্ষণে যেন মরে তীব্র ক্ষুধার জ্বালায়!
ধনীদের নিত্য দিন কাটে উচুতলায় স্ফুর্তির সঙ্গে।
থেকে গেল সদা অসহায়ের দুঃখের স্তূপ!
তাই তো অক্ষম হয়ে আছে বিকলাঙ্গ দূটি চরণ,
সমাজে ভোগবিলাসে জীবন কাটায় মালদার
তবুও মন থেকে মেনে নেয় না দরিদ্র ভিক্ষুকদের!
বহু কষ্টের মধ্যে গড়ে ওঠে গরিবের সংসার
কিন্তু তাদেরো যে দরকার তিল পরিমাণ সুখ,
বেনামী কেদারার লোভে মত্ত হয়ে ওঠে সবাই
তাই তো সমৃদ্ধরা সমাজের বুকে হয় দেবতা!
নিষ্ঠুর অনাচারে ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে দেশের প্রজা
ভুখের পীড়নে শহর নগরে ছড়াই নীরবতা!
দূষণের যুগে শোনা যাই পতিতদের কান্না!
সুখ হারা কামনায় বাঁচে উমদার গোলাম হয়ে।
ঘৃণা লাজ মুছে ফেলে, যে যখন বসে ঐ গদিতে
তখন জঠরাগ্নির জ্বালায় কাতর হয় রাজপথ!
কেড়ে নেয় অসহায় পতিতদের মৌলিক অধিকার
চারিধারে শুরু হয় হরতাল-দাঙ্গা বোমাবাজি!
দেশের সংবিধান ভঙ্গ হয় অক্ষের কাঠগড়ায়
প্রতি ক্ষণে পতিতদের উপর করে অবমাননা!
ফন্দিপূর্ণ ছলনায় নয়নে পরেছে কালো কাঁচ
তাই তো আইন স্তব্ধ দেখেও দ্যাখে না কিছুই।
ছল-কপট করে ধরে এনে, নির্দোষ কে দেয় সাজা!
এমনি করেই কানুন সর্বহারাদের করে বিদ্রুপ,
ইনামের লোভে অন্ধ সেজে থাকে বিধানের আঁখি
সারণীর তলাই আরাধনা চলে ঘুষ পূজার।


রচনাকালঃ- ২৮/০৭/২০১৭

বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০১৭

সুকান্তের প্রতি

আমার অনুপ্রেরণার প্রথম ধাপ এবং আমার প্রিয় কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য, এই কবিতাটি আমি তাঁকে উৎসর্গ করলাম।
--------------------------------------


দুঃখীনি জননীর কোলে জন্ম
নিয়ে ভুবনের বুকে তুমি এলে,
পরাধীন দেশে বিদ্রোহী কন্ঠে
মানব সমাজের জাগরণ ঘটালে।
অসীম জ্ঞান শিক্ষার অধিকারী
তুমি ছিলে গনমানুষের কবি,
তুলে ধরেছো অসহায়-জর্জর
মানুষের সুখ দুঃখের ছবি।
তোমার লেখা সব কবিতা
পেয়েছে দেখ কত উচ্চস্থান,
যাবতীয় শোষণ বঞ্চনার বিপক্ষে
তোমার ছিল দৃঢ় অবস্থান।
সে যুগের কিশোর কবি হয়ে
এসেছিলে তুমি ওগো সুকান্ত,
আমার হৃদয়ে বন্দী রেখেছি
তোমার প্রতি ভালবাসা অফুরন্ত।
তোমার কাছে থেকে পেয়েছি
অনেক জ্ঞান আর অনুপ্রেরণা,
পেয়েছি আমি কিশোর বয়সে
কবিতা লেখার এমন ভাবনা।
জীবনের দুরহ পথের সঙ্গী
বিরহ থাকে অটুট মিত্র!
শত রূপে শতবার আমার
অন্তরে এঁকেছি তোমার চিত্র।
কবিতা লিখেছো ছন্দের তালে
যেন নিশি পূর্ণিমার সুধাকর,
দেখিয়েছো মানব জাতিকে সঠিক
পথের দিশা হয়ে দিবাকর।
তোমার কবিতা বাংলার বুকে
সাহসী করে প্রতিটি স্তরে,
চলব আমি আগামী দিনে
কঠিন পথ অবলম্বন করে।
সবুজ মর্তের মৃত্তিকা চিরে
তারুণ্যের শক্তি দিয়ে লড়বো!
আগমন ঘটবে শুভ দিনের
আগামীতে সুন্দর বাংলা গড়বো।
দেখবে জাতি কলমের ক্ষমতা
তুলব কবিতায় প্রতিবাদী সুর!
থাকবে না আর দুঃখ কোনই
শ্রেণী ভেদাভেদ করবো দূর!
হব আমি বাংলার বীর সৈনিক
লড়াকু ভুমিকায় হব উন্মাদ!
রেহাই পাবে না দানবের দল
জালিমের বিরুদ্ধে করবো প্রতিবাদ!
ধরেছি যখন হাতে কলম
দুঃখীদের স্বার্থে কবিতা লিখব,
করেছি যখন প্রাণেে প্রতিজ্ঞা
মানব চেতনার জাগরণ ঘটাব।
বিরহ জীবনের আট প্রহরে
দেখতে পাই তোমার উপস্থিতি!
নিঃসঙ্গ রাতে নয়নে ভেসে
প্রতিক্ষণে যেন থাকো যথারীতি।
আজও এই দেশের মাটিতে
ক্ষুধিত দিন সাম্রাজ্য গড়ে!
মানব প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত হয়
সেই ভয়াবহ মৃত্যুর কবলে!
খড়ের তৈরি ছোট্ট কুটীরে
এখনও করি আমি বসবাস,
অঙ্গের প্রতিটি শিরায় শিরায়
দ্রুত ছড়াই বিষাক্ত দীর্ঘশ্বাস!
এই অবহেলিত সমাজের মাঝে
আমি হলাম দুঃখের কবি!
প্রত্যহ রাতে দুঃস্বপ্ন দেখি
ভয়ংকর মৃত্যুর সুস্পষ্ট প্রতিচ্ছবি!


রচনাকালঃ- ২৬/০৭/২০১৭

শুক্রবার, ২১ জুলাই, ২০১৭

অম্বিকা

সেই কবে শিশু কালে হাসতে দেখেছি মা-কে
শত দুঃখ পীড়নের কথা তিনি বুঝতে দেননি!
কখনও খেলতে গিয়ে কোন আঘাত পেলে
দেখেছি ওই হৃদয়ে কত মমতাময়ী আকুলতা।
আড়াল থেকে লুকিয়ে চুপি চুপি চেয়ে দেখেছি
বিছানায় শুয়ে আঁচল দিয়ে মুছতে চোখের জল!
দেখেছি তাঁর হৃদয়ের গভীরে লুকিয়ে থাকা
বেদনার আড়ালে সহস্র মমতার পরশ।
সন্তানের প্রতি জননীর ভালবাসা বুঝি এমনই
ধরণী লিখে দিলেও তুলনা হবে না এমন মাতার,
হে করুণাময়ী, হে আমার প্রাণের প্রিয় অম্বিকা-
কী করে শোধ করি আপনার মাতৃত্বের ঋণ।


রচনাকালঃ- ২০/০৭/২০১৭

মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০১৭

আক্রোশ

মানব সভ্যতার চিত্র জ্বলে ওঠে সন্ত্রস বাদের অনলে
অর্থ প্রাচুর্যের লোভে হারিয়ে ফেলে নিজেদের বিবেক,
বর্ধনাঙ্কের প্রমাদে মানুষ মানুষের হয়ে ওঠে দ্বিষৎ
অথচ জাহানে কেউই বেঁচে থাকবে না নিত্যতা।
জানিনা তবুও কেন হানাহানির খেলায় মাতে
কৃষ্ণাভ নক্তে বিবশ নর-নারীর শোণিতে করে স্নান!
অথচ ধারণ করে সমাজের বুকে নিষ্পাপ শিশুর প্রতিরূপ
অনৈতিক কার্য ঘটায় রিষের বেশে অথবা আক্রোশে!
ধবল নির্মোক বাবুদের সাথে সড়যন্ত্রের জাল বুনে
তারা একদিন দিয়েছে যাদের প্রতি মিথ্যে গ্লানি!
তাঁরাই প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন করেছে দেশ
স্বাধীনতা দিয়েছে আমাদের গর্বের সাথে বাঁচার।
এখনও গৃহ বন্দীর মধ্যে সড়যন্ত্র হয় প্রাবল্যের লোভে
অনুবলের দাপটে কত মানুষের উর্ধ্বে করে নির্যাতন!
তাদের বিরুদ্ধে কখনও যদি কেউ করে প্রতিবাদ
নিতে হয় প্রবঁচকের ফাঁদে পড়ে মিথ্যে কদুক্তি।
অবশেষে সেই নিরোধক মানব করে নিপাত বরণ
এভাবেই খেলে তারা বিকৃত অক্ষের ক্রীড়া!
অগণিত শবের উপর অধমাঙ্গ রেখে এগিয়ে চলে
রূধির স্রোতে ভেসে চলে কূটনীতির কল্পী তরী!
এ চিত্র দেখে মনে হয় যেন চির অভিশপ্ত দানব
যারা অবিরত নির্দ্বিধায় নিরবলম্ব মানুষকে করে খুন!
হনন করে নর নারী শিশু বৃদ্ধ সহ বিশ্ব মানবতার
অথচ বিশ্ব বিবেক নির্বাক হয়ে দেখে শুধু রঙ্গ!
দেশের বুকে মানুষের দিন কাটে পঁচত্বের বিলম্বে
চাহনির অগোচরে ঘুরে বেড়াই কত হিংস্র পশু!
তবুও তারা আইনের চোখে জঙ্গী নয় সন্ত্রাসী নয়
অহা সবাই বলে তারা নাকি সততার প্রতীক!


রচনাকালঃ-১৮/০৭/২০১৭

রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৭

রঙবাহারি শীত

নিশির ঝরা শিশির হাসে
ওই সবুজ ধানের শীষে,
মৃদু রোদের পরশ মেখে
হিমেল বায়ু যায় মিশে।

শিশির বৃষ্টির প্রতিটি কণা
প্রান্তের সবুজ ঘাসে ঝরে,
ধারণ করে মুক্তার রূপ
দেখে হৃদয় পাগল করে।

চারিদিকে বহে শীতল অনিল
উন্মাদ অঙ্গে জাগায় শিহরণ,
সর্ষের ক্ষেতে ছুটে এসে
ভ্রমর করে মধু আহরণ।

গ্রামের কৃষক মাঠে যায়
দূর্বা ঘাস মাড়িয়ে ভোরে,
ঠান্ডা খেজুর রস নিয়ে
আসে ঘন কুয়াশার ঘোরে।

তৈরি হয় খেজুর গুড়
আর কেউ বানায় পিঠা,
নতুন খেজুর গুড়ের পাটালি
খেতে বড়ই লাগে মিঠা।

প্রতি বছর পৌষ মাস
যেন নিয়মিত আসে ফিরে,
হাড় কাঁপানো শীত পড়ে
কুয়াশা রাখে ধরাকে ঘিরে।

উড়ে এসে রঙিন প্রজাপতি
ডানা মেলে বসে গাঁদা ফুলে,
হিমেল পবনে ডালিয়ার সুবাস
প্রকৃতির রূপ ধরে তুলে।

ঘন বিপিণে শকুন্তের ঝাঁক
গেয়ে যায় সুমধুর গীত,
প্রতি ক্ষণে বহে গন্ধবহ
মনে হয় রঙবাহারি শীত।


রচনাকালঃ- ১৬/০৭/২০১৭

হারানো স্মৃতি

এই গোলকধাঁধা বিষন্ন ভুবনে দেখি মিথ্যে স্বপ্ন
তাকে আঁকড়ে ধরে আছে কিছু অজানা কামনা,
বেঁচে থাকার জন্য নেই আমার কোন আশ্রয়
প্রতিক্ষণে ক্লান্ত কলেবর নিয়ে খুঁজি অন্তহিত ঠিকানা!
পরিচয়হীন ভাবে জীবন কাটানো যে বড় কষ্টের
তাই জনগণের দলের মাঝে খুঁজে ফিরি গন্তব্য!
কে আমি? আসলে কী আমার ধ্রুব পরিচয়?
কাকে খুঁজে ফিরি ব্যস্ত মানবের ভীড়ের মাঝে!

জানিনা কেন মনে পড়ে না আগের কাটানো দিনগুলি
যেন মস্তিষ্ক থেকে মুছে গেছে জমে থাকা স্মৃতি,
শুধু মনে পড়ে একটি ভয়ংকর পথ দুর্বিপাক
তারপর নিজেকে দেখতে পাই হাসপাতালের বেডে!
ডাক্তার বলে আমি নাকি হারিয়ে ফেলেছি স্মৃতিশক্তি
তখন কাঁচ ভাঙার মত হৃদয় ফেটে হয় চুরমার!
কে আমি? তাহলে আজ কোথায় আমার অভিজন?
কাকে খুঁজে ফিরি এই অচেনা শহরে ভীড়ের মাঝে!

এখন বিষধর ভুজঙ্গের মত দংশন করে প্রতি চকিত
যেন চব্বিশ বছর বয়সী নব তরুণের উদ্ভব হলো,
দিনের শেষে ক্লান্ত দেহ নিয়ে ফিরে আসি
চপলার কিরণে উদ্ভাসিত সেই পথের ফুটপাতে।
অনিদ্রা নয়নে জেগে থাকি অস্তিত্বের প্রত্যাশায়
রজনীর দ্যুলকে চেয়ে দেখি চন্দ্র তারার খেলা,
কে আমি? কী করে ফিরে পাব সেই হারানো স্মৃতি
কাকে খুঁজে ফিরি একাকী নির্জন ত্রিযামার মাঝে!

ক্ষত বিক্ষত অঙ্গ নিয়ে কল্পনায় কত ছবি আঁকি
হয়তো শিশুকালে পেয়েছি জননীর মমতাময়ী আদর,
বড় হয়েছি পিতার স্নেহ আর অফুরন্ত ভালবাসা নিয়ে
হয়তো তারাও আমাকে একিভাবে প্রতিক্ষণে খোঁজে।
আজও শুনতে পাই প্রতীক্ষায় রত প্রেয়সীর ডাক
জানিনা আবার কবে ফিরে পাব হারানো স্মৃতি!
কে আমি? কোথায় গেলে খুঁজে পাব লুপ্ত অস্তিত্ব?
কাকে খুঁজে ফিরি নীরব মনে দিশাহীন পথের মাঝে!


রচনাকালঃ- ১৫/০৭/২০১৭

বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৭

তুমি আর আমি

তুমি উত্তাল গভীর অম্বুধি
আমি হতে চায় তার নদী,
বিরাম হীন নীরের স্রোতে
অবিরত বইবো নিরবধি।

তুমি প্রকৃতির সৃষ্টি মহীধর
আমি হতে চায় তার ঝর্ণা,
সব বেদনা ধুয়ে মুছে দেবো 
ফিরিয়ে আনবো সুখের বন্যা।

তুমি গোধূলি লগ্নের অভ্র
আমি হতে চায় তার নীল,
অঙ্গে মিশে রবো এভাবে
থাকবে মোদের অনন্ত মিল।

তুমি শ্রাবণ বর্ষার জলমুক্
আমি হতে চায় তার বৃষ্টি,
শ্রাবণের বারিধারায় বর্ষিত হয়ে
করবো কিছু অনুভূতির সৃষ্টি।

তুমি এই গ্রামের ঝিল
আমি হতে চায় তার শতদল,
সকল কবি মোদের নিয়ে
কবিতা লিখে যাবে অবিরল।

তুমি যখন গাইবে গান
আমি হতে চায় তার সুর,
কোকিলের কন্ঠে সুরের বর্ষণ
যেমন শুনতে লাগে সুমধুর।

তুমি ওই খগোলের শশাঙ্ক
আমি হতে চায় তার তারা,
চাঁদনী দীপ্তির পরশ পেয়ে
তামসী হয়ে যাবে দিশেহারা।

তুমি প্রগাঢ় কালো রজনী
আমি হতে চায় তার স্বপ্ন,
হৃদয়ের নিবিড়ে লুকনো প্রেমকে
আজীবন করে যাব যত্ন।

তুমি প্রবাহ তরঙ্গিনীর ঊর্মি
আমি হতে চায় তার কূল,
আমার কাছে আসবে ছুটে
কখনো হবে না তাতে ভুল।

তুমি বসন্ত ঋতুর পুষ্প
আমি হতে চায় তার সুবাস,
দুজন মিলে প্রণয়ের আবেগে
গড়ে তুলবো সুখের নিবাস।


রচনাকালঃ- ১২/০৭/২০১৭

দুর্নীতিবাজ

মোদের দেশের নেতা মন্ত্রী দেখায় কত দাপট
অবাদে দুর্নীতি চালিয়ে যায় করে ছল কপট,
এম-পি মন্ত্রী হয় তারা পেয়ে জনতার সম্মতি
শৈরাচারী শাসনের ফলে হয় দেশের দুর্গতি।
স্বাধীনতার সত্তর বছর পরেও উন্নয়ন নেই দেশে
দরিদ্র মানুষের টাকা লুটে পাচার করে বিদেশে,
মনোবল শক্ত করে নেতা নেত্রীরা হয় সঙ্গবদ্ধ
তীব্র প্রতিবাদ সৃষ্টি করবো মোরা হয়ে জোটবদ্ধ।
কিছু রাজনীতিবিদ লুকিয়ে আছে পন্ডিত শিয়াল
নির্দ্বিধায় তারা সৃষ্টি করে দুর্নীতির বেড়াজাল,
মানুষের রক্ত শোষণ করে হয় রাজনৈতিক নেতা
এত সহজে যায় কী জনগণের মন জেতা?
সাদা রঙ শান্তির প্রতীক সেটা তারা বোঝে না
সাদা বস্ত্র পরিধান করে ভারতীয় সংবিধান মানে না,
আইন ব্যাবস্থাকে প্রতি মুহূর্তে লাগাই নিজেদের কাজে
পুলিশের ঘেরাটোপে দুর্নীতি করে এসব কী সাজে?
মানুষ আইনের দ্বারস্থ হয় মেলেনা সঠিক বিচার
দেশের ভক্ষক রক্ষাকর্তারা নির্দ্বিধায় চালাই অত্যাচার!
ভোগবিলাসী মন্ত্রীরা ঘুরে বেড়ায় এ-সি কারে
দরিদ্র জনগণ ভিখারির মত যায় সবার দ্বারে!
অসহায় মানুষের চিন্তাধারা নেই তাদের মাথায়
কবে উঠবে মোদের মান বি-পি-এলের পাতায়?
বেকার যুবক আছে কত কাজের আশায় মরে
দিন ফুরালেও হাঁড়ি চড়েনা দরিদ্রদের ঘরে!
কত মানুষ আছে অবহেলিত তাদের কথা কী ভাবে
পাঁচ বছর হলে পরেই আবার ভোট চাইতে যাবে,
সহজ সরল জনগণকে দেয় মিথ্যা প্রতিশ্রুতি
ভোট পেরলেই সব ভুলে যায় হয়না অনুভূতি।
ভুলে যায় কেন তারা জনগণ তাদের ভগবান
ভোটের মোহর লাগিয়ে বাড়িয়ে দেয় মান,
সব সুব্যাবস্থা দেয় সরকার তবুও খায় ঘুষ
দেশ ও জাতির শত্রু হয় কেন ফিরেনা তাদের হুশ।
মনুষত্ব জ্ঞান বিবেক বলে থাকতো যদি কিছু
দেশ সেবক হয়েও তারা ছুটতো না দুর্নীতির পিছু,
আর কতকাল চলবে এভাবে অনুশোচনা জাগবে কবে
দেশ ও সমাজ ধ্বংসের মুখে পতিত হবে তবে?
ফেরাব এই দেশের মাটিতে মানুষের হারানো শান্তি
প্রয়োজন হলে আনবো মোরা বিদ্রোহের ক্রান্তি!
দেশের দূরাবস্থা দেখে কাঁদি এ কেমন নীরবতা
কবে পাব দেশ প্রেমিক সুভাষ চন্দ্রের মত নেতা।


রচনাকালঃ- ১১/০৭/২০১৩

আষাঢ়ের প্রেম

ঐ নীল গগনে ছেয়েছে কালিমাখা তায়দে আঁধার
উষ্ম পবন এসে বলে যায় এসেছে আষাঢ় মাস,
বাদল দিনে তটিনীর পাড় একাকী বসে থাকি
বাড়িয়ে দিয়ে তোমার তরে শূন্য দুটি ভুজ।
অভ্রের দিকে চেয়ে দেখি বৃষ্টি নামে মুষলধারায়
অম্বুর প্রতিটি কণায় দেখি শুধু তোমার প্রতিবিম্ব,
ঐ পাদপের প্রতিটি শাখায় ফুটেছে কদম ফুল
চারিদিকে ছড়িয়েছে মন মুগ্ধকর মিষ্টি সুবাস।
উল্লাসিত অঙ্গ বৃষ্টির পরশ মেখে ভিজতে থাকে
বিচলিত মনে অনুভব করি তোমার উপস্থিতি,
ক্ষণে ক্ষণে থেমে যায় বৃষ্টি দেখি রোদেলা গোধূলি
কখনো উদাস হয়োনা যেন এমন মধুর লগ্নে।
অবনীর বুক চিরে আসবো সুখের পরশ নিয়ে
সবুজ কুঞ্জের মাঝে হাতে হাত রেখে বৃষ্টিতে ভিজবো,
প্রণয়ের আবেগে দুজন মিলে মিশে হব একাকার
শীতল উদকে মোরা ভাসিয়ে দেবো ক্লান্ত দীর্ঘশ্বাস।
কাজল কালো নয়নে দেখবো একে অপরের প্রতি
বৃক্ষের মতো আঁকড়ে ধরা আবেগী প্রেমের প্রতিফলন,
আষাঢ়ের বর্ষণে খুঁজে নেব শান্তির নিবাস
অখিলের জলদ এসে করবে সুখের স্বর্গ দান।
সর্বদা প্রিতিটি নিঃশ্বাসে এভাবেই মিশে থাকবে
সারাজীবন প্রগাঢ় বন্ধনে আবদ্ধ আষাঢ়ের প্রেম,
যেমন থাকে পারাবার ঝিনুকের বুকে মুক্তা
প্রয়াস করে প্রাণপনে তাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে।


রচনাকালঃ- ১০/০৭/২০১৭

মিথ্যেবাদী ডাক্তার

ওঁরা মিথ্যেবাদী ডাক্তার!
উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে যায় ওঁরা বিদেশে
ডাক্তারি পাস করেই আবার ফিরে আসে এদেশে,
শপথ নেয় নিরপেক্ষ হয়ে মানুষের সেবা করবে
তাহলে কেন বিনা চিকিৎসায় অসহায় জনগন মরবে?

ওঁরা মিথ্যেবাদী ডাক্তার!
কত সুনামি ডিগ্রি পাই ওঁরা হয়ে এম-বি-বি-এস
আবার বিদেশ ফেরত ডাক্তার কিছু এফ-আর-সি-এস,
ভদ্রতার মুখোশ পরে ধারণ করে ডাক্তারের বেশ
অবাদে মানুেষের অর্থ লুটে ওঁরা করে সর্বশেষ৷

ওঁরা মিথ্যেবাদী ডাক্তার!
ইচ্ছে খুশি চাকরি করে হাসপাতাল আর নার্সিংহোমে
কিছু দিন পরেই দেখা যায় ওঁদের টাকার পাহাড় জমে,
হাসপাতালে রোগী দেখে না করে ফাঁকিবাজি
এমারজেন্সি ঘরে গল্প গুজোব চলে আড্ডাবাজি।

ওঁরা মিথ্যেবাদী ডাক্তার!
হাসপাতালে যাওয়ার সময় নেই ডাক্তার বড় ব্যস্ত
নিজস্ব ক্লিনিকে রোগী দেখে তাদের কোরে তোলে সুস্থ,
অসহায় মানুষ বোঝেনা কিছু কোনটি ভাল মন্দ
লুন্ঠিত হয় তার কারণে হয়ে ডাক্তারের কাছে বন্ধ।

ওঁরা মিথ্যেবাদী ডাক্তার!
মৃত্যুমুখি রোগীদের ওঁরা বাঁচিয়ে তোলে প্রাণ
তাইতো অবুঝ জনগণ ওঁদের মনে করে ভগবান,
অর্থ লোভি ডাক্তারদের টাকায় ধরে যেন ঘুন
কুমন্ত্রণার বুদ্ধি দিয়ে শেষে মানুষ করছে খুন।

ওঁরা মিথ্যেবাদি ডাক্তার!
সন্তান জন্মানোর পূর্বে মাতা হাসপাতালের বেডে করে ছটপট
সেখানেও তৈরি রাক্ষস ডাক্তার দালালি খাওয়ার জন্য চটপট,
সন্তান ভূমিষ্ট দূরের কথা সব শেষে করে ওঁরা সিজার
এভাবে কত অসহায় মায়ের জীবন করে দিলো ছারখার!

ওঁরা মিথ্যেবাদী ডাক্তার!
ভর্ত্তি থেকেও চিকিৎসা মেলেনা এইতো হাসপাতালের পরিবেশ
রক্ত পিপাশু ডাক্তারের দল ওঁরাই তো করছে সবশেষ,
ঔষধ ইনজেকসেন মেলেনা কিছুই কিনতে হয় দোকানে
দরিদ্র মানুষ ঠকছে বারবার দিতে হয় কমিশন সেখানে।

ওঁরা মিথ্যেবাদী ডাক্তার!
ক্লিনিকে পিশাচ ডাক্তার রোগী দেখে করে ছল কপট
ভাল চিকিৎসা তো দুরের কথা করতে হয় রক্ত রিপোর্ট,
কোথায় হবে পরীক্ষা নিরিক্ষা তার সন্ধানও দেয়
সহজ সরল মানুষ কে ঠকিয়ে  অর্ধেক দালালি নেয়!

ওঁরা মিথ্যেবাদী ডাক্তার!
শারিরিক অসুস্থ রোগীদের নেই ডাক্তারের কাছে মূল্য
ওঁদের কাছে আজ আমরা হয়েছি খোদ্দেরের সমতুল্য,
এযুগের ডাক্তার বড় অর্থলোভি হয়েছে ওঁরা ব্লাকমেলার
অশিক্ষিত রোগীদের সব কেড়েনিয়ে করে  সুযোগের সৎব্যবহার।

ওঁরা মিথ্যেবাদী ডাক্তার!
ঔষধ কোম্পানির কাছে খায় ডাক্তার মোটা অঙ্কের ঘুষ
ভেজাল ঔষধ লিখে তবুও ফিরছে না জনগণের হুস,
খারাপ ঔসধ খেয়ে যায় রোগী মনে করে তারা সুস্থ
রোগ নিরাময় তো দূরের কথা হয়ে পড়ে আরও অসুস্থ!

ওঁরা মিথ্যেবাদী ডাক্তার!
প্রাণ বাঁচানোর ক্ষমতা দিয়েছেন ঈশ্বর তোমাদের হাতে
অর্থের লোভে আমাদের মেরে ভাবছো কি হয়েছে তাতে?
এই নিবেদন করছি আমি ও ডাক্তার তোমাদের কাছে
সকলের সেবা করো অসুস্থ রোগী যতো আছে।


রচনাকালঃ- ০৮/০৭/২০১৭

দুঃস্বপ্নের চিত্র

গভীর রাতে উঠে শুনি চিৎকার
তখন শিহরিত হয় মোর গা,
ভয়ংকর রক্তাক্ত দেহ ধারণ করে
ছুটে আসছে এগিয়ে দুই পা!

সন্ত্রাসের কবলে গড়ে রক্তের ভেলা
তাতে যেন ভেসে যায় মাটি,
ওই দানবের দল দেখায় বাহুবল
নিশির তিমিরে তৈরি করে ঘাঁটি।

চলে দাঙ্গা ফাসাদ আর লুটপাট
নির্বিগ্নে ঝরায় তারা অগ্নির বৃষ্টি!
করুণ দৃশ্য দেখে হৃদয় কাঁপে
জেগে থাকে নিদ্রাহীন দৃষ্টি।

অসহায় নর-নারীর চিৎকার শুনি
দেখতে পাই দুঃস্বপ্নের চিত্র!
তারা মুখোশধারী অত্যাচারী
কখনো হতে পারেনা কারো মিত্র।

একদিন তাদের অস্তিত্ব ধ্বংস হবে
অন্তর থেকে করি এই অভিশাপ!
বেশী দেরি নেই আসছে সুনামী
বেড়ে গেছে বিশ্বের বুকে পাপ।


রচনাকালঃ- ০৭/০৭/২০১৭

উলঙ্গ সমাজ

মানব সভ্যতা হেঁটে চলে উলঙ্গ পথের তরে
যেখানে শুধু দেখা যায় নগ্ন ময়ূরীর নাচ,
মানুষ বাস্তব চিত্রকে ভুলে বসবাস করে
এক সাজানো মিথ্যে রঙিন স্বপ্নের দেশে।
যেখানে থাকে ধ্বংসের পিচে গড়া কালো পথ
সে পথ অতিক্রম করে পৌঁছে যায় মৃত্যুর দ্বারে!
বিষাক্ত নাগিনীর মোহজালের মধ্যে বন্দী হয়ে
তরুণ যুবক ছুটে চলে ওই পথের দিকে।

সর্ষের কুসুম পুরুষ ভ্রমর কে আহ্বান জানাই
নির্লজ্জ মধুকর ছুটে গিয়ে মধু আহরণ করে,
আর তখনি ফুটে ওঠে উলঙ্গ সমাজের চিত্র
যেখানে অধঃপতনের ধ্বংসস্তুপ ছাড়া কিছুই নেই!
প্রতি রাতে উজ্জল সুন্দরী হরিণীর বাজার বসে
সেখানে দেখা যায় মুখোশধারী মানবের সমাগম,
মহা আনন্দে আসে অগণিত নবীন তরুণ কিশোর
অবশেষে শুরু হয় টুকরো টুকরো চর্মের দরদাম!

অর্থ দিয়ে কিনে নেয় খাঁচায় বন্দী থাকা বিহঙ্গ
তারপর শুরু হয় কত আধুনিক গানের আসর,
ভন্ড পুরুষের দল পান করে বিষাক্ত মদিরা
সারা রাত ধরে নিথর অঙ্গে করে ক্রুশের আঘাত!
অথচ প্রকাশ্য দিবালোকে তারা ঘুরে বেড়ায়
আর নিজেদের দাবি করে সম্মানিত ব্যক্তি বলে,
তাই বিষাক্ত হয়ে ওঠে এই ধরণীর মৃত্তিকা
ধীরে ধীরে দূষিত হয় গভীর সমুদ্রের উদক।

উলঙ্গ সমাজকে আর সহ্য করবেনা প্রকৃতি
নিয়ে আসছে ভুবনের বুকে বিদ্রোহের মহা প্রলয়!
তান্ডব করবে সলিল আর বেশী দেরি নেই
দ্রুত গতিতে ছুটে আসছে ভয়ংকর সুনামী!
হে মানব জাতি তোমরা জেগে ওঠো সাবধান হও
না হলে তচনচ করে দেবে তোমাদের অস্তিত্ব!
চিরতরে লুপ্ত হয়ে যাবে আজকের উলঙ্গ সমাজ
অবশেষে পড়ে থাকবে রক্ত-মাংস হীন কঙ্কাল।


রচনাকালঃ- ০৫/০৭/২০১৭

শীতের শিশির

আমি অনুভব করেছি রজনীর শিশির বৃষ্টির
নিদ্রাহীন স্বপ্নের মতো প্রতিটা বিন্দু ঝরে পড়ে,
স্পর্শ করেছি কুয়াশায় ভেজা হিমেল বায়ু
দেখেছি ঘন ধোঁয়ার মত পালিয়ে বেড়ায়।
ঐ নীল দ্যুলকে সাদা মেঘের আবরণে ঢেকে
কোথায় যেন বিলীন হয়ে যায় না ফেরার দেশে,
শিশির বিন্দু সারা রাত হিমের হাত ধরে ঝরে পড়ে
চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে যায় আঁধার ধরিত্রী।
আর জেগে থাকেনা কেউ এই নির্জন রাতে
প্রাত্যাশায় জেগে থাকে নিদ্রাহীন দুটি আঁখি!
জেগে থাকে শীতের প্রতিটি শিশির বিন্দু
জেগে থাকে সবুজ পাতা স্নান করার কামনায়।


রচনাকালঃ- ০৩/০৭/২০১৭

বিরহের গান


আমি চিরতরে দূরে চলে যাব
হয়তো সেখানে শান্তি খুঁজে পাব,
ক্লান্ত দুপুরে দেব বৃক্ষের ছায়া
সেদিন ব্যাকুল মনে জাগবে মায়া।
আমি মৃদু অনিল হয়ে এসে
তোমায় আলিঙ্গন করব ভালোবেসে,
সেদিন শিরের কুন্তল থাকবে দুলতে
কভু আমায় পারবেনা ভুলতে!

আমি বাদল দিনের বৃষ্টি হয়ে
ঝরে যাব তোমার হৃদয় ছুঁয়ে,
ভেজা গোলাপ হয়ে ধরব হাত
মনে পড়বে মোরে দিয়েছ আঘাত!
সেদিন পুর্বের অতীত ভেসে উঠবে
হয়তো সুকনো পাদপে রঙ্গন ফুটবে,
ছুটে যাবে ওই কুসুম তুলতে
কভু আমায় পারবেনা ভুলতে!

আমি শরতের সাদা জলদ হয়ে
শিউলির সুগন্ধ নিয়ে আসব বোয়ে,
সেদিন শেফালি পুষ্পের গাঁথবে মালা
তোমার হৃদয়ে ধরবে বড় জ্বালা!
প্রতিটি তিমির রাতে থাকবে নিঃসঙ্গ
বেদনার অশ্রু ঝরে ভিজবে অঙ্গ!
বিস্মৃত মনে ছুটবে কপাট খুলতে
কভু আমায় পারবেনা ভুলতে!

আমি বসন্ত কালের কোকিল হয়ে
শুনিয়ে যাব বিরহের গান গেয়ে,
ভিখারির মত গিয়েছি তোমার দ্বারে
ফিরিয়ে দিয়েছ মোরে বারে-বারে!
নীরবে ঝরেছে মোর আঁখির বারি
অসলে আমিতো বিরহের অধিকারী!
হয়তো পারিনি কখনো সেকথা বলতে
কভু আমায় পারবেনা ভুলতে!

আমি নীল দ্যুলকের পথ ধরে
শীতের শিশির হয়ে যাব ঝরে,
পথ চলতে গিয়ে দাঁড়াবে থমকে
মোর সমাধি দেখে উঠবে চমকে!
অস্পষ্ট হবে সেদিন আঁখির দৃষ্টি
নীরবে ঝরবে কত রোদনের বৃষ্টি!
সেদিন বেরঙিন চিত্র থাকবে ঝুলতে
কভু আমায় পারবেনা ভুলতে!


রচনাকালঃ- ০১/০৭/২০১৭

বাদল দিন


বৃষ্টির দিনে বিলে ফোটে পদ্মফুল
শিশুরা গায়ে কাদা মেখে আনন্দে নাঁচে,
মিষ্টি সুরে সঙ্গ দিতে ছুটে আসে প্রকৃতি
বৃক্ষ অঙ্গ ভেজায় ঝম-ঝম বৃষ্টির ছন্দে।
খালে বিলে আনাগোনা হয় বকের
মন মুগ্ধ হয় প্রকৃতির এমন অবদানে,
বাদল দিনে বৃষ্টির পরশ মেখে ভিজে মন
হিমেল বাতাসে অঙ্গে জাগে শিহরণ।
কালো মেঘের ভেলা ভাসে নীল আকাশে
পাখিরা খেলা করে সুদূর নীল প্রান্তে,
নদীর জল ক্ষণে-ক্ষণে ওঠে ফুলে ফেঁপে
শান্ত পৃথিবীর বুকে ঝরে বারিধারা।
গঙ্গার য্রোত যেন প্রত্যহ অবিরল বাড়ে
মাঠ পুকুর নদী নালায় জোমে যায় জল,
বৃষ্টির ছম-ছম নূপুর বাজে গাছের ডালে
সন্ধ্যাকাশে ক্ষণে-ক্ষণে সাজে রংধনু।
বাদল দিনে রঙবাহারি ফুলের আগমন
শ্যাওলা কচুরিপানায় ভরে যায় পুকুর,
সবুজ অরণ্য পুলকে ভিজে স্নান করে
বর্ষণ মুখর লগ্নে শুনি দোয়েলের গান।


রচনাকালঃ- ২৮/০৬/২০১৭

ঈদের খুশি

সন্ধ্যার অন্তরীক্ষে উদয় হল
ঐ শাওয়ালের বাঁকা চাঁদ,
আনন্দ উচ্ছ্বাসে আত্মহারা হয়ে
আজ মন হল উন্মাদ।
দীর্ঘ এক বছর প্রতীক্ষার পর
অবশেষে এল খুশির ঈদ,
ব্যাকুল মন থেমে থাকে না
দুনয়ন থেকে হারালো নিদ।
রাতের আকাশে চেয়ে দেখি
পাখিদের ডাকে হল ভোর,
ঈদের নতুন সূর্য দেখতে
খুলে দাও মনের দোর।
ধনী দরিদ্র সবার সদনে
আজ এল ঈদের খুশি,
নতুন করে ফুটলো আবার
দুঃখিদের মলিন মুখে হাসি।
খুরমা পোলাও সেমাই মিষ্টি
তৈরি হয়েছে নতুন খাবার,
প্রতি বারের মত এবারেও
ঈদ ফিরে এল আবার।
স্নান করে চোখে সুরমা দিয়ে
নতুন বস্ত্র পরিধান কর,
আতর মেখে যাও ঈদের মাঠে
রবের দরবারে হাত তুলে ধর।
ঈদের দিনে শীতল বাতাস
যায় আনন্দের দোলা দিয়ে,
ওয়াজিব নামাজ পড়তে যাও
একটু মিষ্টি খাবার খেয়ে।
অভিমান মুছে দাও মন থেকে
সব বিভেদ ভুলে যাও আজ,
ঐ মুক্ত নীল গগনের নিচে
সবাই একত্রে পড় নামাজ।
ফিতরা জাকাত পরিশোধ করে
যাও ঈদের নামাজ পড়তে,
সব গুনাহ মাফ হবে আজ
যাও নিষ্পাপ জীবন গড়তে।
আজ ভুলে যাও রাগ অনুরাগ
তোমরা কোরোনা কোন ব্যবধান,
নামাজের শেষে সালাম মুসাফা
কর সবার সাথে আলিঙ্গন।
ঈদ মুসলিম জাতির কাছে
কত খুশির পবিত্র উৎসব,
চারিদিকে শুরু হয়েছে আজ
এক সুন্দর অনুভূতির কলরব।


রচনাকালঃ- ২৫/০৬/২০১৭

বুধবার, ১২ জুলাই, ২০১৭

পথিকের প্রতি

চেয়ে দেখ,
তোমাদের সম্মুখে আছে কঠিন পথ
আসতে পারে বাধা বিঘ্ন-জ্বালা!
চলার পথে হতে পারে হৃদয় চৌচির!
লক্ষ্য ভেদ করতে তোমাদের এগিয়ে যেতে হবে;
নিজ দায়িত্ব পালন করার পুর্বে
হয়ে পোড়োনা যেন দুর্বল।
চারিদিকে জ্বলছে প্রতিহিংসার অনল!
দেখা দিয়েছে আজ নবরূপে বিভেদ
বিস্তীর্ণ স্বচ্ছ নীল আকাশের মাঝে -
জমছে অশুভ কালো মেঘ,
প্রতিজ্ঞা নাও!
তোমাদের সবকিছু ঠিক করতে হবে
ব্যর্থ হলে শুরু হবে বিভ্রান্ত।
খোঁজো,
ভুবনের জমিনে মানুষের ভুল-ভ্রান্তি
অনুভব কর সকলের দুঃখ ক্ষোভ-যন্ত্রণা;
একে অন্যের সত্রু হয়ে করছে হানাহানি!
দরিদ্রদের অন্তরে রয়েছে অফুরন্ত লাঞ্ছনা!
ক্ষমতার দাপটে শুরু হয়েছে অবিচার
সব ধুয়ে মুছে দাও সমাজের বুক থেকে।
হে যুব সমাজ,
তোমরা হাতে ধর অগ্নি-মশাল
ঘুচিয়ে দাও পৃথিবীর বুক থেকে আঁধার;
সকলের দ্বারে পোঁছে দাও শান্তির বাণী
দীর্ঘ যাত্রার পথ চলতে চায় অক্লান্ত পরিশ্রম।
জীবন যুদ্ধের কঠিন পথে নেমে,
হে পথিক; তোমরা হয়ে যেয়োনা ক্লান্ত।


রচনাকালঃ- ২৪/০৬/২০১৭

মহাশূন্যের পথে পাড়ি


একদিন  তিমির ধরণীর মৃত্তিকার বুক চিরে
আলিঙ্গন করেছিলাম সূর্যের কিরণের সঙ্গে,
প্রত্যহ নিশির শেষে বিহঙ্গ ডাকা ভোরে
ছুটে গিয়ে স্পর্শ করি ভানুর জ্যোতি।
এখন আর শুনতে পাই না কোকিলের ডাক
এর মধ্যে অতিক্রম করেছি অনেক বছর,
এখোনো প্রতিদিন পড়ন্ত বিকেলে আকাশের
লাল বর্ণের আলোয় করি সদনে ফেরার চেষ্টা।
আজ জীবনের বাস্তকব ও কঠিন পথ চলতে
সাহস আর মনোবলের যে বড়ো অভাব,
সকলের মাঝে আশ্চর্য কিছু করে যাব
রেখে যাব ভুবনের বুকে আমার কবিতা!
পথ চলতে অবশেষে যেন না পড়ে দীর্ঘশ্বাস
তারপর খুঁজে নেব চিরস্থায়ী ঠিকানা!
বিবর্ণ ক্ষিতির বুকে প্রাণহীন শরীর রেখে
আমি অনন্ত মহাশূন্যের পথে পাড়ি দেব!


রচনাকালঃ- ২৩/০৬/২০১৭

শঙ্খচিল


আমি এক মুক্ত শঙ্খচিল
বিরহ ফেরি করি অনাবিল,
খোলা আকাশে মেলি ডানা
যেথা রংধনু থাকে টানা।
পালকে ঢাকা মোর কলেবর
নেই আশ্রয় যেন যাযাবর,
দিবানিশি থাকে এত কেতন
তবু পাই না খাটুনির বেতন।
বহু শহর নগর ঘুরি
মানবের বুকে চলে ছুরি!
কারা যেন করে চিৎকার
কোথায় ওঠে এত হাহাকার!
পৃথিবীতে জমে হিংসার ভিড়
তবুও খুঁজি সুখের নীড়,
বিষন্ন থাকে যাদের মুখ
উপহার দিয়ে যায় সুখ।
বিষাক্ত হয় অন্তরীক্ষের বায়ু
প্রত্যহ কমে জনতার আয়ু,
প্রকৃতি হয় সদা দূষণ
পিশাচ করে লহু শোষণ!
ঝরে অবলার নয়নের নীর
তাই হয়ে উঠি অস্থির,
অনেক দেখেছি আর নয়
করিনা আজ কাউকেই ভয়।
আমি মুক্ত চির মুক্ত
হই ক্রান্তির দলে যুক্ত,
মোর আগমনে ঘুচবে যামিনী
আবার জন্মাবে নবরূপে অবনী।


রচনাকালঃ- ২২/০৬/২০১৭

আষাঢ়


আষাঢ় দ্যুলকে নীরদের গর্জন
একটু পরেই শুরু হবে বাদলের বর্ষণ,
ঝোড়ো সমীরণ উঠেছে পুবে
ধান ক্ষেত গুলো যাবে ডুবে!
চেয়ে দেখি নদীর ওপারের দিকে
জীমৃতে আঁধার জমছে ধীকে-ধীকে,
ওই ডাকে শোনো জলধর ঘন-ঘন
ধেনুদের সদনে ফিরিয়ে আনো।
বারে-বারে পথের দিকে দেখি চেয়ে
কৃষক ফিরছে ঝড়ের আশঙ্কা পেয়ে,
উঠেছে অনিলের সোঁ-সোঁ শব্দ
সারা গ্রাম যেন হয়ে গেল স্তব্ধ!
একটু পরেই নেমে আসবে তিমির
ওই প্রান্তর মাঠে অস্ত যায় মিহির,
ঘোলা অম্বুদে ছেয়ে আছে আকাশ
পুব দিক থেকে বইছে বাতাস।
কোথায় গেল রাখালের দল
কারো চলবেনা আজ বাহুবল!
পবনের তান্ডবে কাঁপবে ভূ-তল
বলাহক করছে কৌশলের ছল।
অন্তরীক্ষ থেকে নামবে বর্ষার ঢল
তরঙ্গিনীর নীর করছে টলমল!
বনানী পশুর দল ছুটছে দ্রুত পায়
খেচরের ঝাঁক কিচিমিচি গান গায়।
এখন তো গুম ধরা প্রচন্ড গ্রীষ্ম
গাঙের ধার থেকে দেখি দৃশ্য,
কালো বারিদ উঠেছে নীল গগনে
বৃষ্টির ধারা নেমে আসছে ভুবনে।
তটিনীর তীরে আঁছড়ে পড়ছে ঢেউ
তরী বন্ধ মাঝিরা ঘাটে নেই কেউ,
মুষলধারা বৃষ্টিতে হয়েছে অচল
গ্রামের পথ গুলি হয়ে গেছে পিছল।
ওই পাদপ দুলে ঘন-ঘন পথের পাশে
যেন তাদের দিকে কেউ ছুটে আসে,
রবি অস্ত গেছে এখনি আঁধার হবে
তায়দে ঢাকা অম্বর সন্ধ্যা হলো সবে।
বেশি দেরি নেই পোহাতে এ বেলা
ফিরে চলো কোরোনা অবহেলা
আজ হবেনা আসমানের নিচে ঠায়
এসো মোরা নিজ গৃহে ফিরে যায়।


রচনাকালঃ- ২১/০৬/২০১৭

ক্ষণস্থায়ী সময়


ক্ষণস্থায়ী সময় খুব দ্রুত গতিতে চলে যায়
মাঝে-মাঝে সে ধারণ করে ভিন্ন রূপ,
আর আগের মত নেই অপেক্ষার দিনগুলি
সময়ের সাথে কোথায় যেন হারিয়ে গেছে!
বিষন্ন বিকেলে তার অপেক্ষার প্রহর গুনে
আগের মত এখন দাঁড়িয়ে থাকা হয় না,
তাইতো রাতে আলোহীন দ্যুলকের দিকে
অধীর দৃষ্টিতে চেয়ে দিন গুনে যায়।
আজ চিরতরে থেমে গেছে একাকী রোদন
জানিনা কেন অবুঝ শিশুর মত কাঁদতে ব্যর্থ!
কোমল হৃদয়ের উত্তাপে গলে না আঁখির বরফ
শুধু নীরবে গোপনে ভেবে যায় আগের দিনগুলি।
কোথায় যেন হারিয়ে গেছে সুখের মুহূর্ত
খেলনার পুতুলে এখন আর মন ভরে না,
সময়ের সাথে হয়েছি শিশু থেকে কিশোর
তাই ধীরে-ধীরে চাহিদা বেড়েছে প্রতিদিন।
এখন আর নেই আগের মত ভাবনা
দেখতাম নিশিথে বিধুর বুকে কতকিছু,
এখন দেখলে মনে হয় ওগুলো শুধুই কলঙ্ক
আগের মত মনমুগ্ধ হয় না শশীর রূপে!
এখন শ্রাবণের বৃষ্টি নামলে ইচ্ছে করে না
ধূলোবালি মাখা নগ্ন গায়ে হাত পা ছুঁড়তে,
আজো প্রকৃতির অবদানের প্রতিটি অস্তিত্ব
সময়ের সাথে আমার হৃদয়ের মাঝে রূপ বদলায়।


রচনাকালঃ- ১৯/০৬/২০১৭

কারাগার - ৫


আহা তুমি এত সংকোচবোধ করছো কেন
মনে রেখ আমি কিন্তু অর্থ লোভী নই,
করব তোমায় আইনের চোখে নির্দোষ প্রমাণ
হারানো সম্মান আনব ফিরিয়ে সমাজের বুকে।

আমাকে বাঁচাবার জন্য কত বাধা বিপত্তি সহ্য করে
অবশেষে জোগাড় করলেন উপযুক্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ,
সমস্ত প্রমাণের ভিত্তিতেই উচ্চ আদালতে আপিল করে
যা কিছু সাক্ষ্য-প্রমাণ ছিল সেখানে করলেন দাখিল।

আবার নিয়ে গেল মোরে সর্বচ্চো আদালতে
হাতে হাতকড়া আর কোমরে  দড়ি বেঁধে!
যখন আমি ওই নির্দয় কাঠগড়ায় গেলাম দাঁড়িয়ে
দেখলাম সন্তানকে বুকে জড়িয়ে কাঁদছে আমার স্ত্রী!

তখন শুরু হল সেই খুনের মামলার জেরা
মনে মনে ভাবলাম আর ফেরা হবে না ঘরে,
দুই উকিলের মধ্যে অনেকক্ষণ বিতর্ক চলার পর
অবশেষে আসলো আসল খুনি প্রকাশ্যে।

উকিল সাহেবার কঠিন প্রয়াস আর অতুলনীয় সাহস
মহামান্য আদালতের কাছে আমায় প্রমাণ করলো নির্দোষ,
কারাদণ্ড হল ছিল যারা মুগোশধারী অপরাধী
মুখ্য দোষী কে উচ্চ আদালত দিলেন মৃত্যুদণ্ড!

চোখের জল মুছে ফেলে আনন্দে হৃদয় ভরে গেল
সেদিন বুঝলাম শত বাধা আসলেও সত্যের জয় হয়,
আবার বাঁধব সুখের সংসার সাথে নিয়ে স্ত্রী আর পুত্রকে
সকল সুখের সূত্র খুঁজে পাব আমি তাদের মঝে।


রচনাকালঃ- ১৮/০৬/২০১৭

প্রেয়সীর মন


প্রেয়সীর মন অধীর আগ্রহে
আনন্দে কাটে বৃষ্টির দিনগুলি,
অনুভব করে প্রকৃতির পরশ
বেলির সৌরভে আসে অলি।

প্রকৃতি এসে ছড়িয়ে যায়
মন মুগ্ধকর ঘাসফুলের ঘ্রাণ,
আবেগী প্রণয়ে মোহময় মন
আষাঢ়ের বৃষ্টিতে ভিজে প্রাণ।

জ্যোৎস্না রাতে নীল গগনে
জমে হালকা বারিদের আবরণ,
অম্বরে নক্ষত্র করে বৃষ্টিস্নান
শীতল সমীরে জাগে শিহরণ।

ভেজা রজনীতে ডাকে প্যাঁচা
শালবনের তলায় তিমির নিশি,
প্রেমের পরশে ব্যাকুল হৃদয়
যেন অফুরন্ত বিষন্নতার রাশি।


রচনাকালঃ- ১৫/০৬/২০১৭

শূন্যতা

রজনীর অশ্রুসিক্ত নয়নে স্পর্শ করে যায়
বহুদিনের প্রতীক্ষিত সুস্পষ্ট মৃত্যুর প্রতিচ্ছবি!
শত কলঙ্ক বুকের মাঝে লুকিয়ে রেখে
দিগন্ত ছোঁবার জন্য ছুটে আসে চাঁদ।
দুচোখের সামনে ভেসে ওঠা সেই সবুজ পথ
আলো আর আঁধারের মাঝে লুকোচুরি খেলে,
সিমান্ত খুঁজে পাবার আশায় ছুটে যায়
মাঝ পথে থমকে দাঁড়ায় মেলেনা ঠিকানা!
একাকি পথে কারো দেখা পইনা যখন
অন্তরীক্ষের তারারা হাসে আমায় দেখে,
জ্যোৎস্না রাতে কুঞ্জে ক্ষুধিত পশু কাঁদে
জেগে থাকে তখন নিরাকার অস্তিত্বের শূন্যতা।


রচনাকালঃ- ১৩/০৬/২০১৭

ঠিকানাহীন

হয়তো এ দেশের বুকে আমি
এক অসহায় আর ঠিকানাহীন,
কোনদিন পাইনি মাতার আদর
শুধু উপহার পেয়েছি ডাস্টবিন!
সদনের জন্য দেখেছিলাম স্বপ্ন
অবশেষে ঠায় হল ফুটপাতে,
সেখানে সারাক্ষণ থাকি অভুক্ত
আঁখি জেগে থাকে নিশিতে।
তিমির রজনীতে দেখতে পাই
এক ভিন্ন মুখোশধারী দানব!
প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়ায়
ভদ্রতার আবরণ জড়িয়ে মানব।
সুখের দেখা পাইনি আজও
জীবনের মুহূর্ত হয় বরবাদ,
র্নিজন রাত্রিতে শুনতে পাই
হৃদয়ের নিবিড়ের সেই আর্তনাদ!
ক্ষুধা নিবারণের জন্য যখন
সকলের দ্বারে বাড়িয়েছি হাত,
তাড়িয়ে দিয়েছে বারে-বারে
দেয়নি কেউ একমুঠো ভাত!
আজ আমি স্বাধীন যাযাবর
নেই কোন থাকার আশ্রয়!
অগ্নি পথে চলেছি একা
হয়েছি জীবনের কাছে পরাজয়।
কষ্টের মধ্যে শিক্ষালাভ করে
সহজ উপাধি পাই বেকার,
জানিনা আমার কি পরিচয়
শুধু পেয়েছি মানব আকার!
পরিচয়ের খোঁজে জন্ম নিয়ে
হয়তো আবার ফিরে আসব,
তবুও যদি না পাই ঠিকানা
তবে অক্ষির সলিলে ভাসব!
নেই পরিচয় নেই ঠিকানা
হয়তো ছিলনা কোন কালে,
ফুটপাতে মোর জীবন কাটে
ভয়াবহ শত কষ্টের বেড়াজালে!


রচনাকালঃ- ০৯/০৬/২০১৭

প্রেম ভিখারি

পড়ন্ত বিকেলে অর্ক লাল বর্ণ
ধারণ করে গঙ্গা নদীর কূলে,
শীতল সমীরণ বইছে সারাক্ষণ
তাতে যেন গাছপালা দুলে।
কিনারায় বসে শুধু ভাবি
আসলো আমার যৌবন কাল,
বসন্তের ফুল ফুঁটলোনা আজও
আহা পড়ল একি অকাল!
চাওয়া পাওয়া অপুর্ণ রয়ে গেল
তাইতো চিন্তা বড্ড করি,
প্রেমের ছোঁয়া পেলাম না এখনো
অসহায় হয়ে কেঁদে-কেঁদে মরি!
খুঁজে পাব কি রমণীর ঠিকানা
এ হৃদয়ে চলছে আহাজারি,
ভালোবাসার গোলাপ ফুঁটবে কবে
আমি এক প্রেম ভিখারি!

প্রেম খুঁজে ফিরি আমি
আজও সকলের দ্বারে-দ্বারে!
অপরূপ নারীদের মলিন মুখ
চেয়ে দেখি বারে-বারে।
ব্যাকুল মন থেমে থাকে না
এ-যে চায় শুধু ভালোবাসা,
হৃদয়ে ধরেছে ফাটল মায়াহীন
মরীচিকা করছে নিরাশা!
তিমির নিশিথে স্বপ্ন দেখি
চলে যায় জীবনের প্রতিটি সময়,
কেউ কি আছো এমন যে দুহাত
বাড়িয়ে প্রেম ভিক্ষা দেবে আমায়?
একা হেঁটে চলেছি রাজপথে
সেজেছি ছলনার শিকারি,
অফুরন্ত প্রেম পাব কবে
আমি এক প্রেম ভিখারি!

আশায় বেঁধেছি বুক দেখব
তাকে নিয়ে রঙিন স্বপ্ন,
বলব দুজনে মনের কথা
হয়ে মধুর প্রেমে মগ্ন।
প্রতিটা শহর-নগরে ঘুরে ফিরি
এক টুকরো প্রেম পাব বলে,
আজও দিলনা কেউ প্রেম ভিক্ষা
ছেড়ে চলে গেল সকলে!
প্রতিটা প্রহর তার অপেক্ষায়
থাকি সকাল দুপুর সাঁঝে,
দুহাত বাড়িয়ে সে বলবে আমায়
এসো তুমি মোর হৃদয়ের মাঝে।
মিলবে কি এ ভুবনে এমন রমণী
যে হবে মোর জীবনের সহকারি,
প্রতীক্ষার দিন শেষ হবে কবে
আমি এক প্রেম ভিখারি!


রচনাকালঃ- ০৬/০৬/২০১৭

বৃষ্টিভেজা রাত্রি

আঁধার রাত্রির পৃথিবীতে পড়ে আছে
নিথর স্তব্ধ হয়ে সহস্র ভিন্ন প্রকৃতির জীব,
গৃহ থেকে বেরিয়ে লক্ষ্য করে দেখতে পাই
কালো জলদের আবরণে ঢেকে গেছে গোটা অম্বর।
যেভাবে জ্বলন্ত উত্তাপের ওপর বরফ রেখে দিলে
অনায়সে সেই বরফ গলতে শুরু করে,
প্রচন্ড গ্রীষ্মের অনুভূতি তার বুকের মাঝে চেপে রেখে
ঠিক তখনি বলাহকের বরফ গলে বৃষ্টি আসে।
খোলা দ্যুলকের বুকে দেখা গেলনা বিধু
বৃষ্টির ঝম-ঝম শব্দের তালে ছন্দ হারায় বন,
রাতে র্নিজন পথের ধারে চপলার আলোকে দেখি
পেয়ারার ডালে বসে বৃষ্টিতে ভিজছে একটি বিহঙ্গ।
সদনের উত্তরে আম বাগানের পাশে টিউবঅয়েল
বৃষ্টিতে ভিজে বুকে অক্লান্ত কান্না নিয়ে নিশ্চুপ!
ঝোড়ো অনিলে বৃষ্টির ধাক্কা এসে লাগে
ক্ষিতির তৈরি ছোটো কুঁড়ে ঘরেরর দরজায়।
ঝড়ের প্রকপে দরজাটা বারে-বারে বন্ধ হয়
খড়ের চালাগুলো বৃষ্টিতে স্নান করে কাঁদে!
পাদপের শাখা প্রশাখা গুলো প্রলয়ের প্রকপে
ধাক্কা খেয়ে বারে-বারে যেন ঢলে পড়ে মৃত্তিকায়।
কুঁড়ে ভবনের দেওয়ালকে আলিঙ্গন করে বৃষ্টি
যেন ছিড়ে বের করতে চায় হৃদয়ের কঙ্কাল!
নিভে যাওয়া উনুন প্রতিক্ষণে কাঁদতে থাকে
মেঝের মাটি ভিজে থাকে ছোট্ট রান্নাঘরে।
ধীরে-ধীরে অম্বুদের গর্জন কমে যায়
জোরালো গন্ধবহ আর বৃষ্টি বিশ্রাম নিতে চায়,
রাতের মধ্যপ্রহরে টুপটাপ বৃষ্টির সাথে শুনি
ফাঁকা পথে দ্রুত গতিতে ছুটে যায় মোটর গাড়ি।


রচনাকালঃ- ০৩/০৬/২০১৭

কারাগার - ৪

যে অপরাধ আমি করিনি তার জন্য হল শাস্তি
করলো মিথ্যা প্রমান গন্য মহামান্য আদালত,
আইন মানবে প্রমাণের ভিত্তি মুখের কথা নয়
লোকে ঠিকি বলে বিধানের চোখ থাকতেও অন্ধ!

ফাঁসির সংবাদ ছড়িয়ে পড়ল সারা দেশের খবরের কাগজে
এক বাবু এসে সাক্ষর করালো মৃত্যু পরোয়ানার খাতায়!
স্লোগান দিল সারা দেশ অপরাধীর শাস্তি চায়
দুচোখে বেঁধেছিলাম কত স্বপ্ন সব নিমেষে নষ্ট হল!

অবশেষে নিভে যাওয়া প্রদীপ আবার জ্বলে উঠলো
ছোট্ট একটা আশার কিরণ আমি দেখতে পেলাম,
আমার ফাঁসির খবর এক উকিল সাহেবা শুনতে পেয়ে
তিনি কারাগারে আমার সাথে দেখা করতে আসলেন।

আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দিয়েছে তারা
ছিল মোর এক বন্ধু আর কিছু আত্মীয় সজন,
সব কিছু ঘটনা খুলে বললাম উকিল সাহেবাকে
দেখলাম তাঁর মধ্যে সহানুভূতি আর দয়ার ভাবনা।

সান্তনা দিয়ে মোরে উকিল সাহেবা বললেন
তোমার সাথে মিথ্যে ছলনায় যা কিছু ঘটলো,
রেহায় পাবেনা ঐ সন্ত্রাশবাদীরা আমি তাদের ধরব
উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতেই তোমায় করব নির্দোষ প্রমাণ।

কাঁদতে কাঁদতে তাঁকে বললাম আমি যে আজ অর্থহীন
আপনার উপকারের ঋণ কি করে পরিশোধ করব,
অসহায় দারিদ্রতার মধ্যে কষ্ট করে কাটিয়েছি জীবন
ভয়াবহ মৃত্যুর দুঃস্বপ্ন দেখতাম প্রতি রাতে!


রচনাকালঃ- ০২/০৬/২০১৭

মঙ্গলবার, ১১ জুলাই, ২০১৭

দ্যুলকের ঘর

আজকে চলো নীরদ হয়ে
ঝরাব দুজন শ্রাবণ ধারা,
অম্বর নীলে শান্ত মিছিলে
মোরা হব বাঁধন হারা।

তটিনী যেমন এক ধার ভেঙে
অপর কিনারায় গড়ে চর,
তুমি আমি নীল দ্যুলকে
আনন্দে বাঁধব সুখের ঘর।

তিমির রজনীর শেষে যেমন
ভোরের স্নিগ্ধ দিবাকর আসে,
তেমনি আমি মিশে থাকব
সারাক্ষণ তোমার নিঃশ্বাসে।


রচনাকালঃ- ২৮/০৫/২০১৭

প্রকৃতির প্রেম

গ্রামের শেষে সবুজ বৃক্ষ দিয়ে ঘেরা শালবনে
প্রকৃতির প্রেমের এক অপরূপ দৃশ্য ফুটে ওঠে,
পথ চলা এক কিশোরীকে আলিঙ্গন করে
পাখিডাকা ভোরে মিষ্টি মিহিরের প্রভা।
সবুজ ঘাস মাড়িয়ে সে নীরবে হেঁটে চলে
কান্তার পার হয়ে যেতে চায় দূর-বহুদূর!
তাইতো তার এক মুহূর্ত থামার সময় নেই
হাঁটছে ধান ক্ষেতের শক্ত আলের ওপর দিয়ে।
তার দুহাতে রয়েছে লাল রঙের কাঁচের চুড়ি
নগ্ন পায়ে বেজে ওঠে একজোড়া নূপুরের শব্দ,
মাথার খোলা অলক শান্ত মিছিলের ভিড়ে নীরব
আর শীতল সমীরে উড়ে তার নিল ওড়না।
প্রাচীন কালের মৃত্তিকার স্তূপ ভেদ করে
হাতে একটি রঙ্গনের সাজি নিয়ে হেঁটে চলে,
ধীরে-ধীরে বেলা বাড়ে প্রকৃতির নিয়মে
গগনের বুক চিরে বয়ে যায় তপ্ত গন্ধবহ।
প্রকৃতির হাত ধরে হেঁটে চলে ক্লান্ত কিশোরী
বট- পাদপের ছায়ার মঝে খুঁজে পাই শান্তি পরশ,
মাতাল বৈশাখে নভোঃ থেকে প্রলয় নামে
বাতাসের ধাক্কায় নয়নপত্র আছড়ে পড়ে।
কোকিলের মন মুগ্ধকর সুমধুর কণ্ঠে গান
নিদ্রা ছড়ায় কিশোরীর ক্লান্ত আবেগের মাঝে,
হঠাৎ করেই উঠে বসে ঘুমহারা নেত্রে
স্বপ্ন ভাঙার বেদনায় কাতর তার আবেগী মন!
বাস্তবতার ভুবনকে কল্পনায় এঁকে দৃষ্টিবদ্ধ করে
প্রাচীন কোনো অনুভবের এক অজানা চিত্র,
ক্লান্ত কিশোরীর পা কখনো থেমে থাকে না
হেঁটে যায় নিঃসঙ্গতার স্বপ্নের রাজপুত্রকে খুঁজতে!
মানুষের ভিড়ের মাঝে খুঁজে ফিরে অনন্ত সুখ
অবুঝ কিশোরী আজও বোঝেনা প্রকৃতির প্রেম!
প্রতীক্ষিত প্রেমিকের চোখে খোঁজে ভালোবাসা
প্রতিনিয়ত নীরবতার বুকে খোঁজে শান্তি।
কল্পনার জগতের থেকে বাস্তব অনেক কঠিন
সত্যের আয়নার সামনে নিজেকে দেখেনা কেউ!
জানিনা মানুষ কেন ভুলে যায় অমর প্রেম
কিন্তু প্রকৃতি যে ভোলেনা মনে রাখে সব কিছু।


রচনাকালঃ- ২৩/০৫/২০১৭

আমাকে ভালবাসার পর

আমাকে ভালবাসার পর তোমার
জীবনে ফুটেছিল বসন্তের ফুল!
তোমার ওই কিশোরী মন ছুটে
আসতে চাইত আমার কাছে।
আমি প্রথম দেখেছিলাম সেদিন
তুমি কলশি নিয়ে যাচ্ছিলে ঘাটে,
মায়ায় বাঁধা তোমার মলিন মুখ
দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম।
তোমার মধুময় মিষ্টি হাসিতে
সারা আকাশ যেন ছেয়ে যেত,
কোকিলের মতো ওই কন্ঠস্বর
আমার কানে এখনো বাজে।

আমাকে ভালোবাসার পর তুমি
হারিয়ে ফেলছিলে লাজ-লজ্জা!
আমার প্রেমের পরশে আনন্দিত
হয়েছিল তোমার যৌবনমগ্ন মন।
পরমুহূর্তে তুমি না থাকতে পেরে
ছুটে এসেছিলে আমার কাছে,
তোমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আমি
প্রেমের আলিঙ্গনে মগ্ন হয়েছিলাম।
যে লাল বর্ণের কোমল ঠোট
কখনো কেউ স্পর্শ করেনি,
স্বপ্নের প্রেমিক পুরুষ হয়ে চুম্বনে
শিহরিত করেছিলাম তোমার অঙ্গ।

আমাকে ভালোবাসার পর তুমি
ভুলে গেছিলে বাস্তব আর অবাস্তব!
মনে আছে বৃষ্টির দিনে পথে
হেঁটে যখন সদনে ফিরছিলে?
খোলা কুন্তল আর ভেজা অঙ্গ দেখে
আমার মনে জেগেছিল বাসনা,
আমি পিছন থেকে দৌড়ে গিয়ে
তখন তোমার হাতটি ধরেছিলাম।
সাথে সাথে থর-থর করে কেঁপে
উঠেছিল তোমার কোমল হৃতপিন্ড,
সেদিন নিথর স্তব্ধ হয়ে দেখেছিলাম
তোমার ওই ভয়ঙ্কর দৃশ্য।

আমাকে ভালোবাসার পর
তুমি করনি সমাজের ভয়!
অপরূপ সাজে কলেজের গেটের
সামনে প্রতিদিন দাঁড়িয়ে থাকতে।
বিপরীত দিক থেকে বাইক
নিয়ে ছুঁটে আসতাম আমি,
আর তোমাকে প্রাণ ভরে দেখার
পর চলে যেতাম এদিক সেদিক।
র্নিভয়ে তোমার হাতে গোলাপ দিয়ে
বলেছিলাম প্রথম ভালোবাসার কথা,
সেদিন পথে দাঁড়িয়ে দেখেছিল
মুর্শিদাবাদ শহরের জনগণ।

আমাকে ভালোবাসার পর তুমি
দেখতে শুরু করেছিলে রঙিন স্বপ্ন!
কোমল গালে স্পর্শ করতেই
লজ্জায় নত হয়েছিল তোমার শির।
শীতল কোলে মাথা রেখে
আমি যখন গল্প করতাম,
আমার মস্তকে হাত ফিরিয়ে দিতে
আর দূর হত সমস্ত দুঃখ কষ্ট।
তোমার মায়াবী নেত্রে দেখতাম
আমার প্রতি অফুরন্ত প্রেম,
আমাকে নিয়ে আঁকতে শুরু করেছিলে
তখন হাজারো রঙিন চিত্র।

আমাকে ভালোবাসার পর তুমি
হারিয়ে ফেলেছিলে নিজেকে!
আমাকে না দেখতে পেয়ে তোমার
মন বিচলিত হয়ে পড়েছিল।
বাধা বিপত্তি কাটিয়ে অজস্র কান্নায়
চিৎকার করে ডেকেছিলে আমায়!
আমি নিথর হয়ে দুহাত বাড়িয়ে
দাঁড়িয়ে ছিলাম তোমার অপেক্ষায়।
তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে সকলের
সামনে ধরেছিলে আমার হাত,
তোমায় জড়িয়ে ধরে সেদিন কেঁদেছিলাম
সে কথা আজও মনে পড়ে আমার!


রচনাকালঃ- ১৮/০৫/২০১৭

এক প্রহর

সুদূর প্রান্তরে কাননের ডালগুলোর কচি পাতা
প্রখর দিবাকরের খরতাপে যেন ক্লান্ত হয়ে ওঠে,
শালবনে বাবলা পাদপে ঘন কাটার জালে
জানিনা কেন আটকে যায় স্বপ্নের ঘুড়ি!
প্রত্যহ নিশিতে আঁধারে আচ্ছন্ন থাকা পথে
কুকুর গুলো কাঁদে জোমে থাকা অতৃপ্ত বাসনায়!
জ্যৈষ্ঠের ঝড়ে উনমূক্ত নিল গগনের গন্ধবহে
উড়ে আসে কিশোরীর হলুদ রঙের ওড়না।
বারে-বারে পিছন ফিরে চেয়ে দেখি তার দিকে
সে বিহঙ্গের মত ডানা মেলে উড়ে চলে যায়,
কিসের প্রত্যাশায় যেন ছুটে আসে বায়ু ভেদ করে
তবুও সে ফিরে দেখে না উড়ে চলে যায়!
অম্বুদের আবরণে মিশে যেতে চাই তার মন
শান্ত পরিবেশের ঘুমে বিলীন হবে বলে,
সব খেচর ফিরে যায় তাদের নিজ বাসায়
কিন্তু তার মনে জাগেনা ঘরে ফেরার আবেগ!
ভূ-কম্পনে কেঁপে ওঠে বসুন্ধরার মৃত্তিকা
অন্তরীক্ষের বিষণ্ণ জলদে এখন অনেক ক্লান্তি,
প্রতীক্ষিত সন্ধ্যায় মৃদু প্রদীপের কিরণ জ্বেলে
অনুভব করছি জীবনের শেষ মুহূর্তগুলো!
মহা প্রলয় ঘটার আশঙ্কায় থর-থর কাঁপে হৃদয়
জীবনের পাতা বৃক্ষ ফেকে ঝরে পড়বে এবার!
ছুটে আসছে মৃত্যু আর বেশি দেরি নেই
হয়তো শেষ হবে প্রাণ আর মাত্র এক প্রহর!


রচনাকালঃ- ১২/০৫/২০১৭

পবিত্র মাহে-রমজান

সন্ধ্যায় দ্যুলকের রঙ হল লাল
শুরু হল মাগরিবের আযান,
অম্বরে উদয় হল রমজানের শশী
এলো পবিত্র মাহে-রমজান।
প্রতি বছর এই পবিত্র মাসে
অবতীর্ণ হয় শান্তির বান,
পরম করুনাময় মহান আল্লাহ
রহমত বরকত করেন দান।
সমগ্র মুসলিম জাতিরা শোনো
লাগতে দিওনা ঈমানে দাগ!
তিনটি ভিন্ন স্তরে করা হয়েছে
এই পবিত্র রমজানকে ভাগ।
প্রথম দশটি রোজা করলে
বর্ষণ হবে অফুরন্ত রহমত,
আল্লাহ এ কালে দেবেন বরকত
দান করবেন অগণিত নিয়ামত।
দ্বিতীয় দশটি রোজা করলে
তিনি করবেন সকলকে মাগফিরাত,
পাহাড় সমতুল্য গুনাহ মাফ করে
অনায়সে পার করাবেন পুলসিরাত।
তৃতীয় দশটি রোজা করলে
মিলবে জাহান্নাম থেকে নাজাত,
জান্নাতের বাগিচা উপহার দেবেন
মৃত্যুর পর করবেননা আঘাত।
আল্লাহ সকলকে দান করেন
এ মাসে সত্তর গুণ নেকি বেশি,
মন ঈমান সব স্বচ্ছ রেখে
ইবাদত করতে হবে দিবা-নিশি।
এ মাসে নরকের দ্বার বন্ধ করে
দেওয়া হয় পাপিজনদের মুক্তি,
জান্নাতি সমীর বহে সারাক্ষণ
তাদের লাগেনা কোনো ক্লান্তি।
ফরজ ওয়াজিব পড় প্রতিদিন
আগ্রহের সাথে নফল ও সুন্নত,
আদায় কর তারাবির নামাজ
সফল কর সকল ইবাদত।
সত দুঃখের বেড়াজাল কাটিয়ে
জীবন ধর্মের পথে অগ্রসর কর!
এসেছে মহা সুযোগের দিন
তাই সকলে রোজা নামাজ ধর।
এ মাসের সাতাশের রাত্রিতে
অবতীর্ণ হয়েছিল আল-কোরআন,
হাজার রজনীর থেকেও এ নিশি
ইবাদতের জন্য মহা মূল্যবান।
শবে ক্বদরের নিশিথে দুহাত তুলে
নিজের গুনাহের জন্য চাও ক্ষমা!
মহান আল্লাহ-পাক মাফ করবেন
ধুয়ে যাবে যত গুনাহ আছে জমা।
বহু প্রতীক্ষার পর আসে এই রাত্রি
হবে তোমাদের মুক্তির আরাফাত,
সকলের দোয়া কবুল করবেন
তাঁর কাছে করলে মোনাজাত।
জন্ম নিয়ে এসেছ ভূ-মণ্ডলে
একদিন সকলকে হবে মরতে!
বীর বাহুবল কেউ পারবেনা
সেদিন দানবরূপি মৃত্যুকে রুখতে!
রমজান মাসে রোজা রেখে
দিতে হবে শরীরের জাকাত,
নাহলে মনে রেখ নিধনের পর
আল্লাহ করবেন তখন কুপকাত!
হৃদয়ে মাঝে থাকে যদি বিশ্বাস
মনের নিবিড়ে থাকে দোজখের ভয়!
তাহলে তাঁর হুকুমের পালন কর
নিশ্চয় ক্ষমা করবেন দয়াময়।
উদারতার প্রতীক শ্রেষ্ঠ নবী
শোনো হজরত মোঃ সাঃ 'র' বাণী,
শত যন্ত্রণা সহ্য করেছেন তিনি
কতনা ফেলেছেন চোখের পানি!
অনুসরণ কর মোঃ সাঃ কে
চলো তাঁর দেখানো সঠিক পথে,
মরনের পর ঐ আঁধার কবরে
কেউ থাকবেনা তোমাদের সাথে!
ভক্তির সাথে করলে রোজা
ইন্তেকালের পর সে হবে রক্ষা কবজ,
নরকের শিখা থেকে রাখবে দূরে
আল্লাহ'র কাছে করবে আরজ।


রচনাকালঃ- ০৬/০৫/২০১৭

কারাগার - ৩

নিষ্ঠুর খেলা খেলছে বিধান চারিদিকে যেন হাহাকার
লোহার শিকল পারানো কারাগারে আমি বন্দি!
ভাবিনি এমন দিন কখনো আসবে আমার জীবনে
অসহায় আমার স্ত্রী পুত্র কি করে তারা বাঁচবে!

পড়ে আছি কারাগারে গায়ে দিয়ে একটি ছেড়া কম্বল
অর্থ উপার্জন করার জন্য একমাত্র সম্বল আমি ছিলাম,
ভাবনায় আমার হৃদয় কেঁপে যায় এখন কি হবে তাদের
জানিনা এ কোন কষ্টের সম্মুখে ফেললো বিধাতা।

হার মানলো আজ সত্য জিতে নিলো মিথ্যে
সঠিক বিচার পেলামনা এ ভুবনে চাপা রইল তথ্য,
চিৎকার করে বললাম ও ঈশ্বর তুমি শোনো-শোনো
আমার মত এত দুঃখের যেন জীবন আর কাউকে দিওনা!

কারাগারের জীবন এ-যে বড় কষ্টের বড় বেদনার
খাকি পোশাক পরা বাবুরা প্রতি মুহূর্তে দেয় যন্ত্রনা!
একখানি আঁধার ছোট্ট ঘরে আমায় ওরা রাখলো
দিন ফুরালো অনাহারে তৃষ্ণার্ত মুখ গেল শুকিয়ে।

কুঁড়ে ঘরে আমার স্ত্রী নীরবে সারাক্ষণ মগ্ন কান্নায়
একফোটা দুধের জন্যে পুত্র আর কাঁদবে কতক্ষণ!
আর কি করবে তা ছাড়া আজ ওরা তো বড় অসহায়
ঈশ্বর যেন আজ নিরুপায় হয়ে কিছু দেখতে পাইনা।

একটি দুঃসংবাদ কারাগারে আমি শুনতে পেলাম
ফাঁসির জন্যে নাকি দিন ধার্য করা হয়েছে,
সেই কথা শুনে মোর বাহুবল গেল কোমে
দুনয়ন থেকে ঝরতে লাগলো অজস্র নোনা জল!


রচনাকালঃ- ৩০/০৪/২০১৭

শূন্য জীবন

যেদিন তুমি আমায় একা ফেলে রেখে চলে গেলে
উপহার দিয়ে গেলে কঠিন দুঃসহ কিছু অসহ্য যন্ত্রণা!
মুহূর্তের মধ্যে থমকে গেল আমার রঙিন ধরণী
স্বপ্ন ভাঙার বেদনা জমা রয়ে গেল হৃদয়ের নিবিড়ে!
এখন আর দেখতে পাই না দ্যুলকের গোধূলি
দল বেঁধে কালো বারিদ ভেসে চলেছে প্রতিনিয়ত,
এখন প্রতিটা সময় কাটে অমাবস্যার ত্রিযামার মত
বেদনার অম্বুদের আবরণে ঢেকে গেছে অন্তরীক্ষের ইন্দু!
চঞ্চলা তিস্তার মত ছিল আমার শীতল হৃদয়
বনভূমির কুরঙ্গের মত করতাম তোমার প্রতীক্ষা,
চিরতরে কোথায় যেন হারিয়ে গেল স্বপ্নের দিনগুলি
হৃদয়টা হয়ে গেল নির্জন অটবীর মতো শূন্য!
নিরাকার বিষাক্ত জীবনটা নীরবে ধারণ করেছে
গোধূলি লগ্নের রক্তিম গগনের মতো লাল বর্ণ!
মনের অতলে জমেছে অসংখ্য অশুভ কালো নীরদ
চারিদিকের স্তব্ধতায় মস্তিস্কে হানা দেয় শূন্যতা!
এখন আর শুনতে পাই না দ্বিজদের কোলাহল
দেখতে পাই না বর্ষার দিনে পেখম মেলে ময়ূরের নাচ,
জানি না কেন হাজার চেষ্টা করেও আঁকতে পারি না
নীল রঙে ভেজা কলম তূলিতে তোমার চিত্র!
বর্ণ হারিয়ে ফেলেছে সুদূর সবুজ প্রান্তরের লতা
খুঁজে পাই না কোথাও বেঁচে থাকার
কিরণ!
হৃদয়ের গভীরে উদিত হওয়া প্রেমের ভানু,
জীবনের নীরবতার জালে বন্দি হয়ে অস্ত গেছে!
প্রতি নিশিতে অক্ষির নোনা নীরে ভেসে ওঠে
তোমার সঙ্গে কাটানো সেই আগের দিনের প্রতিচ্ছবি!
আজ সবই ক্লেশের গিরির নিচে চাপা পড়ে
প্রতিক্ষণে কীসের প্রত্যাশায় যেন মৃত্যুর প্রহর গুনছে!


রচনাকালঃ- ২৬/০৪/২০১৭

ভ্রমণ

ভায়ের প্রতি ভালোবাসা আছে অনেক বিশ্বাস
সে যখন সামনে আসে ফেলি দীর্ঘ নিশ্বাস,
তাকে আমি ডাকলাম ভ্রমণ করব বলে
একি সাথে ঘুরব মোরা যাব দুজন চলে।
অবশেষে সহোদর এল দিল সে দেখা
হাসি ঠাট্টা আর গল্প গুজোব সবই হলো শেখা,
জিন্স প্যান্ট আর টিসার্ট সঙ্গে একটা বাইক
চোখে আছে সানগ্লাস মুখে সিগারেটের পাইপ।
একটু খানি এগিয়ে দেখি সামনে একটা নদী
অনেক তাড়া আছে মোদের তরী আসে যদি,
অবশেষে নাও এলো আছি মোরা দুজন
যাব কোথায় হারাব কোথায় জানে আর কজন।
তটিনী পার করেই চেপে গেলাম বাইকে
ছুটলাম পলসন্ডার দিকে এবার মোদের দেখে কে,
একটু থামার সময় নেই ছুটছি পবন গতিতে
কার্য কলাপ ঘটছে যা কিছু দুজনের সমমতিতে।
এদিক ওদিক দেখছি মোরা লক্ষ্য ছিল নারী
আজ মোরা দেখিয়ে দেব অনেক কিছুই পারি,
দুদিকে সুন্দর দৃশ্য মধ্যেখানে ফাঁকা রাস্তা
গাড়িতে বসে খাচ্ছি বাদাম আর পাস্তা।
একটু পরে থেমেই মোরা তুললাম অনেক ছবি
দিগন্তের দিকে চেয়ে দেখি আমিও একজন কবি,
পথের ধারে বসে দেখি যত দুর যায় দৃষ্টি
সবুজ ক্ষেত বহুরূপ সাজে প্রকিতিরই সৃষ্টি।
দোকানে গেলাম আমি কিনলাম অনেক খাবার
খাওয়ার পরে ছুটলাম যেখানে ছিল যাবার,
সামনে এগিয়ে দেখি এমন একটি মেয়ে
প্রতিমার সাজে দাঁড়িয়ে আছে সারা জগৎ ছেয়ে।
এত সুন্দর দেখতে যে মুখ ফেরানো গেল না
এমন রূপময় কামিনী কোথাও খুঁজে পাব না,
চোখে চোখে কথা হল মনে আছে মিল
বুকের ভিতর ঘন্টা বাজে ছুড়লাম শূন্যে ঢিল।
আমায় দেখে সে একটু খানি দিল মুচকি হাসি
ভাবলাম এইবার বলেই ফেলব তোমায় ভালোবাসি,
রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ছিল নীল পরীর বেশে
তার কাছে যেতেই হারিয়ে গেলাম ভিন্ন রঙ্গিন দেশে।
তাকে প্রপোস করতে পারলামনা আমি একটা গাধা
অনন্তকাল ভালোবেসে যাব থাকবেনা কোন বাধা,
তোমার প্রেমের ছোঁয়া পেয়ে ধন্য হল জীবন
সুখে থেকো ও রমণী তুমি সফল হল ভ্রমণ।


রচনাকালঃ- ২০/০৪/২০১৭